ওজন কমানোর জন্য রান্নায় নুন ছাড়া খাবার খান অনেকেই। তবে তাতে রসনাতৃপ্তির কোনও অবকাশ আছে বলে কল্পনা করা যায় না। কারণ স্বাদের অন্যতম নিয়ন্ত্রক বলে সুখ্যাতি রয়েছে নুনের। তবে স্বাদ নষ্ট করতেও তার জুড়ি মেলা ভার। তবে নুনের কাজ শুধু স্বাদ বাড়ানো নয়, বরং খাবারের গুণ, রং, আকার, এমনকি খাদ্য সংরক্ষণেও ভূমিকা পালন করে তা।
নুন মূলত সোডিয়াম ক্লোরাইড। সোডিয়াম আমাদের জিভের স্বাদগ্রন্থিকে সক্রিয় করে, ফলে খাবারের স্বাদ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আবার এটি আর্দ্রতা টেনে নেয় বলে ব্যাক্টেরিয়ার বৃদ্ধি কম হয়। তাই নুন একাধারে স্বাদের ভারসাম্য রক্ষা করে, আবার খাদ্য সংরক্ষক হিসেবেও কাজ করে। আর নিজের হেঁশেলে নানা ভাবে নুনকে কাজে লাগাতে পারেন আপনি। রইল ৭টি কৌশল—
স্বাদের অন্যতম নিয়ন্ত্রক বলে সুখ্যাতি রয়েছে নুনের। ছবি: সংগৃহীত।
পেঁয়াজ কাটার সময়ে চোখজ্বালা কমায়: পেঁয়াজ কাটলে যে সালফারের যৌগ বেরোয়, তা চোখে গিয়ে জ্বালা করে। কাটিং বোর্ডে সামান্য নুন ছিটিয়ে নিলে এই গ্যাস কম ছড়ায়। একই সঙ্গে নুনের জন্য ছুরি কম পিছল হয়।
সব্জিকে মুচমুচে করে তোলে: ভাজার আগে যদি সব্জিতে সামান্য নুন মাখিয়ে রাখা যায়, তবে অতিরিক্ত জল বেরিয়ে আসে। ফলে ভাজার সময় সব্জি জলে গলে যায় না, বরং খেতে মুচমুচে হয়।
সেদ্ধ করার কাজে সুবিধা: ডিম বা পাস্তা সেদ্ধ করার জলে নুন দিলে স্বাদ বাড়বে। ডিমের খোসা ফাটলেও ভিতরের অংশ বেরোবে না। পাস্তা নরম হবে।
সব্জির রং অটুট রাখে: পালং, ব্রকোলি বা বিট সেদ্ধ করতে গেলে সব্জির রং প্রায়ই ফিকে হয়ে যায়। নুন দেওয়া জলে সেদ্ধ করলে রং থাকে উজ্জ্বল।
আচারের প্রাকৃতিক রক্ষক: আচারে নুন দিলে খাবারের আর্দ্রতা কমে যায়। ব্যাক্টেরিয়া বংশবিস্তার করতে পারে না, ফলে আচার নষ্টও হয় না সহজে।
স্বাদে ভারসাম্য আনে: রান্না যদি বেশি ঝাল, টক বা মিষ্টি হয়ে গেলে একচিমটে নুনই রক্ষাকর্তা হয়ে দাঁড়াতে পারে। কারণ, নুনের সাহায্যেই স্বাদের ভারসাম্য ফিরে আসে।
বাসনপত্র পরিষ্কার রাখে: লেবুর রস বা ভিনিগারের সঙ্গে নুন মিশিয়ে ব্যবহার করলে পাত্রের দাগ ও দুর্গন্ধ সহজে সাফ হয়। প্রাকৃতিক ক্লিনার হিসেবে নুন খুবই কার্যকর।
তাই নুন কেবল রান্নার মশলা নয়, বরং হেঁশেলে বহুমুখী হিসেবে কাজ করতে পারে। স্বাদ, রং, সংরক্ষণ— সব ক্ষেত্রেই নুনের অবদান রয়েছে।