ভারতেও পাওয়া সম্ভব এই সব কফি। ছবি: সংগৃহীত
কফি-বিলাসি সবাই যে একই ধরনের কফি খেতে পছন্দ করবেন, তা নয়। কেউ পছন্দ করেন গুঁড়ো ‘ইনস্ট্যান্ট কফি’। কেউ বা ‘ফিল্টার কফি’। আবার কেউ পছন্দ করেন দুধ সমেত। কেউ বা একেবারে দুধ চিনি ছাড়া। এই প্রকারভেদে বদলাতে থাকে কফির দাম। শুধু এই কারণেই নয়, উৎপত্তিগত কারণেও কমে বাড়ে কফির দাম। কিন্তু পৃথিবীর সবচেয়ে দামি কফি কোনগুলি? রইল সেই তালিকা।
হাচিয়েন্দা এল রোবলে: কলম্বিয়ার কফি। সারা বছর খুব কম পরিমাণে উৎপাদন হয় এই কফি। মাত্র ২২ কিলোগ্রাম কফি বীজ পাওয়া যায় ১ বছর চাষ করে। চাষের জন্য লাগে বিশেষ ধরনের জমি, বিশেষ ধরনের সার। এবং নিক্তিতে মাপা আবহাওয়া। একচুল এ দিক ও দিক হলেই একে বাঁচানো মুশকিল।
দাম: ভারতীয় অঙ্কে ১ কিলোগ্রাম প্রায় ১৫,০০০ টাকা।
ওসপিনা ডাইন্যাস্টি গ্রান কাফে: এটিও কলম্বিয়ার কফি। সে দেশের ৩ জন প্রেসিডেন্ট ওসপিনা নামক কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এটি কলম্বিয়ার সবচেয়ে বিখ্যাত কফি কোম্পানিগুলির একটি। এই কোম্পানির বিশেষ একটি কফি সবচেয়ে দামি কফির তালিকায় থাকবে। অ্যাপ্রিকট ফলে যেমন গন্ধ থাকে, তেমন গন্ধ হালকা মাত্রায় পাওয়া যায় এই কফি থেকে। ৭৫০০ ফুট উচ্চতায় আগ্নেয়গিরির ছাই মাখা জমিতে এর চাষ হয়।
দাম: ভারতীয় অঙ্কে ১ কিলোগ্রাম ২০,০০০ টাকারও বেশি।
হাচিয়েন্দা লা এসমেরাল্দা: সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫০০০ ফুট উচ্চতায় চাষ করা যায় এই কফির। কলম্বিয়ার এই বিশেষ কফিটি সারা পৃথিবী জুড়ে যতগুলি কফি-প্রতিযোগিতা হয়েছে, তার বেশির ভাগেই প্রথম পুরস্কার পেয়েছে। লেবুর গন্ধের মতো এক ধরনের হালকা ঝাঁঝ থাকে এই কফিতে। এর গন্ধ অন্য কফির থেকে একেবারেই আলাদা। দামের নিরিখেও অন্য কফির থেকে এগিয়ে থাকে এই কফি।
দাম: ভারতীয় অঙ্কে ১ কিলোগ্রাম ৫০,০০০ টাকারও বেশি।
কোপি লুয়াক: সবচেয়ে আলোচিত এবং সমালোচিত কফি। এর উৎপাদন প্রক্রিয়া শুনলে অনেকেই নাক সিঁটকাবেন। ইন্দোনেশিয়ার এই কফি বীজ পাম কিভেট নামক প্রাণীর খাদ্য। টোডি ক্যাট নামেও পরিচিত এই প্রাণীটি কফির বীজ খাওয়ার পর, তা তাদের পেটে কিছুটা হজম হয়, এবং পাচন রস এই বীজে ঢুকে পড়ে। তার পরে আধ হজম হওয়া বীজটি তাদের মল থেকে সংগ্রহ করে, সেটিকে রোস্ট করে বিক্রি করা হয়। তবে এই কফি উৎপাদন প্রক্রিয়ার জন্য টোডি ক্যাট-দের আটকে রেখে তাদের উপর অত্যাচার করা হয় বলে মত অনেকের। তাই এই কফি নিয়ে বিরোধিতা আছে বিভিন্ন মহলে।
দাম: ভারতীয় অঙ্কে ১ কিলোগ্রাম ৯০,০০০ টাকার চেয়েও বেশি।
ব্ল্যাক আইভরি: এখনও পর্যন্ত পৃথিবীর সবচেয়ে দামি কফি বীজ। কিন্তু উৎপাদন পদ্ধতির দিক থেকে কোপি লুয়াকের সঙ্গে এর বিশেষ কোনও পার্থক্য নেই। শুধু টোডি ক্যাটের জায়গায় হাতি। তাইল্যান্ডের এই বিশেষ কফিটির উৎপাদন অবশ্য একটু কঠিন। কারণ টোডি ক্যাট কফির বীজ গোটা খেয়ে নেয়। সেখানে হাতি চিবিয়ে খেয়ে অধিকাংশ বীজই গুঁড়ো করে ফেলে। খুব সামান্য পরিমাণেই বীজ উদ্ধার করা যায় তাদের মল থেকে। তবে এই কফির বিরুদ্ধে এমন কোনও অভিযোগ নেই যে, উৎপাদনের জন্য হাতিদের উপর অত্যাচার করা হয়।
দাম: ভারতীয় অঙ্কে ১ কিলোগ্রাম ২,০০,০০০ টাকারও বেশি।
এখন প্রশ্ন হল, এই ধরনের কফি কি ভারতে পাওয়া যায়? কোপি লুয়াক বা ব্ল্যাক আইভরির মতো কফি পাওয়া মুশকিল হলেও, অন্য দামি কফি অনলাইনে অর্ডার দিয়ে আনানো সম্ভব। তবে মূল দামের উপর শুল্ক জুড়ে দাম কোথায় পৌঁছবে, তা বলা কঠিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy