নিশি রাত, বাঁকা শট। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
‘এই গোলটা অফ সাইড! জাস্ট অ্যাবসার্ড!’ ‘মেসির ফ্রি কিকখানা দেখলে গুরু!’ কিংবা ‘নেমারের শটের অ্যাঙ্গেলটা দেখলি?’ থেকে থেকেই এমন মন্তব্যে মাত পাড়ার রক বা বাড়ির ডাইনিং। মিনিটে মিনিটে প্রেডাকশনের ফুলঝুরি। থেকে থকেই ‘গো-ও-ও-ও-ল’ বলে পিলে চমকানো চিৎকার। বিপক্ষ দেশের সমর্থকদের বাগে পেলেই তুমুল ট্রোল সোশ্যাল সাইটে। এমন নরক গুলজারের দিনক্ষণে কি আর চোখ বুজে থাকা যায়?
আর চোখ বুজে থাকছেই বা কে? ফুটবলপ্রেমী হব, অথচ ঘুমের দোহাইয়ে খেলা দেখব না! ছোঃ! তবে এ বার আর ভাবনা নয়। খেলা গড়াক না এক্সট্রা টাইম অবধি। চাইলে মার মার কাট কাট টাই ব্রেকার। কুছ পরোয়া নেই। কেবল জেনে নিন ঠিক কী ভাবে রাত জাগলে কষ্ট হবে না পরের দিনও। সারা দিনের রুটিনে কী কী অদল বদলে কম ঘুম সমস্যায় ফেলবে না এ বার সে উপায়ই জানালেন চিকিৎসক দোলনচাঁপা দাশগুপ্ত।
প্রথমেই এটা প্রয়োজন। রাতের খেলাগুলো দেখতে চাইলে রাতকে ভেঙে ফেলুন দু’ভাগে। আগে মনকে বোঝান, রাত জাগতে হবে। তারপর রাতের প্রথম ভাগের খেলা দেখে কোনও সময় নষ্ট না করে ঘুমোন বাকি রাত। এমনিতেই প্রথম ভাগের চেয়ে দ্বিতীয় ভাগে ঘুমের ঘনত্ব বেশি থাকে। তাই খেলা শেষ হওয়ার পর ফের তা নিয়ে আলোচনায় বসে সময় নষ্ট করবেন না। দ্বিতীয় ভাগে যতটা পারেন ঘুমিয়ে নিন। এতেই অর্ধেক কাজ হয়ে যাবে।
মোর প্রোটিন লেস কার্বস:
সন্ধের পর থেকে যাই খাবেন, তাতে যেন কার্বোহাইড্রেট একেবারেই না থাকে। রাতে নিন চিকেন স্যুপ বা স্যালাড। সঙ্গে অনেকটা ড্রাই ফ্রুটস। যা পেট তো ভরাবেই, সঙ্গে সাহায্য করবে রাত জাগতে। এমনিতেই শর্করা জাতীয় খাবারে শরীরে গ্লাইকোজেন জমে ঘুমের প্রবণতা বাড়ে। তাই ডায়েট থেকে এই ক’দিন সরান এ সব।
ভুলেও ছোঁবেন না এ সব:
রাত জাগতে হলেই দরকার ব্ল্যাক কফি বা ডার্ক চকোলেট, নিদেন চিপস। কিংবা দু’-এক পেগ স্কচ— এ সব ধারণা থেকে আগে সরুন। ক্যাফিন, যা কি না সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেমকে উত্তেজিত করতে পারে, এমন খাবার একেবারেই নয়। এ সবে হয়তো সাময়িক ঘুম আসবে না ঠিকই, কিন্তু তার প্রভাব কাটলে স্নায়ু ও পেশী যে ভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়বে, তার রেশ থাকবেই পরের দিনের কাজে। তাই এ সব সরিয়ে বরং ডিনারে রাখুন হালকা মিষ্টি— যা ঘুম সরাবে অনেকটা নিরাপদে। তবে তা অবশ্যই পরিমাণ মেপে। এতটাও নয়। যাতে গ্যাসট্রাইটিসের সমস্যা বাড়তে পারে। কোনও ঘুমের ওষুধ চললে রাত না জাগাই ভাল। তাও খেলা দেখার খুব ইচ্ছে হলে পরামর্শ নিন চিকিৎসকের।
খেলার ক’দিন রাত জাগতে আস্থা থাকুক ড্রাই ফ্রুটসে।ছবি: পিক্সঅ্যাবে।
সিগারেট নয়:
সিগারেট এড়িয়ে চলুন। এমনিতে সারা জীবনের জন্যই এটা ক্ষতিকর। আর রাত জাগতে হলে তো আরও নয়। তামাক শরীরের নার্ভাস সিস্টেমকে উত্তেজিত করার সঙ্গে হার্ট সিস্টেমেরও ব্যাঘাত ঘটায়। মস্তিষ্কের কিছু নিউরোট্রান্সমিটারকে উদ্দীপিত করে। তাই যদি রাত জাগতে গেলে সিগারেটের শরণ নিতেই হয়, তা হলে বরং ঘুমোন। অন্তত রাত জেগে ধূমপানের চেয়ে তা ভাল।
আরও পড়ুন: গ্রুপ অ্যাডমিনদের আরও ক্ষমতা বাড়াতে নতুন ফিচার হোয়াটসঅ্যাপের
বর্ষার জুতো কিনছেন? রইল মূল্যবান কিছু টিপস
শরীরচর্চা করুন:
রাত জাগলে অন্যান্য দিনের রুটিন হেরফের হয়ে যায়। তাই শরীরের সেই ক্ষতি পুষিয়ে দিতে যাঁরা একেবারেই ব্যায়াম করেন না, তাঁরাও হালকা ব্যায়াম করুন নিয়মিত। যাঁরা শরীরচর্চা করেন নিয়মিত, তাঁরা আবার রাশ টানুন সব রকম ব্যায়ামে। শরীরকে খুব ক্লান্ত করে দিতে পারে এমন ব্যায়াম বন্ধ থাক এ ক’দিন।
ন্যাপ নিন:
এটা যদি পারেন, তা হলে এর চেয়ে ভাল আর কিছুই নেই। সারা দিনে সময় পেলেই ঘুমিয়ে নিন মিনিট পনেরো-কুড়ি। অনেকেই পারেন এমন। সারা দিনের ফাঁকে এমন বিরতি নিলে রাত জাগা হবে অনেক সহজ।
ব্যস। এ ক’টা নিয়ম মানলেই রাত জাগা আর ঠেকাচ্ছে কে! ফুটবল সভ্যতায় নাম থাকুক আপনারও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy