Advertisement
E-Paper

ডালের হরেক গুণ

নিরামিষাশীদের প্রোটিনের জোগানের অনেকটাই আসে ডাল থেকে। খাদ্যতালিকায় থাকুক ডাল।

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২১ ০৫:৪১

ভারতীয় খাদ্যাভ্যাসের সুবিধে হল, এর বৈচিত্র। আমাদের দেশে এত রকমের ডাল পাওয়া যায় যে, তার থেকেই প্রয়োজনীয় প্রোটিন পেতে পারে শরীর। মুগ, মুসুর, অড়হর, মটর, ছোলা, কাবলি চানা, কালি ডাল, রাজমা, সয়া ডাল... তালিকা লম্বা। এর প্রত্যেকটিতেই যথেষ্ট পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন এবং মিনারেল আছে। ডালভেদে পুষ্টিগুণের খুব একটা তারতম্য নেই। নিরামিষাশীরা প্রোটিনের চাহিদা মেটানোর জন্য কী খাবেন, তা নিয়ে ধন্দে থাকেন। তাঁদের জন্যও ডালের বিকল্প নেই।

মাছ-মাংসের বদলে কি ডাল চলবে?

অ্যানিমাল প্রোটিনের বিকল্প কিন্তু সে অর্থে নেই। খাদ্যশস্যের মধ্যে যে প্রোটিন থাকে, তাকে পুষ্টিবিদরা সেকেন্ড ক্লাস প্রোটিন বলে থাকেন। ডালেও রয়েছে সেকেন্ড ক্লাস প্রোটিন। কিন্তু যথাযথ পরিমাণে তা খাওয়া গেলে শরীরের জন্য ভাল। ‘‘নিরামিষাশীরা রোজকার খাদ্যতালিকায় ৫০ গ্রাম করে ডাল রাখুন। আর যাঁরা মাছ-মাংস খান, তাঁদের জন্য প্রত্যেক দিন ২৫ গ্রামই যথেষ্ট,’’ বলছেন ডায়াটিশিয়ান সুবর্ণা রায়চৌধুরী। ১০০ গ্রাম চিকেনে ২৫ গ্রাম প্রোটিন থাকে, ডালে তার চেয়ে বেশি পরিমাণে প্রোটিন থাকে।

ডালে থাকা প্রয়োজনীয় উপাদান

ডালের সবচেয়ে বড় সুবিধে হল, এতে প্রোটিনের পাশাপাশি কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার রয়েছে। ডা. রায়চৌধুরীর কথায়, ‘‘কোলেস্টেরল বেশি থাকলে মাছ-মাংস খাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। ডালে প্রোটিন থাকলেও, তা থেকে কোলেস্টেরলের সমস্যা হবে না। শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় কার্বস এবং ফাইবারও পাওয়া যাবে।’’

শরীরে প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড লাইসিন থাকে ডালে, যা পেশির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ভাল। মিনারেল, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, জ়িঙ্ক, আয়রন, ভিটামিন বি পাওয়া যায় ডালে। ইমিউনিটি বাড়াতে সাহায্য করে এই খাদ্যশস্য। মহিলাদের জন্য ডাল জরুরি। অস্টিয়োপোরোসিসে ভুগছেন যাঁরা, তাঁদের খাদ্যতালিকায় রোজ যেন ডাল থাকে।

কারা ডাল মেপে খাবেন

রেনাল পেশেন্টদের ডাল মেপে খেতে হবে। কিডনির সমস্যায় যাঁরা আক্রান্ত, তাঁদের শরীরে পটাসিয়াম বেশি হয়ে গেলে মুশকিল। ডালে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম থাকে। তবে রোজ না হলেও মাঝেমধ্যে ডাল খেতে পারেন তাঁরা। গাউটের রোগী বা ইউরিক অ্যাসিড বেশি হলে ডাল কম খাওয়াই ভাল। ইউরিক অ্যাসিড বেশি থাকলে মুসুর ডাল খেতে নিষেধ করা হয়। কিন্তু ডায়াটিশিয়ানদের মতে, এ ক্ষেত্রে মুগ, মুসুর, ছোলা সবই এক। কারণ সবক’টিই প্রোটিনের জোগান দেয়।

কী ভাবে ডাল খাবেন

ভারতীয় খাদ্যতালিকায় ডাল থাকেই। তবে সব সময়ে যে একই ভাবে ডাল খেতে হবে, এমন কোনও মানে নেই। খিচুড়ি, ধোকা, পাঁপড়, ঘুগনি— ডাল দিয়ে তৈরি যে কোনও রান্নায় একই রকমের পুষ্টিগুণ থাকে। দেখতে হবে, দিনে ২৫-৫০ গ্রাম ডাল যেন আমাদের শরীর পায়। ডাল বেটে তা দিয়ে বড়া তৈরি করে খেলেও, ডালের গুণগত মানের পরিবর্তন হবে না। তবে ভাজাভুজি কম খাওয়াই উচিত। পাঁচমেশালি আনাজ দিয়ে ডাল খেলেও তা উপকারী। বিকেলের স্ন্যাকসে ছোলা, মটর সিদ্ধ দিয়ে মুড়ি মেখেও খেতে পারেন। রাজমা-ছোলার তুলনায় মুগ-মুসুর ডাল সহজপাচ্য।

তাই নিজের হজমশক্তি বুঝে খাদ্যতালিকা প্রস্তুত করুন। সব রকমের ডালই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খান।

Pulses
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy