চুক্তি যতই পাকাপোক্ত হোক তা ১১ মাসেই শেষ হয়ে যায়। প্রতীকী ছবি।
ভারতে ভাড়া বাড়ির চুক্তি শেষ হয়ে যায় ১১ মাসেই। সাধারণ ভাবে এ দেশে বাড়ির মালিক বা যিনি ভাড়া নিচ্ছেন তিনি এক বারে ভাড়া বাড়িতে থাকার মেয়াদ ১১ মাসের বেশি দীর্ঘায়িত করতে চান না। কিন্তু কেন? কখনও ভেবে দেখেছেন কি?
ভাড়ার চুক্তি হল বাড়ির মালিক এবং ভাড়াটের মধ্যে হওয়া আইনি চুক্তিপত্র। যেখানে দু’পক্ষের কর্তব্য এবং অধিকার আগে থেকে বলে দেওয়া থাকে। লেখা থাকে ভাড়া বাড়িতে থাকার ক্ষেত্রে দু’পক্ষের পূর্ব নির্ধারিত সবরকম শর্তও। যা ভবিষ্যতে দু’পক্ষই পালন করবেন। কিন্তু সেই চুক্তি যতই পাকাপোক্ত হোক তা ১১ মাসেই শেষ হয়ে যায়। দরকারে বার বার পুনর্নবীকরণ করা হলেও চুক্তির মেয়াদ বাড়ে না। এর একমাত্র কারণ এ দেশের আইন, যা বাড়ির মালিকের থেকে ভাড়াটের প্রতি বেশি সহৃদয়।
সেই আইনের প্যাঁচ এতটাই জটিল যে প্রয়োজনে বাড়ির মালিক বাড়ি ফাঁকা করাতে চাইলেও সেই দাবি আইনি পথে সম্পূর্ণ হতে দীর্ঘদিন সময় লেগে যায়। আর সেই সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত ভাড়াটে ওই বাড়ি ব্যবহার করে যেতে পারেন। ফলে দরকারে নিজের বাড়িই সুবিধা মতো ব্যবহার করতে পারবেন না বাড়িক মালিক।
দ্বিতীয়ত, এক সংবাদ সংস্থা প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, যদি বাড়ি ভাড়া দেওয়ার মেয়াদ এক বছরের বেশি হয় তবে তা ভারতীয় দণ্ডবিধির রেজিস্ট্রেশন আইনের (১৯০৮) ১৭ নম্বর ধারায় নথিভুক্ত করতে হবে। কিন্তু এক বছরের কম মেয়াদের বাড়ি ভাড়ার জন্য রেজিস্ট্রি করাতে হয় না। ফলে আইনি জটিলতার সমস্যা এড়ানো যায়।
রেজিস্ট্রেশন না থাকলে বাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত সরকারি রাজস্ব (স্ট্যাম্প ডিউটি) দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। রেজিস্ট্রেশন করানো হলে ভাড়াটে কতদিন ভাড়া নিয়ে রয়েছেন এবং কত ভাড়া দিচ্ছেন তার ভিত্তিতে এই রাজস্ব দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রি না করালে বাড়ির মালিক এবং ভাড়াটে দু’পক্ষই একটা বড় অঙ্কের টাকা খরচের হাত থেকে বেঁচে যান। সেটাও এই ১১ মাসের চুক্তির অন্যতম কারণ।
অর্থাৎ ১১ মাসের চুক্তিতে দু’পক্ষই যেহেতু সুবিধা পান, সে জন্য দীর্ঘদিন ধরে এ দেশে এই নিয়মই চলে আসছে। যা পারষ্পরিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে মেনে নিয়েছেন বাড়ির মালিক এবং ভাড়াটে উভয় পক্ষই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy