Advertisement
১১ মে ২০২৪
stroke

দৈনন্দিন জীবনে এ সব ভুল আর নয়, স্ট্রোক রুখতে মেনে চলুন কিছু মাস্টারস্ট্রোক

নিয়মিত চেক আপ ও বাড়তি কিছু সতর্কতা মেনে দৈনন্দিনতায় কিছুটা পরিবর্তন আনতে পারলে তবেই এই প্রবণতার সঙ্গে লড়া যায়।

স্ট্রোকের ফলে পঙ্গুত্বের শঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। ছবি: শাটারস্টক।

স্ট্রোকের ফলে পঙ্গুত্বের শঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। ছবি: শাটারস্টক।

মনীষা মুখোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৯ ১১:৪৬
Share: Save:

ওয়ার্ল্ড হেল্‌থ অর্গানাইজেশন (হু) থেকে ল্যানসেট জার্নাল— পরিসংখ্যানে তফাত নেই কোনও। প্রত্যেকেরই মতে, বিশ্বে প্রতি দশটি মৃত্যুর একটি হয় স্ট্রোকের কারণে। শুধু তা-ই নয়, ২০১৭ থেকে ২০১৯-এর মার্চ মাস পর্যন্ত এই কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে ভারত-সহ এশিয়ার নানা দেশে। কয়েক বছর আগে বিশ্বের ৩২টি দেশের উপর সমীক্ষা চালায় ‘আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন’। স্ট্রোকের জন্য মূল ১০টি কারণকে চিহ্নিত করেন তাদের গবেষকরা।

‘‘সব সময়ই যে মৃত্যুই ডেকে আনে এই আচমকা আক্রমণ, এমন নয়। বরং পঙ্গুত্বের আশঙ্কাকেও উড়িয়ে দেওয়া যায় না’’— স্ট্রোক নিয়ে এক আলোচনাসভায় এমনটাই জানালেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক গৌতম গুপ্ত। নিয়মিত চেক আপ ও বাড়তি কিছু সতর্কতা মেনে দৈনন্দিনতায় কিছুটা পরিবর্তন আনতে পারলে তবেই এই প্রবণতার সঙ্গে লড়া যায় বলে তাঁর মত।

স্ট্রোক কী

অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের উপর নির্ভর করেই প্রতিটি কোষ তাদের প্রয়োজনীয় কাজ সারে। আমাদের মাথার কোষগুলিও এমন স্বভাবের। অথচ মস্তিষ্কের রক্ত বহনকারী ধমনীর পথ বন্ধ হয়ে গেলে বা সরু হয়ে গেলে রক্ত আর সে পথে চলাচল করার মতো অবকাশ পায় না। অনেক সময় সেখানে চর্বি জমেও এই পথ বন্ধ হয়ে যায়। তখনই মস্তিষ্কের কোষগুলি প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের অভাবে নেতিয়ে পড়ে অকেজো হয় ও স্ট্রোকের শিকার হতে হয়।

আরও পড়ুন: আনারসেই লুকিয়ে ত্বকের বয়স আটকানোর মন্ত্র, মেনে চলুন এই সব উপায়

চিকিৎসকদের মতে, রক্তচাপ, ডায়াবিটিস ও শরীরচর্চার অভাবে এই প্রবণতা বাড়ে। বরং কিছু নিয়ম মেনে চললে স্ট্রোকের এই রিস্ক ফ্যাক্টরগুলোকে সহজেই জয় করা যায়। আলোচনাসভায় উঠে এল স্ট্রোক রোখার নানা কার্যকরী উপায়ও। রোজনামচার বদল থেকে শুরু করে অসুখ কমানোর নানা হাতিয়ারে জোর দিলেন চিকিৎসকরা। যেমন:

ওজন কিছুতেই বাড়তে দেওয়া যাবে না। ভারতের বেশির ভাগ লাইফস্টাইল ডিজিজে ওবেসিটি একটা বড় ফ্যাক্টর। ওজন যত কমবে, অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও ততটাই কমবে। তাই ডায়েট মেনে, শরীরচর্চা করে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। শরীরচর্চার সময় খুব একটা না পেলে অন্তত আধ ঘণ্টা হাঁটাহাঁটি করুন। একটানা রাস্তা ধরে, দ্রুত পায়ে ঘাম ঝরিয়ে হাঁটুন। পেটের মেদ যাতে না জমে, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রয়োজনে কোনও ফিটনেস ট্রেনারের পরামর্শ নিয়ে নিজের শরীরচর্চার রুটিনটা সাজিয়ে নিন।

আরও পড়ুন: ট্রেকিংয়ে যাচ্ছেন? শারীরিক প্রস্তুতির ক্ষেত্রে অবশ্যই মাথায় রাখুন এ সব

পর্যাপ্ত জল খাওয়া খুব প্রয়োজন। শরীরে কখনওই অক্সিজেনের ঘাটতি হতে দেবেন না। শরীর অনুযায়ী আপনার কতখানি জল খাওয়া প্রয়োজন, তা জেনে নিন পুষ্টিবিদের কাছ থেকে। সেই অনুপাতে জল খান। ঘুমের ব্যাঘাত ঘটলেই কোলেস্টেরল বাড়বে, মেদও বাড়বে। কাজেই ঘুমের সঙ্গে আপস নয়। রক্তচাপ ও ডায়াবিটিস থাকলে নিয়ম করে তা চেক আপ করুন। চিকিৎসকের কাছে গিয়ে মাসিক চেক আপ না করিয়ে অনেকেই একটানা ওষুধ খেয়ে যান। অন্তত দু’মাস অন্তর এই বিষয়গুলি চেক আপ করিয়ে নিন। প্রয়োজনে ওষুধের মাত্রা বাড়তে-কমতে পারে। রোদে বেরলে ছাতা, সানগ্লাস ব্যবহার করুন। সঙ্গে রাখুন জল। আচমকা অজ্ঞান হয়ে পড়লে, বা মাথা ঝিমঝিমের সঙ্গে শরীরের কোনও অংশ অবশ হয়ে গেলে, জিভ এলিয়ে চোখে অন্ধকার দেখলে ঝুঁকি নেবেন না। ঘাড়ে-মাথায় জল দিন। জল দিন রগ ও কানের দু’পাশেও। এর সঙ্গে দ্রুত চিকিৎসকের শরণ নেওয়াও খুবই জরুরি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE