Advertisement
E-Paper

স্নায়ুর রোগে ধরেছে? গন্ধ শুঁকে অসুখ বুঝবে কুকুর, পার্কিনসন্সে আক্রান্তদের চিনতে বড় গবেষণা

গন্ধ শুঁকে বোমা ও মাদক চিনতে দীর্ঘ দিন ধরে কুকুরের ব্যবহার হয়ে আসছে। সেই ভবে তাদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। নির্দিষ্ট ধরণের ক্যানসার, ডায়াবিটিস এবং এমনকি সংক্রামক রোগও শুঁকে চিহ্নিত করতে কুকুরের ব্যবহার করা হয়। এ বার তারা ধরবে পার্কিনসন্স।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২৫ ১৪:৪৩
New Study has shown that dogs can be trained to identify patients with Parkinson’s disease

স্নায়ুর অসুখ হয়নি তো, গন্ধ শুঁকে বুঝে যাবে কুকুর। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

স্নায়ুর জটিল রোগে ধরেনি তো? ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিনাশ চেপে বসল, না কি পার্কিনসন্সের মতো দুরারোগ্য ব্যাধি, কেবল গন্ধ শুঁকেই চিনে নেবে কুকুর। শুনে অবাক হওয়ার কিছু নেই। আদপেই সম্ভব হচ্ছে এই বিষয়টি।

গন্ধ শুঁকে বোমা ও মাদক চিনতে দীর্ঘ দিন ধরে কুকুরের ব্যবহার হয়ে আসছে। সেই ভবে তাদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। নির্দিষ্ট ধরনের ক্যানসার, ডায়াবিটিস এবং এমনকি সংক্রামক রোগও শুঁকে চিহ্নিত করতে কুকুরের ব্যবহার করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় কোনও পরীক্ষা বা রাসায়নিক জড়িত থাকে না। কুকুরের কোনও জিনিস শুঁকে চিহ্নিত করার এই প্রক্রিয়াকে ‘বায়োডিটেকশন’ বলা হয়। স্নায়ুর জটিল সব রোগ চিনতেও এ বার কুকুরদেরই প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু করেছেন ব্রিস্টল ও ম্যাঞ্চেস্টার ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা।

কাজটা মোটেও সহজ নয়। রোগীর ত্বকের খানিকটা অংশ নিয়ে তা শোঁকানো হচ্ছে কুকুরদের। মানুষের ঘর্মগ্রন্থি থেকে যে ঘাম নিঃসরণ হয় বা ত্বকের সিবেসিয়াস গ্ল্যান্ড থেকে যে সিবাম বা তৈলাক্ত পদার্থ বার হয়, তার নির্দিষ্ট গন্ধ থাকে। স্নায়ুর রোগ হলে তা বদলে যায়। যখন কেউ অসুস্থ হন, তখন মানবদেহ থেকে যে সব জৈব যৌগ নির্গত হয়, তারও নির্দিষ্ট গন্ধ থাকে। সেই বিশেষ গন্ধটি ‘বায়োডিটেকশন’-এর মাধ্যমে চিহ্নিত করা যেতে পারে। কুকুরেরা তাদের অত্যন্ত সংবেদনশীল ঘ্রাণশক্তির সাহায্যে তা বুঝতে পারবে সহজেই। এর জন্য আলাদা কোনও পরীক্ষা করার দরকার হবে না।

পার্কিনসন্স স্নায়ুর জটিল ব্যাধি। কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে সাঁড়াশির মতো চেপে ধরে। বিজ্ঞানীরা জানান, ‘আলফা-সিনুক্লিন’ নামে এক ধরনের প্রোটিন পার্কিনসন্সের কারণ। এই প্রোটিন অন্ত্রেই তৈরি হয় এবং শরীরের ভেগাস স্নায়ু দিয়ে বাহিত হয়ে মস্তিষ্কে পৌঁছয়। এই প্রোটিনের হাত ধরেই অন্ত্রে প্রথম পার্কিনসন্সের জন্ম হয়। গ্যাস-অম্বলের সমস্যা মারাত্মক বেড়ে যায়, কোষ্ঠকাঠিন্য হলে তা সারতে চায় না, আলসারের মতো ক্ষত দেখা দেয়, লিভারের জটিল রোগ হতে শুরু করে এবং খাদ্যনালিতে সংক্রমণও দেখা দেয়। তার পর ধীরে ধীরে মস্তিষ্কে প্রভাব পড়ে। তখন স্মৃতি লোপ পেতে শুরু করে, হাঁটাচলার গতি কমে যায়, হাত-পা কাঁপতে শুরু করে, ঘন ঘন মেজাজ বদলে যেতে থাকে। হাতের লেখা ও কথা জড়িয়ে যায়। ভাবনাচিন্তাও গুলিয়ে যেতে থাকে। রোগীর নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা পুরোপুরি লোপ পেতে থাকে। পার্কিনসন্স হচ্ছে কি না, তা অনেক সময়েই গোড়ায় বোঝা যায় না। অনেকেই একে ডিমেনশিয়ার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন। তাই রোগ নির্ণয় হতে হতে তা অন্তিম পর্যায়ে পৌঁছে যায়।

ইউনিভার্সিটি অফ ম্যাঞ্চেস্টারের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পার্কিনসন্স আছে বা রোগ ধীরে ধীরে জন্ম নিচ্ছে, এমন রোগীদের নমুনা নিয়ে তা শোঁকানো হয় কুকুরদের। আগে থেকেই তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে রাখা হয়েছিল। অন্তত ২০০ রকম নমুনার মধ্যে থেকে পার্কিনসন্স আছে, এমন রোগীদের খুঁজে বার করেছে তারা। রোগ নির্ণয়ের ওই পরীক্ষায় আপাতত ৮০ শতাংশ সফল হয়েছে সারমেয়রা। তাদের অদ্ভুত ঘ্রাণশক্তিকে কাজে লাগিয়ে, পরবর্তী সময়ে আরও অনেক জটিল স্নায়ুর রোগ চিহ্নিত করা সম্ভব হবে বলেও আশা রাখছেন বিজ্ঞানীরা।

Parkinson's disease pet dogs Neurological Diseases
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy