Advertisement
E-Paper

পাতে এক টুকরো মেঘালয়, বাঙালিকে উত্তর-পূর্বের স্বাদ চাখাচ্ছেন শেফ জ়ুবান

বাঙালিকে উত্তর-পূর্বের স্থানীয় খাবারের স্বাদ চাখাতে খুশি মনেই খুন্তি ধরেছেন শেফ জ়ুবান। কালো তিলে কষানো চিকেন থেকে স্টিকি রাইস, এক টুকরো মেঘালয়কেই যেন তুলে এনেছেন বাঙালির পাতে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৫ ১০:৪০
The Astor Kolkata unveils a taste of Meghalaya with Its first-ever Khasi Food Festival

বাঙালির পাতে উত্তর-পূর্বের স্বাদ। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

গরম স্যুপের মধ্যে গুটিকয়েক চিকেন ও মাশরুমের টুকরো। তার উপরে ধনেপাতা ও এক চিমটে গোলমরিচ ফেলে শেফ জানালেন, মেঘালয়ে এই স্যুপ খুবই জনপ্রিয়। নিছকই চিকেন-মাশরুম স্যুপ, তবে তার সুঘ্রাণ ও স্বাদে উত্তর-পূর্বের স্বাদ স্পষ্ট। কারণ মশলার ব্যবহারই যে আলাদা। হলুদ, আদা, তেজপাতা, গোলমরিচ ও কালো তিল— এই সব মশলার বাহারে সাধারণ খাবারকেই অতি উপাদেয় করে তুলতে জানেন শেফ জ়ুবান মাওফনিয়াং। খাসি উপজাতি গোষ্ঠীর ঘরোয়া খাবারকে বাঙালির রসনার সঙ্গে পরিচয় করাচ্ছেন দীর্ঘ সময় ধরে। কলকাতার অ্যাস্টর হোটেলে 'খাসি ফুড ফেস্টিভাল' শুরু হয়েছে। সেখানে যেন এক টুকরো মেঘালয়কেই তুলে এনেছেন শেফ।

মেঘালয়ের জনপ্রিয় কিছু রান্না।

মেঘালয়ের জনপ্রিয় কিছু রান্না। নিজস্ব চিত্র।

বাঙালিকে উত্তর-পূর্বের স্থানীয় খাবারের স্বাদ চাখাতে খুশি মনেই খুন্তি ধরেছেন শেফ জ়ুবান। মেঘালয় থেকে মাঝেমধ্যেই চলে আসেন কলকাতায়। মূলত খাসি উপজাতির স্থানীয় খাবারই রাঁধেন। আর তা পছন্দও করেন বাঙালিরা। বাঙালির মাছের ঝোল-ভাতের মতো খাসিদের পছন্দ খারাং নামক একটি পদ। স্মোকড ফিশের সঙ্গে ভাত। মাছ নানা সব্জি দিয়ে সাঁতলানো। বাটি ভর্তি ঝোলও থাকে। বাঙালির পাতলা মাছের ঝোলের সঙ্গে মিল অনেক।

খারাং।

খারাং। নিজস্ব চিত্র।

রোস্টেড পর্ক।

রোস্টেড পর্ক। নিজস্ব চিত্র।

মুরগির কষা তিল দিয়ে খেতে বেশি পছন্দ করেন খাসি উপজাতির মানুষেরা। কালো তিলে কষা মাংস সেখানকার জনপ্রিয় একটি পদ। জ়ুবান সেটিও রেঁধেছেন যত্ন করে। ভাজাভুজির তেমন বাহার থাকে না উত্তর-পূর্বের রান্নায়। বরং বেশির ভাগই সেদ্ধ বা মশলায় সাঁতলানো। কম আঁচে ধীরে সুস্থে রান্না করা। যাতে খাবারের পুষ্টিগুণ ও স্বাদ, দুটোই ধরা থাকে। স্থানীয় ভাষায় দোহজ়েম সাইয়ার বা চিকেন লিভার ফ্রাই থেকে পর্ক রোস্ট, দোখিলে পর্ক স্যালাড দেখলেই জিভে জল আসবে।

কালো তিলে রান্না চিকেন।

কালো তিলে রান্না চিকেন। নিজস্ব চিত্র।

খাসি সংস্কৃতির আরও একটি জনপ্রিয় পদ হল ‘কাওয়াই’। অনেকটা বাঙালির পান-সুপুরির মতোই। পানপাতায় সুপুরি মুড়ে তাতে নানা রকম মশলাও যোগ করা হয়। ভূরিভোজের পরে শেষ পাতে কাওয়াই থাকবেই।

পর্ক স্যালাড।

পর্ক স্যালাড। নিজস্ব চিত্র।

কাওয়াই।

কাওয়াই। নিজস্ব চিত্র।

এই কাওয়াই শুধু রসনাতৃপ্তি নয়, বরং খাসিদের সৌহার্দ্যের চিহ্নবাহী। বাড়িতে অতিথি আপ্যায়নের প্রথম ধাপই হলো কাওয়াই পরিবেশন করা। এটি সম্মান এবং বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। রাঁধুনি জানান, কাওয়াই মানুষে মানুষে ভালবাসার বাঁধন গড়ে। কাওয়াই ভাগ করে নিয়েই সামাজিক সমতার বার্তা দেওয়া হয়। খাসিদের কাছে খাওয়া মানে কেবল উদরপূর্তি নয়, মানুষে-মানুষে ভালবাসা বিতরণের উপায়ও। সকলে মিলেমিশে খাবার ভাগ করে খাওয়াই খাসি উপজাতি গোষ্ঠীর বৈশিষ্ট্য। সেই প্রথা আজও ধরে রেখেছেন সেখানকার মানুষজন। কলকাতাবাসীর মধ্যে সেই ভালবাসাই ছড়িয়ে দিতে এসেছেন শেফ জ়ুবান।

Food festival North East India
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy