Advertisement
E-Paper

নেশার সঙ্গে ডিভোর্স হলেই মুখের ক্যানসার বিদায় নেবে

তালিকার একেবারে প্রথম সারিতে আমাদের দেশ ভারতবর্ষ। না ক্রিকেটের বিশ্বকাপ, হকি বা অন্য কোনও খেলাধুলোর ব্যাপারে নয়। ওরাল ক্যানসারের নিরিখে বিচার করলে আমাদের দেশ এক নম্বরে। এর কারণটা নিজেদেরই ডেকে আনা। এই মারাত্মক অসুখের অন্যতম কারণ সুপুরি সহ নানান তামাক চিবোনোর নেশা। গুটখা, খৈনির নেশা ছেড়ে মুখের ক্যানসার প্রতিরোধ করার পরামর্শ দিলেন ক্যানসার সার্জেন ডা গৌতম মুখোপাধ্যায়। তামিলনাড়ু আর কেরলই একমাত্র ব্যতিক্রম। এই দুটি রাজ্যের মানুষজন নিজেদের মুখের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন। অন্য দিকে উত্তরপ্রদেশ সহ বাকি সবকটি রাজ্যের মানুষের মধ্যে ওরাল ক্যানসারের প্রবণতা হুহু করে বাড়ছে।

সুমা বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৮ ১২:৪৩
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

তামিলনাড়ু আর কেরলই একমাত্র ব্যতিক্রম। এই দুটি রাজ্যের মানুষজন নিজেদের মুখের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন। অন্য দিকে উত্তরপ্রদেশ সহ বাকি সবকটি রাজ্যের মানুষের মধ্যে ওরাল ক্যানসারের প্রবণতা হুহু করে বাড়ছে। আর সব থেকে সমস্যা হয়, রোগ যখন থার্ড বা ফোর্থ স্টেজে পৌঁছয়। রোগী তখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার কথা ভাবেন। আমাদের দেশের মোট ক্যানসারের মধ্যে ৩০% মুখগহ্বরের, অথচ আমেরিকায় মাত্র ৩%। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের এক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে যে, পুরুষদের মধ্যে মুখগহ্বরের ক্যানসারের ঝুঁকি মেয়েদের তুলনায় দ্বিগুণ। তামাক জনিত ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত ১,০২,৩০০। অন্য দিকে মুখগহ্বরের ক্যানসারে আক্রান্ত ৯৯,৪৯৫ জন। পরিসংখ্যান দেখে আঁতকে উঠছেন ক্যানসার বিশেষজ্ঞরাও। গত ২০ মার্চ বিশ্বজুড়ে ওয়ার্ল্ড ওরাল হেলথ ডে পালন করা হল মূলত মুখগহ্বরের ক্যানসার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে।

জেনেশুনে বিষপান

অনেকেই হয়তো ভাসা ভাসা জানেন, কিন্তু বেশিরভাগই জেনেশুনে বিষপান করে মুখের কর্কট রোগ নিজেরাই ডেকে আনেন। অনেকেই রয়েছেন যাদের দিন শুরু হয় গুটখার পাউচ মুখে ঢেলে। পান, সুপুরি, জর্দা, দোক্তা, পানপরাগ, গুটখা ও মদ্যপান ওরাল ক্যানসারের প্রধান কারণ। বিশেষ করে অনেকে গালের পাশে জর্দা পান বা সুপুরি ঠুসে রেখে দেন। ডাক্তারি পরিভাষায় এই অংশের নাম কফিন কর্নার। যাদের এই বদ অভ্যাস আছে তাঁদের ক্যানসারের সূত্রপাত কিন্তু এখান থেকেই হয়। এ ছাড়া ধারালো বা ভাঙা দাঁতের ঘষা লেগে গালের মধ্যে বারে বারে ঘা অথবা গুটলির মতো অংশ তৈরি হলে, এবং তা দীর্ঘস্থায়ী হলে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশ অনুযায়ী বায়োপসি করানো বাধ্যতামূলক। কেন না আমাদের দেশে যাবতীয় ক্যানসার আক্রান্তদের মধ্যে এক তৃতীয়াংশই মুখগহ্বরের ক্যানসার নিয়ে বিপর্যস্ত। আর সব থেকে আশঙ্কার ব্যাপার এই যে আমাদের কাছে এমন অনেক রোগীই মুখের ক্যানসার নিয়ে আসেন যাদের রোগ স্টেজ থ্রি বা ফোর-এ পৌঁছে গেছে। অন্যান্য অসুখের মতো মুখ, জিভ বা মাড়ির ক্যানসার প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে সম্পূর্ণ সারিয়ে তোলা যায়।

আরও পড়ুন: নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ, দাঁতের ক্ষয় আর নয়

আরও পড়ুন: চাপের ছুতোয় বাড়ছে ধোঁয়া-অসুখ

পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা দরকার

তামাক ছাড়াও ওরাল ক্যানসারের জন্যে দায়ী পরিচ্ছন্নতার অভাব। নিয়মিত দু’বেলা ব্রাশ করা ও খাবার পরে ভাল করে কুলকুচি করে মুখ পরিষ্কার রাখা দরকার। গবেষনায় জানা গিয়েছে ওরাল ক্যানসারের সঙ্গে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। মুখ গহ্বর পরিছন্ন রাখলে ক্যানসারের ঝুঁকি কমে। এ ছাড়া অনেক সময় ধারালো দাঁতের আঘাতে জিভ বা গাল বারংবার কামড়ে ফেললে এবং ঘা বা কোনও মাংসপিন্ড তৈরি হলেও ক্যানসারের ঝুঁকি থাকে। ধারালো দাঁত স্বাভাবিক করতে ডেন্টাল সার্জনের পরামর্শ নিতে হবে। গুড়াকু বা তামাক নয় সাধারণ টুথপেস্ট ও ব্রাশ দিয়ে দাঁত ও মুখ পরিষ্কার করতে হবে।

সব ধরনের তামাক বর্জন করতে হবে

তামাক আর ক্যানসার সমার্থক। তা সে ধোঁয়া ওড়ানো তামাকই হোক বা চিবোনর তামাক। একই রকম ক্ষতিকর পান, সুপুরি, চুন ও খয়ের। পান পাতার কিছু গুণ আছে ঠিকই কিন্তু চুন, সুপুরি, খয়ের আর জর্দা সহযোগে পান আর বিষ একই। অনেকের অভ্যেস দিবা রাত্র গালে পান ঠুসে রাখা। এই অভ্যাস থেকেও ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ষোলো আনা। তাই গুটখা, দোক্তা, খৈনি, পান পরাগ তো বাদ দেবেনই, সঙ্গে সিগারেট বিড়িকেও বাই বাই করুন। না হলে এরাই আপনাকে দ্রুত পৃথিবীকে গুডবাই জানানোর তোড়জোড় শুরু করবে। তামাক মুক্ত হয়ে ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন।

Health Tips Oral Cancer Smoking Cancer Healthy Living Video
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy