একসময় অভিভাবকেরা বলতেন, চেঁচিয়ে পড়লে পড়া মনে থাকে ভাল। রুটিন মেনে পড়তে বসা, জোরে জোরে পড়া— শেখার প্রক্রিয়া কিন্তু এত সংক্ষিপ্ত নয়। মনোবিদেরা বলেন, পড়াশোনায় নিয়ামানুবর্তিতা জরুরি। রুটিন মেনে চলা দরকার। তবে, শুধু জোরে পড়া বা মুখস্থ করা নয়, শেখার প্রক্রিয়ায় সাহায্য করতে পারে আধুনিক পড়াশোনার কৌশলও।
আরও পড়ুন:
শুধু মুখস্থ নয়: পড়া মুখস্থ করলেই হয় না, তা বোঝা দরকার। কোনও বিষয় পড়ার কয়েক দিনের মধ্যেই ভুলে যেতে পারে পড়ুয়ারা। কিন্তু তা যদি সঙ্গে সঙ্গে লেখার অভ্যাস করা হয়, মনে গেঁথে যায়। বাড়িতেই যদি বিষয়ভিত্তিক পরীক্ষা দেওয়ার অভ্যাস করা যায় বা কোনও একটি বিষয়ের উপর প্রশ্নের উত্তর লিখতে হয়, তা হলে পড়া মনে থাকে দীর্ঘ দিন। এ ক্ষেত্রে মস্তিষ্ক সংশ্লিষ্ট বিষয়কে মনে করার চেষ্টা করে লেখার সময়। ফলে অনেক বেশি তা মনে রয়ে যায়। পড়াটা ভাল হয়।
পুর্নবার পড়া: কোনও বিষয় পড়ার কিছু দিন পরে ভুলে যাওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু যদি তা আবার পড়া হয়, তা হলে মনে থাকবে। এই কারণে পড়াশোনায় ‘রিভিশন’ জরুরি। কিছু দিন অন্তর নির্দিষ্ট একটি বিষয় আবার পড়লে ভুলে যাওয়া অংশবিশেষ নতুন করে মনে পড়বে।
বড় বিষয় ভাগ করে নেওয়া: জটিল একটি বিষয় এক বারে না পড়ে, অল্প অল্প করে ভাগ করে নেওয়া যেতে পারে। যত ক্ষণ না একটি অংশ ভাল করে বোধগম্য হচ্ছে, তত ক্ষণ তাতেই মন দেওয়া দরকার। মস্তিষ্ক জটিল এবং বড় বিষয় চট করে গ্রহণ করতে পারে না। তা যদি ছোট ছোট অংশে ভাগ করে দেওয়া হয়, মনে রাখতে সুবিধা হবে।
অন্যকে পড়ানো: কোনও একটি বিষয় নিজে বোঝার পর কাউকে সেটি বোঝানোর বা পড়ানোর চেষ্টা করলেও লাভ হবে।কাউকে বোঝাতে গেলে নিজেকে বুঝতে হবে। বিষয়টি জলের মতো সহজ হয়ে গেলে অন্যকে বোঝানোও যাবে। আবার কাউকে বোঝাতে গেলেও বিষয়টির গভীরে যাওয়ার প্রয়োজন হবে।পদার্থবিদ রিচার্ড ফিনম্যানের পদ্ধতি বলে, পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে সেটির সহজ ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা বিষয়ের গভীরে যেতে সাহায্য করে।
বাস্তব মডেল: বিষয়টি যদি বাস্তবের সঙ্গে তুলনা টেনে পড়ুয়াদের বোঝানো হয়, বোধগম্য হবে অনেক বেশি। মনেও থাকবে। এ জন্য মডেল ব্যবহার করা যেতে পারে। বিজ্ঞানভিত্তিক পড়াশোনা হাতে-কলমে প্রয়োগ করে দেখলে সেটি শেখা সহজ হবে। মুখে বলার চেয়ে মডেল কোনও বিষয়কে বুঝতে বেশি সাহায্য করে।