Advertisement
E-Paper

মনে ঈর্ষা থাকাটা শরীরের জন্যও ভীষণ বিপজ্জনক! জানেন কী?

মানসিক জ্বলন থেকে ঈর্ষা। সেখান থেকে ক্ষতি কামনা শেষে প্রতিশোধ নেওয়ার পালা৷ হিংসা এ ভাবেই নিয়ন্ত্রণ করে নিজস্ব জগৎ। সেই জগতে আপনি বলি নন তো? দেখে নিন তা সরানোর উপায়।

সুজাতা মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৮ ১৬:৩৩
হতাশ না হয়ে আপনার অন্য গুণগুলির দিকে নজর দিন৷ পালাবে অন্যকে হিংসা করার মন। ছবি: শাটারস্টক।

হতাশ না হয়ে আপনার অন্য গুণগুলির দিকে নজর দিন৷ পালাবে অন্যকে হিংসা করার মন। ছবি: শাটারস্টক।

অপরের সব ভাল, আর আমার কিছু হচ্ছে না— এই মনোভাব থেকে যে মানসিক জ্বলন, ভাল না লাগা, রাগ— সেটাই ঈর্ষা৷ ঈর্ষায় জ্বলতে জ্বলতে যখন সেই মানুষটির ক্ষতি কামনা করি এবং আপ্রাণ চেষ্টা করি ক্ষতি করতে, তখনই এক পা এক পা করে এগিয়ে যাই হিংসার দিকে৷

এর পরের ধাপ প্রতিশোধ নেওয়ার পালা৷ এবং একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিজের কবর খোঁড়ার প্রস্তুতি৷ অতএব?

‘অতএব, ঈর্ষা যখন কেবলই হালকা জ্বলন, মানে যতক্ষণ তা ভয়াল হিংসায় পরিণত হয়নি, তখন থেকেই তাকে দমন করার চেষ্টা করুন৷’ জানালেন মনোচিকিৎসক অমিতাভ মুখোপাধ্যায়৷ তাঁর মতে, এটি এমন কিছু কঠিন কাজ নয়৷ পর পর কয়েকটি ধাপ শুধু মেনে গেলেই হল৷

আরও পড়ুন: বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছনো সন্তানকে এ সবও বলেন নাকি? তা হলে সাবধান

পাতে নিম পাতা রাখছেন না? কী ক্ষতি হচ্ছে জানেন?

জেনে নিন সে সব ধাপ।

জীবনে যা যা হয়েছে, যতটুকু হয়েছে তা মেনে নিন৷ মেনে নেওয়া মানে ভাগ্যের কাছে হেরে যাওয়া নয়। বাস্তব পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সঠিক রাস্তায় চলার প্রস্তুতি নেওয়া, যাতে ভবিষ্যতে আরও ভাল কিছু হতে পারে৷ পরের ধাপে তাঁর কেন হয়েছে আর আপনার কেন হল না— তা নিয়ে যুক্তি সাজান৷ ভেবে দেখুন, কী কী গুণ থাকায় তিনি সফল হয়েছেন, সে সব গুণ আপনার আছে কি না৷ না থাকলে তা অর্জন করার মানসিকতা বা পরিস্থিতি আছে কি ? বিষয়গুলি পর পর লিখে ফেললে সহজে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারবেন৷ গুণ থাকলে পরের বার আপনিও সফল হবেন৷ না থাকলে হতাশ না হয়ে আপনার অন্য গুণগুলির দিকে নজর দিন৷ সেগুলি থাকায় আপনি কী কী অর্জন করেছেন এবং করতে পারেন দেখুন৷ হয়তো আপনার কাছে ভাল পরিবার আছে, কাজ, বন্ধু বা এমন শখ রয়েছে যা মনের আরাম দেয়। তেমন হলে এই সব অর্জিত গুণ প্রকাশের সুযোগও পাবেন। এর সাহায্যে নতুন কোনও কাজ শুরু করতে পারেন, যার কথা আগে ভাবেননি৷ অতৃপ্তি গ্রাস করেছে? ভয় পাবেন না৷ অতৃপ্তি সকলের আছে৷ যাঁকে ঈর্ষা করছেন তাঁরও। তা সত্ত্বেও তিনি যদি সফল হতে পারেন, আপনি পারবেন না কেন? সাফল্যের সংজ্ঞাটাই বা কী? ভাল থাকা তো? ঈর্ষার কারণের পক্ষে কখনও যুক্তি সাজাবেন না৷ অর্থাৎ পরিস্থিতি এরকম বলে আপনার মনে ঈর্ষা জাগছে, তা কিন্তু নয়৷ মনে মনে অন্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমেছেন বলেই যাবতীয় কষ্ট৷

ঈর্ষা চেপে ধরলে কাজে মনোযোগ আরও কমবে৷ ছবি: শাটারস্টক।

​প্রতিযোগিতা অন্যের সঙ্গে না হয়ে যদি নিজের সঙ্গে হত? অর্থাৎ গত মাসে যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন, এ মাসে যদি তার চেয়ে দু’–এক কদম এগোতে পারতেন, তাকেই কি সাফল্য বলত না? এই ভাবে সফল হওয়ার প্রধান অস্ত্র একাগ্র হয়ে নিজের কাজ করে যাওয়া৷ সেটা না করে আপনি সময় নষ্ট করছেন অন্যের দিকে নজর রেখে৷ অর্থাৎ মনোযোগে ঘাটতি৷ ঈর্ষা চেপে ধরলে মনোযোগ আরও কমবে৷ ফলে অন্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমে নিজের কাছেই হারবেন প্রতি মূহূর্তে৷ ঈর্ষা করে আপনি পিছিয়ে পড়ছেন৷ এভাবে এগোলে সর্ব অর্থে ‘হেরো’ প্রতিপন্ন হওয়া কেবল সময়ের অপেক্ষা৷ কাজেই যে মানুষটি মনে ঈর্ষা জাগাচ্ছেন, মনে মনে তাঁকে গুরুত্বহীন না করতে পারলে কিন্তু আপনার মুক্তি নেই৷ সেই চেষ্টাই করুন৷ প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন৷ এ সবের পাশাপাশি শুধুমাত্র নাম–যশ–অর্থের কথা না ভেবে, একটু নির্মল আনন্দ দেয় এমন দিকেও নজর দেওয়ার চেষ্টা করুন৷ যেমন:

সম্পর্কগুলিকে ভাল রাখুন৷ জীবনের চড়াই–উতরাই পেরনোর সময় এঁদের সাহায্যেই নিজেকে ভাল রাখতে পারবেন৷

অপরের ক্ষতি করার কথা না ভেবে বরং উপকার করার চেষ্টা করুন৷ এতে মানসিক শান্তি যেমন পাবেন, বাড়বে হিতাকাঙ্ক্ষীর সংখ্যা৷ বিপদে সাহায্য পাবেন৷

প্রতি মুহূর্তে বিভিন্ন ভাবে নিজেকে উন্নত করার চেষ্টা করুন৷ সে পড়াশোনা করে হোক কিংবা মন দিয়ে কাজ করে। দেখবেন, তখন আপনিই হয়ে উঠবেন অন্যের ঈর্ষার মানুষ, যা সাফল্যকেই ইঙ্গিত করে।

জীবনে চলার পথে কী কী ভুল করেছেন ও তার ফলে কী ভাবে পিছিয়ে পড়েছেন, কী ভাবে মূল্যবান সব সম্পর্ক নষ্ট হয়েছে তা ভেবে দেখুন৷ সে সব ভুল শোধরানোর চেষ্টা করুন৷ মনে রাখবেন, নিজের ভুল দেখার চোখ না থাকলে কিন্তু সাফল্য আসে না৷

নিয়ম মেনে নিজেকে সুস্থ রাখার চেষ্টা করুন৷ শরীর সুস্থ থাকলে মনও সুস্থ থাকবে৷ ভুলভাল আবেগ আর সে ভাবে জ্বালাতন করবে না, করলেও তা থাকবে নিয়ন্ত্রণে৷

Fitness Tips Health Health Tips হিংসা Jealous মন
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy