মাতৃত্ব যেমন সুখের, তেমনই কষ্টেরও। সে কথা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন অভিনেত্রী আলিয়া ভট্ট। মা হওয়ার পর প্রতিটি মেয়ের জীবনে পরিবর্তন আসে। তা যতটা শারীরিক, ততটাই মানসিক। তার সঙ্গে অদৃশ্য আরও কিছু বদলের সম্মুখীন হতে হয় নতুন মায়েদের। যার জন্য হয়তো তাঁরা আগে থেকে প্রস্তুত থাকেন না। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানিয়েছেন, মা হওয়ার আগের জীবনটা কেমন ছিল, তা তিনি প্রায় ভুলে যেতে বসেছেন। সারাটা দিন কী ভাবে কেটে যায়, তা তিনি ঠাহর করতে পারেন না। শুটিং না থাকলেও কাজ শেষ হতে চায় না। কেন এত ব্যস্ততা তাঁর?
আরও পড়ুন:
অভিনেত্রী জানিয়েছেন, তাঁর গোটা দিনটাই আবর্তিত হয় বছর দুয়েকের কন্যা রাহাকে ঘিরে। সকাল ৭টায় দিন শুরু হয় আলিয়ার। সেই থেকে কিছু না কিছু চলতেই থাকে। আলিয়া বলেন, “রাত সাড়ে ৮টা-৯টা নাগাদ রাহা ঘুমোতে গেলে তবে আমার কাজ শেষ হয়। আমিও সাড়ে ১০টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ি। মনে হয় আমি যেন একটা ট্রেডমিলে রয়েছি। আর সারা দিন ধরে দৌড়েই চলেছি।” আর পাঁচজন মায়ের মতো আলিয়াও কন্যাকে নিয়ে তটস্থ হয়ে থাকেন। অতিরিক্ত আগলে রাখার প্রবণতাও রয়েছে আলিয়ার। ছোট ছোট বিষয়ে অতিরিক্ত চিন্তাও করেন। অভিনেত্রীর কথায়, “বুঝি কিন্তু কিছু করতে পারি না। চিন্তা চলেই আসে। রাহা যখন আরও ছোট ছিল, তখন চিন্তাগুলো অন্যরকম ছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চিন্তার ধরন বদলেছে। কিন্তু একেবারে উধাও হয়ে যায়নি।”

কন্যা রাহার সঙ্গে আলিয়া। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
আত্মজার সঙ্গে থাকতে থাকতে নিজের মেয়েবেলাকে ফিরে দেখেন আলিয়া। রাহার বড় হয়ে ওঠার প্রতিটি মুহূর্ত তাঁর কাছে অমূল্য। আলিয়া এমনিতে খুব সাবধানি। প্রায় সব বিষয়েই দশ পা এগিয়ে থাকেন। আগে থেকে মাথায় ছকে রাখেন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। তবে কন্যার সঙ্গে থাকলে তিনি বর্তমানকেই চুটিয়ে উপভোগ করতে চান। শুধু আলিয়া নন, বাবা হওয়ার পর অভিনেতা রণবীর কপূরের জীবনেও অনেক পরিবর্তন এসেছে। আলিয়া বলেন, “বাবা হওয়ার আগেও আমি রণবীরকে দেখেছি, এখনও দেখছি। তফাতটা বুঝতে পারি। মেয়ের সঙ্গে রণবীরের সম্পর্কটা একেবারে বন্ধুর মতো। বাড়িতে থাকলে রাহার বাবাও এখন বেশির ভাগ সময় মেয়েকে নিয়ে ব্যস্ত থাকে। মেয়ে-বাবার খুনসুটি, কথাবার্তা, একে-অপরকে জড়িয়ে থাকার মুহূর্তগুলো আমি লুকিয়ে ভিডিয়ো করে রাখি।”
একরত্তির আগমনে পরিবর্তন যে এসেছে সে কথা ভুল নয়। কিন্তু সব পরিবর্তন যে ভাল তেমনটাও নয়। আলিয়া স্বীকার করেছেন, নিজেকে ভাল রাখার জন্য আগে যে রুটিন তিনি মেনে চলতেন, সে সব এখন গৌণ হতে বসেছে। এখন আর শরীরচর্চা নিয়ে তিনি খুব বেশি কথা বলেন না। জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকার কিংবা গান শোনারও বিশেষ সময় তিনি পান না। জার্নাল লেখার অভ্যাস ছিল অভিনেত্রীর। মনে করে প্রতি রাতে মনের কথা লিখে রাখতেন ডায়েরির পাতায়। মনঃসংযোগ বাড়িয়ে তোলার জন্য ধ্যান করতেন, সময় পেলেই আঁকতেন। সে সব এখন গল্পকথা বলে মনে হয় অভিনেত্রীর।