খেলাধুলার পরিসর ক্রমেই কমে আসছে। এখনকার ছেলেমেয়েরা স্কুল থেকে ফিরে বাইরে আর খেলতে যেতে চায় না। অনেক ক্ষেত্রে সেই সুযোগও থাকে না। তখন মোবাইল বা ট্যাবকেই আপন করে নেয়। চিকিৎসকেরা কিন্তু বলেন, ছোটরা যদি দিনে এক ঘণ্টাও শারীরিক কসরত করতে পারে, তা হলে ছোট থেকেই হাড়ের গঠন মজবুত হবে, রোগব্যাধিও কম হবে। ছোট থেকে স্থূলতা, ডায়াবিটিসের মতো সমস্যাও মাথাচাড়া দেবে না। তাই বাবা-মাকেই উদ্যোগ নিয়ে নিয়ম করে ছোটদের শরীরচর্চার অভ্যাস করাতে হবে। সে বাইরে গিয়ে হাঁটাহাঁটি, দৌড়নো, জগিং বা সাইকেল চালানো হোক অথবা বাড়িতেই নানা ব্যায়াম ও যোগাসন।
যোগাসন প্রশিক্ষক অনুপ আচার্যের কথায়, “শুধু পড়াশোনা আর অন্যান্য গুণে দক্ষ করে তুলতে গিয়ে ওর ছোটাছুটি করার সময়টা কেড়ে নেবেন না। খেলার মাঠ সে ভাবে না থাকলে বা খেলার সঙ্গী না পেলে বাড়িতেই ব্যায়াম করাতে হবে। যোগাসন বা সাঁতারের ক্লাসেও ভর্তি করে দিতে পারেন। তবে শুরুতেই ভারী কোনও ব্যায়াম নয়, হালকা শারীরিক কসরতই করে যেতে হবে।”
কোন কোন ব্যায়াম ছোটদের শিখিয়ে দিতে পারেন?
জাম্পিং জ্যাক
পা দুটো ছড়িয়ে সোজা দাঁড়াতে হবে। হাত দুটো তুলতে হবে মাথার উপরে। এই অবস্থাতেই লাফাতে হবে। লাফানোর সময় দুই হাত ও দুই পায়ের মধ্যে দূরত্ব কমে কাছাকাছি আসবে। অনেকে ছন্দ মেলাতে হাত জড়ো করার সময় তালিও দেন। খুদেকে এই ব্যায়াম শিখিয়ে দিতে পারেন। সঙ্গে আপনারাও করতে পারেন। আপনাদের দেখে সন্তানেরও উৎসাহ বাড়বে। হালকা কোনও বাজনা চালিয়ে দিয়ে জাম্পিং জ্যাক করতে পারেন। এতে খুদে আনন্দও পাবে।
আরও পড়ুন:
খুবই ভাল কার্ডিয়ো ব্যায়াম জাম্পিং জ্যাক। ক্যালোরি ঝরে, শরীরের সমস্ত পেশির ব্যায়াম হয়। ১০ সেট করে তিন বার যদি করা যায়, তা হলে উপকার হবে।
স্কোয়াট
অনেক ধরনের স্কোয়াট হয়। বয়স এবং শরীরের ক্ষমতা অনুযায়ী যা করা যায়। এক-একটি স্কোয়াটে শরীরের আলাদা অংশের উপরে চাপ পড়ে। ছোটদের একদম বেসিকটাই করানো ভাল। চেয়ারে বসার মতো করে হাঁটু ভাঁজ করে কোমর ও পিঠ সোজা রেখে দাঁড়াতে হবে। এই সময় হাত দুটো সামনের দিকে টানটান করে ছড়িয়ে দিতে হবে। স্কিপিং, দৌড়নো, হাঁটাহাঁটিতে পায়ের পেশির যে ব্যায়াম হয়, স্কোয়াট তার অনেকটাই পুষিয়ে দেয়।
লাঞ্জেস
পায়ের পেশি শক্তপোক্ত করতে এই ব্যায়াম খুবই উপযোগী। বিশেষ করে ছোটরা যদি নিয়ম মেনে করতে পারে, তা হলে দুই পায়ের জোর বাড়বে, শরীরের নিম্নভাগে মেদ জমবে না। একটি পা সামনে এগিয়ে হাঁটু ভাঁজ করতে হবে, আর একটা পা পিছনে দিয়ে স্ট্রেচ করে বসার মতো করে উঠবোস করতে হবে। কাঁধ যেন সোজা থাকে। প্রতি পায়ে ১০টির সেট তিন বার করলেই ভাল।