Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Diwali Food

পালং শাক আর কিমার কেরামতিতে বিরিয়ানি এখানে কথা বলে

মজলিশি আড্ডা হোক বা নিরালা সন্ধেয় কিছুটা সময় একলা কাটানো, নওশিজান হতে পারে আপনার সেরা বিকল্প।

নবাব ওয়াজেদ আলির পরিবারের মহিষীর পোশাক সম্বলিত ‘নওশিজান’-এর অন্দরমহল।—নিজস্ব চিত্র।

নবাব ওয়াজেদ আলির পরিবারের মহিষীর পোশাক সম্বলিত ‘নওশিজান’-এর অন্দরমহল।—নিজস্ব চিত্র।

মনীষা মুখোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৮ ১৬:৪৬
Share: Save:

শুধু কিনু গোয়ালার গলিতেই নয়, এখানেও আকবর বাদশাহের সঙ্গে হরিপদ কেরানির কোনও ভেদ নেই। অন্তত পাত পেড়ে খেতে বসার সময় এই সত্যিটাই বার বার ঝলক মেরে যায়। খাস কলকাতায় কসবা দিয়ে যাত্রা শুরু। তার পর হালে যাদবপুরেও জাঁকিয়ে বসেছে এই নবাবি দুনিয়ার হেঁশেল। ‘নওশিজান’।

নবাব ওয়াজেদ আলির পরিবারের মহিষীর পোশাক, বাদশাহী আমলের নানা ফুলকারি নকশা, নবাবজাদাদের ব্যবহৃত ধাতুর থালা-বাসন মিলিয়ে নওশিজান যেন ইতিহাসের পাতা থেকে উঠে আসা একটুকরো খাওয়াদাওয়ার ঘর। একসঙ্গে বসা যায় প্রায় জনা চল্লিশেক। সঙ্গে রয়েছে অনেকে মিলে আলাদা করে আড্ডা দেওয়ার জন্যও বড় পরিসর।

মজলিশি আড্ডা হোক বা নিরালা সন্ধেয় কিছুটা সময় একলা কাটানো, নওশিজান হতে পারে আপনার সেরা বিকল্প। ভারী ভারী পর্দা, নবাবি আমলের কাঠের চেয়ার-টেবিল, ঝাড়বাতির রোশনাই সব মিলিয়ে কাবাব-বিরিয়ানির এই রেস্তরাঁ এ বার পুজোয় আপনার বৈঠকী মেজাজকে আরও খোলতাই করবে।

যুগলবন্দী। মাটন-চিকেনের মিক্সড ডাবলস চেখে দেখবেন না কি?

আরও পড়ুন: এ সব নিরামিষ রান্না এত সুস্বাদু ও সহজ!​

কিন্তু কেবল গেলেই তো হল না। জানতে হবে যাওয়ার পর কী কী মিলবে রসনাতৃপ্তিতে?

কাবাব ভালবাসেন? মানে এই কাবাবের জন্য কি অন্য সব খাবারকে দুয়ো দিতেও পারেন? তা হলে আপনার জন্যই নওশিজান উপযুক্ত প্রমোদতরঙ্গ। লখনউয়ের গলৌটিতে মন মজুক বা দিল্লির আফগানি চিকেন কাবাবে— নওশিজান সে সব সাজিয়েই রেখেছে অভ্যাগতদের উদ্দেশে। তবে এখানে যাবেন অথচ যুগলবন্দি খাবেন না তা আবার হয় না কি! দরবারি কানাড়া আর সিন্ধুবারোয়াঁর যৌথতার মতোই এই যুগলবন্দির স্বাদ। তফাত কেবল এ চাখার জিনিস, শোনার নয়। তবে বিস্তারিতই বলি। ভিতরে মাটনের স্টাফিং উপরে চিকেনের ছাউনি। এমন অভিনবত্বেই বানানো এই যুগলবন্দি মন কাড়বে ভোজনরসিকদের।

নওশিজানের স্পেশাল বিরিয়ানি। এতেই পাবেন পালং ও কিমার ছোঁয়া।

এ তো গেল স্টার্টার প্রসঙ্গ। জমিয়ে খিদে মেটানোর ফার্স্ট ইনিংস। যদি তা-ই হয়, তবে মূল খাবারের আয়োজন কী কী? আচ্ছা পালং শাক ভালবাসেন? ভাবছেন, এ আবার কেমন প্রশ্ন!এ সব কে আর রেস্তরাঁয় খেতে গিয়ে তলব করেছে! এমন ভাবলে সে ধারণা ভুল. কারণ নওশিজানের নিজস্ব বিরিয়ানির চালে যোগ হয় পালং শাকের সঙ্গে নানাবিধ উপকরণ এবং অবশ্যই মাংসের কিমার মিশেল। সে বিরিয়ানির স্বাদ এমন যে আলাদা করে বলে না দিলে বুঝতেই পারবেন না হরিয়ালি মশলার সুঘ্রাণে বানানো এই বিরিয়ানিতে ঢুকে রয়েছে পালংয়ের তামাম উপস্থিতি।

জিভে জল আনা মাটন বিরিয়ানির এমন স্বাদ আর কোথায়!

আরও পড়ুন: নিরামিষ মাংস? নাম শুনেই ভ্রু কোঁচকাবেন না। বানিয়ে তাক লাগান সবাইকে!

কিংবা ধরুন খেতে চাইলেন কিমা বিরিয়ানি? তা-ও মিলবে সহজেই। মাটন কিমার সঙ্গে দম পোলাওয়ের ঘরানায় রাঁধা বিরিয়ানি আপনাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে বাদশাহী আমলে। শুধু বিরিয়ানি বা যুগলবন্দিতেই নয়, মন ভরবে গলৌটির আবেদনেও। কলকাতার নানা সেলিব্রিটি থেকে আমজনতা সকলেই মজেন এদের গলৌটির জাদুতে।

ফিরনি ও বাদশাহী শরবত।

তা বলে ভাববেন না এখানেই শেষ। বরং কিছুটা জায়গা রাখুন পেটে। কারণ শেষ পাতে যদি এদের ফিরনি খাওয়ার অবকাশ না মেলে তবে কলকাতা শহরের সেরা ফিরনিদের নিয়ে তর্ক জমাবেন কী করে! কাজেই সে ভুল করবেন না।

পুজোয় আপনার জন্য নওশিজান খোলা রাখবে রাত তিনটে পর্যন্ত। মুঘল খাবারের দরবারে আপনার উপস্থিতিকে উপভোগ করুন নওশিজানের আতিথ্যে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Diwali Food Diwali Special Recipes
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE