Advertisement
E-Paper

শ্মশানকালী কি সত্যিই ভয়ঙ্করী? কলকাতার শ্মশানে কেমন জাগেন শ্যামা?

শহুরে শ্মশানকালীর খোঁজে আসা। যে শ্মশানকালীর নাম শুনলেই অভ্যাসবশে একটা গা ছমছমে ব্যাপার মগজে টোকা দেয়, তন্ত্রমন্ত্র, শবসাধনা, পিশাচতত্ত্ব আরও হাজারো অলৌকিক, ভূতুড়ে ভাবনাচিন্তা ভিড় করে মাথায়, কংক্রিটে বোনা এই শহরে তা কেমন?

ঐন্দ্রিলা বসু সিংহ

শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২৫ ০৮:৫৬
‘মা’ কি ভয়ঙ্করী হতে পারেন!

‘মা’ কি ভয়ঙ্করী হতে পারেন! ছবি : সংগৃহীত।

অটো একটু আগেই নামিয়ে দিল। সামনে গঙ্গার ঘাট। তার পাশ দিয়ে বাঁ দিকে মিনিট কয়েক হাঁটলেই ডান হাতে অর্থাৎ গঙ্গার তীরে নিমতলা মহাশ্মশান। প্রথমে কাঠের চুল্লি তার পরে বিদ্যুতের। আধো অন্ধকার রাস্তায় মূলত দোকানপাটগুলোই আলো ছড়াচ্ছে। কালীপুজোর বাজারে কোথাও মিনিয়েচার ল্যাম্পের পসরা, কোথাও শ্মশানযাত্রীদের জন্য চা-বিস্কুট-পাঁপড় ইত্যাদি। শ্মশানকালীর পুজোটা কোথায় হয়, জানতে চাওয়ায় কাঠের চুল্লির গেট দেখিয়ে দিলেন একজন।

তত ক্ষণে অন্ধকার নেমেছে। ঘড়ির কাঁটা ৭টা ছুঁইছুঁই। শ্মশান ব্যস্ত। দু’পা এগিয়ে ভিতরে গেলে দেখা যাচ্ছে, গনগনিয়ে সার দিয়ে জ্বলছে চিতার আগুন। তার আগে শববাহীদের জটলা। বসার ব্যবস্থা। মন্দির তারও একটু আগে। গেট দিয়ে ঢুকতেই বাঁ হাতে পড়ে। দেহ পঞ্চভূতে বিলীন হওয়ার আগে মায়ের থানের পাশ দিয়েই এগোতে হয়। তবে সেই মন্দির এক নজরে দেখলে কেমন যেন লাগে!

জায়গাটা একটু ঘুপচি মতো। চাপ চাপ অন্ধকার জমে আছে এ দিক-ও দিক। ছোট্ট ঘর। অনুজ্জ্বল সাদা বাতির আলোয় চোখে পড়ছে ঝুল পড়া কোলাপসেবল গেট। প্রায় রং বদলে যাওয়া মেঝে। দেওয়ালে ঝুলন্ত টেবিলফ্যানের রং বদলে কালো হয়ে গিয়েছে। মেঝেতে পড়ে কয়েক দিনের ধুপের ছাই, শুকনো ফুলের পাপড়ি, ধুপকাঠি্র অবশেষ। ব্যবহার হয়ে কালো হয়ে যাওয়া অনেকগুলো ধুনুচি উল্টেপাল্টে পড়ে বেদীর এক পাশে। প্রদীপের তেল গড়িয়ে অদ্ভুত সব নকশা তৈরি হয়েছে বেদীর গায়ে। তার উপরেই শ্মশানবাসিনীর পূর্ণদৈর্ঘ্যের কাঠের ফ্রেমে বাঁধানো ছবি। পাশাপাশি দু’টি। তাতে শুকিয়ে খয়েরি হয়ে যাওয়া ফুলের মালার উপরেই চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে টাটকা ফুলের মালা। পিছনে ধুলো-ধূসর দেওয়ালে গোটা গোটা হরফে লেখা শান্তি প্রাপ্তির মন্ত্র!

নিমতলা শ্মশানকালীর মন্দির। (মাঝে) মেঝেতে পড়ে কয়েক দিনের ধুপের ছাই, শুকনো ফুলের পাপড়ি, উপরে শ্মশানকালীর ফ্রেমে বাঁধানো ছবি। (ডান দিকে) হাড়িকাঠ।

নিমতলা শ্মশানকালীর মন্দির। (মাঝে) মেঝেতে পড়ে কয়েক দিনের ধুপের ছাই, শুকনো ফুলের পাপড়ি, উপরে শ্মশানকালীর ফ্রেমে বাঁধানো ছবি। (ডান দিকে) হাড়িকাঠ। — নিজস্ব চিত্র।

শহুরে শ্মশানকালীর খোঁজে আসা। যে শ্মশানকালীর নাম শুনলেই অভ্যাসবশে একটা গা ছমছমে ব্যাপার মগজে টোকা দেয়, তন্ত্রমন্ত্র, শবসাধনা, পিশাচতত্ত্ব আরও হাজারো অলৌকিক, ভূতুড়ে ভাবনাচিন্তা ভিড় করে মাথায়, কংক্রিটে বোনা এই শহরে তা কেমন? শ্মশানকালী এখানে কতটা ভয়ঙ্করী? উত্তর খুঁজতে শহরের তিনটি শ্মশান বেছে নিয়ে বেরিয়ে পড়া। দক্ষিণের প্রান্তে সিরিটি, কিছুটা এগিয়ে কালীঘাটের কাছে কেওড়াতলা আর উত্তরে নিমতলা। অফিস মধ্য কলকাতায় হওয়ায় উত্তরেরটিই শেষ ঠিকানা ছিল। ফলে দু’টি শ্মশান ঘুরে সেখানে পৌঁছতে পৌঁছতে সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হয় হয়। মনে হচ্ছিল, তাতে এক দিকে ভালই হয়েছে। কারণ, অন্ধকার ছাড়া কিসের গা ছমছমে ভাব! মন্দিরের হাল দেখে সে ভাব উধাও হওয়ার জোগাড়।

মন্দিরের ধুলোমাখা মেঝেতে বসেছিলেন একজন। ভবঘুরে হাবভাব। প্রশ্ন করতে হল তাঁকেই— পুজো কারা করেন এখানে, তাঁদের কেউ কি আসবেন? জানা গেল, নিত্যপুজো হয় না। তবে ঠাকুরের কাছে রোজই ফুলমালা পড়ে। ধূপ-ধুনুচি জ্বলে। কেউ না কেউ সন্ধ্যায় বাতি জ্বেলে দিয়ে যায়। কালীপুজোয় ঠাকুর এলে তখন জমজমাট পুজো হয়। বলিও হয়। বলে দেখিয়ে দিলেন হাড়িকাঠ। অন্ধকারের জন্য আগে সেটি দেখা যায়নি। মন্দিরের ঠিক উল্টো দিকেই। চুল্লির সিঁড়ির নীচে মাটিতে পোঁতা। টকটকে লাল রঙের। সেই ব্যক্তি বললেন, ‘‘৩-৪টে পাঁঠা বলি হয়। লোকজন মানত করে।’’

—বলি কারা দেয়?

যারা পুজো করে, তারাই।

—পুজো কারা করে?

 ‘মা’ হাসছেন। স্মিত হাসি নয়। মুখ খোলা। বেশ জোরে হাসলে যেমন মুখ খুলে যায়। স্পষ্ট দেখা যায় দাঁত, জিভ। এ প্রতিমারও তেমন।

‘মা’ হাসছেন। স্মিত হাসি নয়। মুখ খোলা। বেশ জোরে হাসলে যেমন মুখ খুলে যায়। স্পষ্ট দেখা যায় দাঁত, জিভ। এ প্রতিমারও তেমন। — নিজস্ব চিত্র।

প্রশ্নটা শুনে খানিক এ দিক-ও দিক তাকিয়ে ইশারায় বসতে বললেন সিঁড়িতে। তার পরে একটি লোককে হাত নেড়ে কাউকে ডেকে দিতে বললেন। হাড়িকাঠ আর মন্দিরের মাঝামাঝি তিন ধাপ পাথরের সিঁড়ি প্রায় অন্ধকারে ডুবে। সেখানে ওই ভবঘুরের পাশে বসে ফুলমালার আবরণের ফাঁক দিয়ে শ্মশানকালীর মুখ লক্ষ করতে করতে দেখা গেল ‘মা’ হাসছেন। স্মিত হাসি নয়। মুখ খোলা। বেশ জোরে হাসলে যেমন মুখ খুলে যায়। স্পষ্ট দেখা যায় দাঁত, জিভ। এ প্রতিমারও তেমন। কালীর অন্য মূর্তির মতো জিভ থুতনি পেরিয়ে নামেনি। দু’ঠোঁটের মধ্যেই সীমিত থেকেছে। এখানে একটা মিল বলা দরকার।

ইতিমধ্যেই দুই শ্মশানকালীর দর্শন হয়েছে। সিরিটি শ্মশান এবং কেওড়াতলা মহাশ্মশান। সেখানেও দেবীর জিভ দৃশ্যমান নয়। সিরিটির শ্মশানকালী মুখ বন্ধ করে মৃদু হাসছেন। কেওড়াতলার দেবীও তাই। তাঁদের মূর্তি দেখে মনেই হয় না মা রণরঙ্গিনী রূপ ধরেছেন। বরং বেশ শান্তশিষ্টই। হাতে অস্ত্র নেই। এমন কেন? কেওড়াতলার শ্মশানকালী পুজো কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট অলক চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘মা এখানে শান্তিরূপে পূজিত হন। কেওড়াতলার শ্মশানকালীর বয়স ১৫০ বছর হল। প্রথম দিন থেকেই তিনি শান্ত এবং স্নিগ্ধ। তাঁর মধ্যে কোনও উগ্রভাব নেই। মা এখানে কল্যাণময়ী।’’

কেওড়াতলা মহাশ্মশানে। এই প্রতিমাও দ্বিভূজা।  জিভ নেই। দেবী শান্তি রূপে পূজিতা হন এখানে।

কেওড়াতলা মহাশ্মশানে। এই প্রতিমাও দ্বিভূজা। জিভ নেই। দেবী শান্তি রূপে পূজিতা হন এখানে। — নিজস্ব চিত্র।

জিভ না-থাকার তত্ত্ব আরও স্পষ্ট ভাবে জানা যাচ্ছে কেওড়াতলার শ্মশানকালী পুজোর প্রধান পুরোহিত অরুণ ঠাকুরের কথা থেকে। তিনি জানাচ্ছেন, কালী শ্মশানে এসেছিলেন অসুরকুল নিধনের পরে। বিশ্রাম নিতে। পুরাণে বলা আছে, শ্মশানেই মৃতের মাংস খেয়ে, সুরা পান করে জিরিয়ে নিচ্ছিলেন তিনি। সেই সময়ে জীবকুল এসেছিল দেবীর আশীর্বাদ চাইতে। অসুর বধের পরে বিশ্রামরত দেবীর মাতৃরূপ তাই সেই সময়ে ছিল শান্ত এবং স্নিগ্ধ। খাচ্ছিলেন বলে জিভও বাইরে বেরিয়ে ছিল না। প্রয়োজন ছিল না বলে ছিল না অতিরিক্ত হাত, হাতে ছিল না অস্ত্রও। দেবী তাই এখানে চতুর্ভুজা নন, দ্বিভুজা। তাঁর হাতে শুধুই মাংস এবং কারণবারির পাত্র। রুদ্ররূপ নয়, কল্যাণময়ী রূপ!

তা হলে শ্মশানকালী নিয়ে এই যে নানা ভয়ের তত্ত্ব, প্রেত-পিশাচের গল্প, সবটাই ভুল! শ্মশানকালী উগ্র নন! সিরিটির শ্মশানের কালীপুজোর গল্প কিন্তু পুরোপুরি তা বলছে না।

সিরিটি আদিগঙ্গার ধারে কলকাতার একমাত্র শ্মশান। সেখানে শ্মশানকালী ছাড়াও রয়েছে আরও দুই দেবীর মন্দির। ছিন্নমস্তা এবং আনন্দময়ী কালী। শ্মশানকালী না হোন এঁরাও শ্মশানেরই কালী। কালীপুজোর দিন তাঁদের পুজো হয় শ্মশানে শব আসার পরে। কারণ, শ্মশানের পুজো শব ছাড়া সম্পন্ন হয় না। আনন্দময়ী কালী পুজোও দেড়শো বছর পার করল। পুজোর দেখাশোনা করে যে পরিবার, তার মাথায় রয়েছেন ‘গুরুমা’ গায়ত্রী চক্রবর্তী। বয়স ৭৫ পেরিয়েছে। তাঁর কাছ থেকেই জানা গেল সিরিটি শ্মশানে পূজিতা প্রাচীন কালীর গল্প।

সিরিটির শ্মশানকালী। জিভ দৃশ্যমান নয় এই প্রতিমারও।

সিরিটির শ্মশানকালী। জিভ দৃশ্যমান নয় এই প্রতিমারও। — নিজস্ব চিত্র।

গায়ত্রী কিছু দিন আগে পর্যন্ত থাকতেন আদিগঙ্গার পাড়ে শ্মশানের লাগোয়া একটি একতলা বাড়িতে। তবে সরকার সিরিটি শ্মশান সংস্কারের কাজ শুরু করার পরে সেই বাড়ির পোড়ো পোড়ো দশা। মায়ের নিরাপত্তার কথা ভেবে ছেলেমেয়েরাই তাঁকে নিয়ে গিয়েছেন মিনিট পনরো দূরত্বে মুচিপাড়ার এক ফ্ল্যাটে। সেই ফ্ল্যাটে বসেই গায়ত্রী শোনালেন সিরিটি শ্মশানের আনন্দময়ী কালীর অলৌকিক কাহিনি। যে কালীর মূর্তি কাশী থেকে কিনে এনেছিলেন তাঁর জ্যাঠাশ্বশুরের বাবা শিবরাম সরস্বতী। গায়ত্রীর কথায়, ‘‘তিনি ছিলন তন্ত্রসাধক। আদিগঙ্গার পাড়ে শ্মশানে বসে সাধনা করতেন। স্বপ্নাদেশে দেবীমূর্তির সন্ধান পান। দেবী বলে দিয়েছিলেন, কাশীর কোন জায়গায় তিনি আছেন। নির্দেশ দিয়েছিলেন, সেখান থেকে দরদাম না করে কিনে আনতে। অদ্ভূত ভাবে ঠিক সেই ঠিকানাতে গিয়েই দেবীকে খুঁজে পাওয়া যায়।’’ দেড়শো বছর আগে ১০১ টাকা দিয়ে বারাণসী থেকে ওই মূর্তি কিনে এনে পুজো শুরু করেন শিবরাম। সেই থেকে ওই দেবীমূর্তিরই পুজো হচ্ছে সিরিটি শ্মশান লাগোয়া মন্দিরে।

সিরিটির আনন্দময়ী কালী পঞ্চমুণ্ডীর আসনের উপর অধিষ্ঠিতা। তাঁর পায়ের কাছে রাখা তিনটি নরকরোটি। গায়ত্রী দেবীর জা মঞ্জু চক্রবর্তী এখনও শ্মশানের পাশের বাড়িটিতেই থাকেন। ৮৪ বছরের সেই বৃদ্ধা নিজে হাতে তালা খুলে দেখালেন সেই মন্দির, করোটি আর তাদের ‘জাগ্রত করা’র জন্য রাখা শবের হাড়। বললেন, ‘‘এঁদের জাগানো হয় কালীপুজোর রাতে। ভোগ দেওয়া হয় বটুক আর ভৈরবকে (যা আদতে একটি কালো কুকুর এবং শেয়াল)। ওঁরা ঠিক এসে খেয়ে যান।’’ পুরাণ মতে এঁরা কালীর দু’পাশে থাকেন। মঞ্জুদেবী বলছেন, ‘‘প্রতি বছর পুজোয় হোম শুরুর সময় শেয়াল ডাকে। শ্মশানে শব না এলে পুজো শুরু করা যায় না। প্রতি বছর যথা সময়ে শবও আসে।’’ এই দেবীও আমিষাশী, কারণবারি তাঁর পুজোতেও লাগে। তবে বলি আর হয় না। গায়ত্রী দেবী বলছেন, ‘‘আমিই বন্ধ করে দিয়েছি। মা আমাদের আনন্দময়ী। তাঁর মুখ দেখলেই বুঝবেন, কোনও উগ্রভাব নেই। মা সবার কল্যাণ চান। তাই বলি আর হয় না।’’ অর্থাৎ হাতে খাঁড়া থাকলেও সিরিটি শ্মশানের কালীরও গল্প শেষ পর্যন্ত সেই একই।

সিরিটির আনন্দময়ী কালী। বাঁ দিকে, মূর্তির নীচে তিনটি নরকরোটি। ডান দিকে, কালীপুজোর দিন সালঙ্কারা প্রতিমা।

সিরিটির আনন্দময়ী কালী। বাঁ দিকে, মূর্তির নীচে তিনটি নরকরোটি। ডান দিকে, কালীপুজোর দিন সালঙ্কারা প্রতিমা। — নিজস্ব চিত্র।

আসলে শ্মশানকালী শ্মশানে মৃতদের মাঝে পূজিত হন মাত্র। তাঁর সঙ্গে বীভৎসতার কোনও সম্পর্ক নেই। আর থাকবেই বা কেন! শ্মশান তো বীভৎসতার জায়গা নয়। বৈরাগ্যের জায়গা। জানাচ্ছেন ‘কালীকথা’ গ্রন্থের লেখক তমোঘ্ন নস্কর। তাঁর বইয়ে তিনি লিখছেন, ‘‘শ্মশান হল বৈরাগ্যস্থল। সেখানে মানুষের লোভ-লালসা, কামনা-বাসনা, পঞ্চ জ্ঞানেন্দ্রিয়, কর্মেন্দ্রিয়, সব পুড়ে ছাই হয়ে যায়... সারা জীবন যত্ন করে রাখা শরীরের কাঠামোটিও ভেঙে পড়ে অন্তিম কালে। ... পরিণত হয় ছাইভস্মে। ধনী-দরিদ্র-সু্ন্দর-অসুন্দর সবারই ছাই এক রকম। তাই ওই চরম বৈরাগ্যস্থলে অবস্থান করছেন শ্মশানকালী। জীবের আসক্তি তিনি পান করছেন পাত্রে। পরিবর্তে অনন্ত-অখণ্ড বৈরাগ্য দান করছেন।’’

শ্মশানকালী বা কালী নামের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা ভয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কালী বিষয় চর্চাকরী হরিপদ ভৌমিকও। তিনি বলছেন, ‘‘কালী বা শ্মশানকালী ভয়ঙ্কর কেন হবেন? তন্ত্রমত মানলে কালী তো আদপে কোনও প্রতিমাই নন। তাঁর কোনও রূপ নেই। কালী হলেন যন্ত্র। একটি ত্রিভূজাকৃতি চিত্ররূপ। কালীঘাটে যে কালীর মূর্তি দেখেন, সেই তিনিও আসলে একটি ত্রিভূজাকৃতি পাথর। তাতেই পরে রূপদান করা হয়েছে।’’ তন্ত্রবিশ্বাসীরা ওই ত্রিভূজেরই পুজো করে বলে জানাচ্ছেন হরিপদবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘ত্রিভূজের তিনটি বিন্দুর একটি শিব বিন্দু, একটি রজ বা শক্তিবিন্দু আর তৃতীয় বিন্দুটি একটি ছোলার মতো। ছোলা ভাঙলে যেমন দু’ভাগ হয়ে যায় তেমনি ওই বিন্দুতে শিব এবং শক্তি সাম্যরসে যুগলে বিরাজ করেন। সেখানে ভয়ের জায়গা কোথায়!’’

তবে তার থেকেও বড় কথা অন্যত্র। কালীকে মাতৃরূপে পুজো করেন ভক্তেরা। শ্মশানবাসিনী কালীকে মা বলেই ডাকা হয়। কালীতত্ত্ব চর্চাকারীদের প্রশ্ন— ‘‘মা ভয়ঙ্করী কেন হবেন? এ বিশ্বের কোন জীবজগতে মায়েরা সন্তানকে ভয় দেখান?’’

Smasana Kali Kali Idol Goddess Kali Kali Puja Keoratala Burning Ghat Nimtala Crematory Sirity Shamsan Ghat Diwali 2025
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy