Sourced by the ABP
সিমলেপাড়ার নরেন্দ্রনাথ দত্ত তখনও স্বামী বিবেকানন্দ হননি। দত্ত বাড়ির ছোট্ট ছেলেটি তখন দুরন্ত বিলে। কিন্তু ধ্যানে বসলেই দস্যি বিলে একেবারে শান্ত হয়ে যেত। ভবিষ্যতে নরেনের বিবেকানন্দ হয়ে ওঠার বীজ বপন হয়েছিল সেই বাল্যকালেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সন্তানকে একজন সংবেদনশীল মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হলে, অভিভাবককে তার মানসিক গঠনের ব্যাপারে শৈশবেই সচেতন হতে হবে। আর তার অন্যতম উপায় ধ্যান বা মেডিটেশন। যোগ প্রশিক্ষক তাপস মণ্ডল বলছেন, “ছোট্ট বয়স থেকে নিয়মিত ধ্যান করার অভ্যেস, বড় বয়সের অনেক সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি দিতে পারে।”
ধাপে ধাপে...
তাপস বলছেন, “বয়স অনুযায়ী বাচ্চাদের মেডিটেশনের ধরন আলাদা।” ২ থেকে ৪ বছরের বাচ্চাদের জন্য খেলার ছলে অল্প সময়ের মজাদার সেশন রাখুন। ৫ থেকে ৯ বছরের বাচ্চাদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি, পরিপূর্ণ চিন্তাভাবনা, কল্পনাশক্তি, নির্দেশ মেনে চলার অভ্যেস খানিকটা তৈরি হয়ে যায়। ফলে গল্পের ছলে নানা অ্যাক্টিভিটি করাতে পারেন। ১০ থেকে ১৫ বছরের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় ধ্যান, বিভিন্ন আসন করানো যায়।
যোগাসন
ধ্যানের পাশাপাশি বাচ্চাদের পদ্মাসন, বজ্রাসন, ভুজঙ্গাসন ইত্যাদির মতো কিছু সাধারণ যোগাসনও করানো যেতে পারে, বলছেন যোগ প্রশিক্ষক বরুণ দেব। তাঁর কথায়, “বিভিন্ন ধরনের স্ট্রেচে বাচ্চাদের পেশি শক্তিশালী হয়, তার নমনীয়তা বাড়ে। তিন-চার বছর বয়স থেকেই বাচ্চারা যোগাসন করতে পারে। কিন্তু খেয়াল রাখবেন, দশ-বারো বছর বয়সের আগে তাদের শারীরিক গঠন সম্পূর্ণ হয় না। তাই জোর করে স্ট্রেচ করতে গেলে কিছু সময়ে অস্থিসন্ধির ক্ষতি হতে পারে, কোনও মাসল বা টিসু ছিঁড়ে যেতে পারে, হাড় ভাঙতে পারে। তাই মনের খুশিতে নিজেদের ক্ষমতা মতো বাচ্চারা যতটুকু হাত-পা নাড়াচাড়া করতে পারে, সেটুকুই করতে দিন।”
আরও কিছু...
নিজে উদাহরণ হয়ে দাঁড়ান
একা বাচ্চাকে মেডিটেশন না করিয়ে বরং দলে করান। এতে বাচ্চারা আনন্দ পাবে। তা ছাড়া, ছোটরা অন্যের দেখাদেখি কাজ করতে ভালবাসে, উৎসাহিত হয়।
উপকারিতা
তা ছাড়া, নিয়মিত মেডিটেশন, যোগাভ্যাসে শিশুর শারীরিক ও মানসিক উন্নতি হয়। ফ্লেক্সিবিলিটি, স্টেবিলিটি বাড়ে। পজ়িটিভ মনোভাব তৈরি হয়। ঘুম ভাল হয়। মেডিটেশন অনেক সময়েই অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাক্টিভিটি ডিজ়অর্ডার অর্থাৎ এডিএইচডিতে আক্রান্ত বাচ্চাদের শান্ত করতে পারে। নিয়মিত ধ্যান অভ্যেসে এই ধরনের বাচ্চারা নিজেদের উপরে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ গড়ে তুলতে পারে। অটিস্টিক বাচ্চাদের ফ্লেক্সিবিলিটিও খানিকটা বাড়ানো সম্ভব হয়।
ধ্যান নিয়মিত করা জরুরি। বাচ্চাদের মেডিটেশনের জন্য এখন বেশ কিছু অ্যাপ তৈরি হয়েছে। অনলাইন বিভিন্ন ভিডিয়োও সহজলভ্য। তবে বাচ্চা যা-ই করুক, প্রশিক্ষকের নজরদারিতে করতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy