মরসুম ভেদে পরিবেশের প্রভাব যেমন মানব শরীরে পড়ে, তেমনই পড়ে প্রাণীদের উপরেও। ক্রমাগত বৃষ্টির ফলে স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় রোগজীবাণু বেড়ে যায় কয়েক গুণ। ফলে এই মরসুমে অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকিও বাড়ে। শুধু পোষ্য কুকুর, বিড়াল নয়, বর্ষার সময় অ্যাকোয়ারিয়ামের মাছেরও বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয়। জল বদল, সঠিক খাবার, অ্যাকোয়ারিয়ামে অক্সিজেন সরবরাহ ঠিক না থাকলে মাছ মারাও যেতে পারে।
অ্যাকোয়ারিয়াম, মাছ নিয়ে যাঁরা কাজ করেছেন, তাঁরা জানাচ্ছেন, এই বৃষ্টি আবার পর ক্ষণেই রোদের ফলে তাপমাত্রার ওঠানামা চলতে থাকে। তার প্রভাব পড়ে অ্যাকোয়ারিয়ামে জল এবং ভিতরের পরিবেশেও। সেই কারণেই কয়েকটি বিষয়ে নজর দেওয়া দরকার।
আরও পড়ুন:
জলের মান: টানা বৃষ্টি চলতে থাকলে তাপমাত্রাও অনেকটা কমে যায়। সেই সময় ঘরে বাতানুকূল যন্ত্র চললে, অ্যাকোয়ারিয়ামের জলের তাপমাত্রাও কমে যাবে স্বাভাবিক ভাবেই। তাপমাত্রা দ্রুত কমে গেলে বা আচমকা বেড়ে গেলে তার প্রভাব পড়তে পারে মাছেদের স্বাস্থ্যে। এক এক রকম মাছ এক এক রকম তাপমাত্রায় স্বচ্ছন্দ। কোন মাছ রাখা হয়েছে, সেই বুঝে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন।
রোগ প্রতিরোধ: বর্ষার মরসুমে অ্যাকোয়ারিয়ামের জল ঠিকমতো বদল না করলে অনুজীবের সংখ্যা বেড়ে যেতে পারে। যা মাছের শরীরে সংক্রমণ তৈরি করতে পারে। কোনও মাছের সক্রিয়তা কমে গেলে বা সেটি ঝিমিয়ে গেলে, ঠিক করে না খেলে সতর্ক হতে হবে। সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য নতুন মাছ অ্যাকোরিয়ামে রাখার আগে সেটিকে কিছু দিন আলাদা রাখুন। যদি সে সুস্থ থাকে বা তার মধ্যে কোনও রোগলক্ষণ প্রকাশ না পায়, তখন তাকে অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখুন।
খাবার: বর্ষার মরসুমে মাছেদের বিপাকহারেও প্রভাব পড়তে পারে। এ জন্য দরকার সঠিক খাবার। খেয়াল রাখতে হবে, মাছ যেন বেশি না খেয়ে ফেলে। আবার বেশি খাবার দিলে, খাদ্যের অবশিষ্টাংশ জলের দূষণ বৃদ্ধি করতে পারে। তাই মাছেদের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নেওয়া খুব জরুরি। সঠিক পু্ষ্টি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।
উদ্বেগ: বর্ষার মরসুমে অতিরিক্ত আর্দ্রতা, অ্যাকোরিয়ামের পরিবেশ বা তাপমাত্রার বদলে— এমন অনেক কিছুই মাছের উদ্বেগের কারণ হতে পারে। যে ঘরে অ্যাকোয়ারিয়াম থাকছে সেখানে যাতে জোর শব্দ না হয় দেখা প্রয়োজন। অ্যাকোরিয়ামের পরিবেশে নজর দেওয়ার পাশাপাশি মাছ যাতে দরকারে লুকনোর যথেষ্ট জায়গা পায়, সেই মতো অন্দরসজ্জা থাকা দরকার।
অ্যামোনিয়া এবং নাইট্রেট: মাছেদের বর্জ্য থেকে জলে অ্যামোনিয়া এবং নাইট্রেটের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। কোনও একটির মাত্রা বেড়ে গেলে মাছের পক্ষে তা ক্ষতিকর হতে পারে। সে দিকে খেয়াল রাখা প্রয়োজন।