ভাড়াবাড়ি ছেড়ে নতুন বাড়িতে চলে এসেছে তিন্নিরা। নতুন বাড়িতে সাজানো ঘর পেয়ে তিন্নি খুব খুশি হলেও, মনমরা তাদের পোষ্য। খাওয়ায় রুচি নেই, দিনরাত বাড়তি ডাকাডাকি করছে সারমেয়।
পশুরোগ চিকিৎসকেরা বলছেন, পরিবেশ, বাড়ি বদলের প্রভাব পড়ে কুকুর, বিড়ালের মতো চারপেয়ে মনে। হঠাৎ করেই মনে হতে পারে তাদের দুনিয়া যেন ওলটপালট হয়ে গেল। তারই প্রভাব পড়তে পারে পোষ্যের আচরণে।
আরও পড়ুন:
কেন এমন হয়? যে কোনও বাড়িতে দিনের পর দিন থাকাটা অভ্যাস। বাড়ি বদলে যে কোনও মানুষেরও কিন্তু কমবেশি অসুবিধা হয়। তবে পোষ্যের ক্ষেত্র সমস্যা হয় কারণ তারা যে বাড়িতে থেকে অভ্যস্l সেই বাড়ির গন্ধ চেনে, কোথায় প্রস্রাব করতে হবে, কোথা/ মলত্যাগ করবে সে জায়গা নির্দিষ্ট থাকে। ঘরের প্রিয় কোণও থাকে। সেই অভ্যাসে হঠাৎ করে বদল তাদের মনোজগতে প্রবল প্রভাব ফেলতে পারে। নতুন পরিবেশে প্রথম দিকটায় খাপ খাইয়ে নিতে অসুবিধা হলে খিদে কমে যাওয়া, প্রস্রাব করতে না চাওয়া এমন বদল হতে পারে। এমনকি দেখা দিতে পারে উদ্বেগও।
ঠিক সেই কারণে পোষ্যকে নিয়ে নতুন পরিবেশ এবং নতুন বাড়িতে যাওয়ার আগে প্রস্ততির প্রয়োজন হয়। পোষ্যদের পুষ্টিবিদ অঞ্জলি কালাচাঁদ জানাচ্ছেন, নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার জন্য তাদের বিশেষ যত্নের দরকার হয়। রুটিন বদলে তাদের অসুবিধা হতে পারে। তাই যেগুলি সে আগে করত, নতুন পরিবেশে সেই সব কিছুই অভ্যাস করাতে হবে।
কোন প্রস্তুতি জরুরি?
· নতুন বাড়ির নতুন বিছানা পোষ্যের পক্ষে উদ্বেগের কারণ হতে পারে। তাই পুরনো মনে হলেও সারমেয়ের দীর্ঘ দিনের ব্যবহৃত বিছানা, বোতল, খাবারের থালা, কম্বল সব কিছুই সঙ্গে রাখুন। এতে সে চেনা গন্ধ পাবে।
· যদি সে নিয়মিত হাঁটাহাঁটিতে অভ্যস্ত হয়ে থাকে, নতুন জায়গায় এসে সময় নষ্ট না করে সেই নিয়ম চালু করা দরকার। এতে সে পুরনো রুটিন ফিরে পাবে।
· কোনও কোনও পোষ্য দ্রুত উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে, ডাকাডাকি শুরু করে। আচমকা উত্তেজনা তার শরীরে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। এ ক্ষেত্রে পশুরোগ চিকিৎসকের পরামর্শে উদ্বেগ কমানোর ওষুধ বা স্প্রে সঙ্গে রাখা যেতে পারে।
· নতুন বাসস্থান যদি দূরে হয়, লম্বা সফরের প্রয়োজন হয়, পোষ্যের আরামের জন্য তার চেনা কম্বল, জিনিসপত্র সঙ্গে রাখুন।
· অনেক সময় জায়গা বদলের সঙ্গে খাদ্যাভ্যাস বদলের প্রয়োজন হতে পারে। পোষ্যের খাবারে বদল ঘটাতে হলে সেটি ধীরে করা দরকার।
নতুন বাড়িতে গোছগাছের জন্যও অনেক সময় লাগে। জিনিসপত্রও এলোমেলো থাকে প্রথম দিকে। সঙ্গে পোষ্য থাকলে সতর্কতা জরুরি। কোনও ধারালো জিনিস বা ভঙ্গুর জিনিস পোষ্যের নাগালে যেন না থাকে তা দেখা প্রয়োজন। পোষ্যের পক্ষে ক্ষতিকর গাছপালা বাগানে রয়েছে কি না, দেখে নেওয়া দরকার।