Advertisement
E-Paper

WFH: ‘আর কখনও ব্রা পরতে চাই না’, ঘর সামলেও বাড়ি থেকেই কাজ পছন্দ মেয়েদের

অতিমারিতে বেশির ভাগ মেয়েরা অন্তর্বাস পরা ছেড়ে দিয়েছেন। এই পোশাকের সঙ্গে মেয়েদের ‘লাভ-হেট’ সম্পর্কে আড়ি পাতল ‘আনন্দবাজার অনলাইন’।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২১ ১০:৩৪
Share
Save

‘‘তোদের কবে থেকে অফিস শুরু হচ্ছে?’’ ‘‘আর বলিস না, সামনের সপ্তাহ থেকে তিন দিন করে যেতে হবে। আবার ব্রা পরতে হবে ভেবেই বিরক্ত লাগছে!’’ এই কথোপকথন মধ্য তিরিশের একদল বান্ধবীদের মধ্যে। তাঁরা প্রত্যেকেই তাঁদের অফিসের কাজ নিয়ে কথা বলছেন। বাড়ি থেকে কাজ করতে গিয়ে সকলেরই যে কাজের সময়টা অনেকটা বেড়ে গিয়েছে, সেটাই আলোচনার মুখ্য। তার উপর সংসারের কাজ সামলানো, শ্বশুর-শাশুড়ি-বাচ্চার দায়িত্ব নিতে হচ্ছে জুম মিটিংয়ের ফাঁকে ফাঁকেই। সব মিলিয়ে মেয়েরা ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ নিয়ে বেশ নাজেহাল। কিন্তু বেশির ভাগই আর অফিস ফিরতে চান না। কেন? কারণ অন্তর্বাস পরার অভ্যাস তাঁরা হারিয়েছেন!

অতিমারিতে আমরা অনেক কিছুই হারিয়েছি। কিন্তু তার মধ্যে কিছু জিনিস হারানোর কোনও দুঃখ নেই আমাদের। মেয়েদের ক্ষেত্রে সেই তালিকার শীর্ষে রয়েছে অন্তর্বাস। লেস দেওয়া সুন্দর সেক্সি ব্রালেট কেনার কথা এখন মেয়েরা মোটেই ভাবেন না। তাঁরা তাঁদের ‘খোলামেলা’ জীবন বেশ উপভোগ করছেন। এবং গত দে়ড় বছরে রোজ সকালে স্নান করেই অন্তর্বাস পরে নেওয়ার অভ্যাস তাঁরা হারিয়ে ফেলেছেন। তাই হঠাৎ করে আন্ডারওয়্যার্ড ব্রায়ের গুতো খেতে কারুরই মন চাইছে না।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

মেয়েদের অন্তর্বাস পরা বেশ কষ্টকর একটি অভিজ্ঞতা। ৩৪ বছরের সৌমীর স্তনের মাপ ৩৬ ডি। পঞ্চম শ্রেণী থেকে অন্তর্বাস পরার অভ্যাস তাঁর। স্তন শক্ত করে সারাদিন ব্রা-বন্দি করে রেখে রেখে পিঠে ব্যথা হয়ে যায় তাঁর। তাই করোনাকালে একটি যন্ত্রণার হাত থেকে মুক্তি পেয়েছেন সৌমী। কিন্তু আবার অফিস যেতে হবে শুনেই আঁতকে উঠছেন তিনি।

সৌমীর মতো বহু মেয়ে রয়েছেন। সারা দিন চাপা অন্তর্বাস পরে থাকলে বুকের হাড়ে ক্ষতি হতে পারে, পিঠে ব্যথা হতে পারে এমনকি কিছু কিছু গবেষণা বলছে, স্তনে ক্যানসার পর্যন্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই অন্তর্বাসহীন হয়ে থাকতে অনেকেই পছন্দ করেন। যে কোনও মেয়েকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, দিনের কোন সময়টা সবচেয়ে আনন্দ পান? দশজনের মধ্যে আটজনের উত্তর, ‘‘যখন দিনের শেষে বাড়ি ফিরে ব্রা খুলতে পারি।’’ তাঁরা অতিমারিতে শুধু জুম মিটিংয়ের সময়েই অন্তর্বাস পরার অভ্যাস তৈরি করে ফেলেছেন। বাকি সময়টা বাড়িতে কাটে বিনা অন্তর্বাসেই। যাঁদের চেহারা ততটা ভারী নয়, তাঁরা অনেকে অন্তর্বাস ছাড়াই টুকটাক বেরিয়েও পড়েন। ২৬ বছরের স্বস্তিকা এ বিষয়ে বললেন, ‘‘বাড়িতে সারা দিন ঢিলেঢালা টি-শার্ট পরে থাকি। চট করে দুধ-বিস্কুট আনতে হলে উল্টো দিকের দোকানে এই পোশাকেই চলে যাই। কে আবার এইটুকুর জন্য ব্রা পরবে? আমার চেহারা খুব ভারী নয়। তাই বেশির ভাগ সময়ে বোঝাও যায় না ব্রা পরেছি কি না।’’

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বিদেশে অনেক জায়গায় মেয়েদের অবশ্য ভাবতে হয় না, ‘কিছু বোঝা যাচ্ছে কি না’। সংগীতশিল্পী রিয়ানা অনেক আগেই জানিয়ে ছিলেন, তিনি কোনও পোশাকের নীচে অন্তর্বাস পরেন না। সম্প্রতি ‘ক্রাউন’ নেট সিরিজ খ্যাত গিলিয়ান অ্যান্ডরসন তাঁর প্রায় ১১ লক্ষ ইনস্টাগ্রাম অনুগামীদের জানিয়ে দিয়েছেন তিনি আর কখনও ব্রা পরবেন না। ‘আই জাস্টা কান্ট এনিমোর। ইট্‌স জাস্ট টু ফা** আনকমফর্টেবিল,’ লিখেছিলেন তিনি। নিউ ইয়র্ক, প্যারিস, লন্ডন, লস অ্যাঞ্জেলেসের মতো বহু শহরে ‘ফ্রি নিপ্‌ল মুভমেন্ট’ আয়োজন হয়েছে। হাজার হাজার মেয়েরা তাতে অংশগ্রহণ করে অন্তর্বাসকে পুরুষতান্ত্রিক অস্ত্র হিসাবে ঘোষণা করেছেন। সেখানে অনেক মেয়েই অন্তর্বাস ছাড়া অফিস-শপিং মল-সিনেমা হল— সব জায়গাতেই ঘুরে বেড়ান। এই অভ্যাসকে এক ধরনের রাজনৈতিক পথ হিসাবেই বেছে নিয়েছেন তাঁরা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

৩৩ বছরের রাত্রিকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করায় তিনি হেসে গড়িয়ে পড়লেন, ‘‘পোশাকের মাধ্যমে নিজেদের মত তুলে ধরার রীতিকে সমর্থন করি। কিন্তু বিশ্বাস করুন, কোনও রকম রাজনৈতিক মত প্রকাশের জন্য ব্রা পরা ছেড়ে দিয়েছি তেমন নয়। আমার জাস্ট ভাল লাগে না, তাই পরি না। এত ভ্যাপস গরমে ওরকম অস্বস্তিকর পোশাক কোনও মেয়েই পরে থাকতে পছন্দ করে না।’’

Breast Cancer Work from home underwear
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy