Advertisement
E-Paper

ধূমপান না করলেও হতে পারে ফুসফুসের ক্যানসার, অসুখ দূরে রাখতে এ সব মানতেই হবে

কোন কোন ক্ষেত্রে সাবধান হতে হবে?

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২০ ১১:৫৯
ফুসফুসের ক্যানসার রুখতে মেনে চলুন বিশেষ কিছু নিয়ম। ছবি: শাটারস্টক।

ফুসফুসের ক্যানসার রুখতে মেনে চলুন বিশেষ কিছু নিয়ম। ছবি: শাটারস্টক।

যে সব ক্যানসারের শঙ্কা ভারতে সবচেয়ে বেশি, তার মধ্যে অন্যতম ফুসফুসের ক্যানসার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, স্তন ক্যানসারের পরেই এর স্থান। সাধারণত অনেকেই মনে করেন, ধূমপায়ীরাই এই ক্যানসারে আক্রান্ত হন। ধারণাটি খুব ভুল না হলেও একপেশে তো বটেই। ধূমপান করলে এই ক্যানসারের শঙ্কা প্রায় ৭০ শতাংশ বাড়ে। কিন্তু ধূমপান না করলেও হতে পারে এই ক্যানসার।

ক্যানসার বিশেষজ্ঞ সুকুমার সরকারের মতে, ‘‘ফুসফুসের ক্যানসারের প্রধান সমস্যা, এটি ধরা পড়ে খুব দেরিতে। তখন প্রায় স্টেজ ২ বা ৩। নন স্মোকার হলেও নানা কারণে এই ক্যানসার হতে পারে। নন স্মোকার ও স্মোকার— দুই ধরনের রোগীর ক্ষেত্রে ফুসফুসের ক্যানসারের মিউটেশনগত তফাত থাকে। যদিও আজকাল ফুসফুসের ক্যানসারের জন্য অনেক আধুনিক চিকিৎসার শরণ নেওয়া হচ্ছে এ দেশে। কোনও রকম কেমো ছাড়া শুধু ওষুধেও ভাল হয় আজকাল। তবে সে ক্ষেত্রে নন স্মোকার হওয়া, রোগীর বয়স ইত্যাদি ফ্যাক্টর রয়েছে। ক্রিজোটিনিব, জেফাইটিনিব, আর্লোটিনিব ইত্যাদি ড্রাগ নতুন নয়। বিদেশে এর প্রয়োগও বেশ পুরনো। এই পদ্ধতি অবলম্বন করে রোগীদের সুস্থও করছি আমরা।’’

ধূমপান ছাড়া আরও কী কী কীরণে এই ক্যানসারের শিকার হতে পারেন জানলে রোগ প্রতিরোধ করা যেমন সহজ হয়, তেমনই সে সব ক্ষতিকর বিষয় থেকে দূরে থেকে সার্বিক ভাবেও সুস্থ থাকা যায়। কোন কোন ক্ষেত্রে সাবধান হতে হবে?

এই রোগের মূলে যেহেতু নিকোটিন-সহ তামাকে থাকা অন্যান্য ক্ষতিকর উপাদান, তাই নিজে ধূমপান না করলেও চারপাশের ধূমপানের ধোঁয়া থেকেও দূরে থাকা আবশ্যিক। শিশুদের ক্ষেত্রে এই ধোঁয়া আরও বেশি ক্ষতিকর। তাই তাদেরও পরোক্ষ ধূমপান থেকে দূরে রাখতে হবে। একটানে যতটা নিকোটিন পৌঁছয়, তা ফুসফুসের উপর বিষের আস্তরণ তৈরি করে। শরীর সেই সব টক্সিন দূর করতে পারে না। তাই পরোক্ষ ধূমপানও চলবে না কোনও ভাবেই।

কলকারখানা, যানবাহনের ধোঁয়া, বাতাসে মিশে থাকা নানা ক্ষতিকর রাসায়নিক ইত্যাদি থেকেও এই রোগ দানা বাঁধে শরীরে। নিকেল, অ্যাসবেসটস, ক্রোমিয়াম, আর্সেনিক-সহ নানা মৌল দূষিত বাতাসে ভেসে বেড়ায়। সেগুলো ফুসফুসের ক্যানসার ডেকে আনতে এক বিরাট ভূমিকা পালন করে। তাই দূষিত বাতাস থেকে যেমন নিজেকে বাঁচতে হবে, তেমনই বাতাসকে পরিশুদ্ধ রাখতে গাছপালা লাগানোর দায়িত্ব নিতে হবে। খুব দূষিত এলাকায় থাকলে বাড়িতে এয়ার পিউরিফায়ার লাগানোও একটি বিকল্প। তবে সে ক্ষেত্রে বাইরে বেরলে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে মাস্ক ব্যবহার করুন।​ ঘরে রেডন গ্যাসের মাত্রা পরীক্ষা করান বছরে দু’বার। অক্সিজেনের সঙ্গে এই গন্ধহীন রেডন গ্যাস মিশে ফুসফুসে প্রবেশ করলে তা এই রোগের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয় অনেকটা। বিশেষ করে কলকারখানা বা অতিরিক্ত যানচলাচলযুক্ত জায়গায় বাস করলে এই গ্যাসের মাত্রা পরীক্ষা করানো খুবই দরকার।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

পেশাগত কারণেও ক্ষতিকর ধোঁয়ার শিকার হতে হয় অনেককেই। ডাইং ফ্যাক্টরি, আকরিকের খনি, ট্যানারি, রাস্তায় পিচ ঢালাই, নানা রাসায়নিক তৈরির ল্যাবরেটরি ইত্যাদির কর্মীদেরও ফুসফুসের ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। তাই এ সব কাজ করতে হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ধোঁয়া ও দূষণ রোধে মাস্ক ব্যবহার করুন। দরকারে কিছু ওষুধও খেতে হতে পারে নিয়মিত। পরিবারে ক্যানসার আক্রান্ত রোগী থাকলে বা আগে কারও ক্যানসার হয়ে থাকলেও সতর্ক থাকতে হবে। জিনগত মিউটেশনের কারণেও ক্যানসার হয়। তাই পারিবারিক ইতিহাসে ক্যানসার থাকলে নিয়মিত চেক আপ করান।

Lung Cancer Lung Cancer Health Tips Fitness Tips
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy