দুপুর ১২টায় হাসপাতালের বহির্বিভাগে আসেননি চিকিৎসক।
ঠিক সময়ে চিকিৎসকেরা বহির্বিভাগে না আসায় সোমবার সকালে ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রায়গঞ্জ হাসপাতাল চত্বর। সকাল সাড়ে ১১টা থেকে এক ঘণ্টা হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে বিক্ষোভ দেখান ক্ষুব্ধ রোগী ও তাদের পরিজনরা। বেলা সাড়ে ১২ টা নাগাদ পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের হটিয়ে দিলে পরে হাসপাতাল সংলগ্ন রায়গঞ্জ-মালদহ রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। মিনিট ১৫ অবরোধ চলার পর সেখান থেকে তাদের সরায় পুলিশ। এর পর সুপারকে ঘেরাও করেন তারা। তবে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে দেড়টা নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
রোগী ও পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, এ দিন সকাল সাড়ে ৯টায় বহির্বিভাগ খুললেও বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত শিশুবিভাগ ও প্রসূতি বিভাগে কোনও চিকিৎসক ছিলেন না। দু’ঘণ্টা অপেক্ষার পরে চিকিৎসকের দেখা না পেয়ে ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙে। বিক্ষোভ শুরু করেন রোগী ও তাঁদের আত্মীয়রা। উত্তর দিনাজপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রাসবিহারী দত্ত জানান, কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে দুই চিকিৎসককে শো-কজ করার জন্য হাসপাতাল সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশ মেনেই, ছুটি না নিয়ে বহির্বিভাগে না আসা ও দেরি করে বহির্বিভাগে যাওয়ার অভিযোগে শিশুরোগ ও সাধারণ রোগ বিশেষজ্ঞ দুই চিকিৎসককে শোকজের চিঠি পাঠানো হয় বলে জানান হাসপাতালের সুপার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়।
মালদহ-রায়গঞ্জ রাজ্য সড়ক অবরোধ।
১৮ জুনও রায়গঞ্জ হাসপাতালের বহির্বিভাগ দুই ঘণ্টা দেরিতে খোলা ও চিকিৎসকদের একাংশের বিরুদ্ধে বহির্বিভাগে প্রায়ই দেরিতে হাজির হওয়ার অভিযোগে হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ দেখান রোগী ও আত্মীয়রা। সেই দিনও অবরোধ হয়েছিল রায়গঞ্জ-মালদহ রাজ্য সড়ক। বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন হাসপাতালের দুই সহকারী সুপার তুষাররঞ্জন দাস ও গৌতম দাস। রায়গঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত হাসপাতালে চিকিৎসকদের সঠিক সময় আসার অনুরোধ করেন। ফের একই অভিযোগ ওঠায় এ দিন কংগ্রেসের তরফে আন্দোলনে নামার হুমকি দেওয়া হয়। জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ বলেন, “হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশ মাঝেমধ্যেই বহির্বিভাগে সঠিক সময়ে না গিয়ে প্রাইভেট প্র্যাক্টিসে ব্যস্ত থাকেন। অবস্থায় পরিবর্তন না হলে আন্দোলন করা হবে।”
চিকিৎসকদের একাংশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান অমল আচার্য। তাঁর বক্তব্য, চিকিৎসকের একাংশ তিন দশকের অভ্যাস ভুলতে পারেননি। সতর্ক করা হবে তাঁদের।
ছবি: তরুণ দেবনাথ।
২৪ ঘণ্টায় ৭ শিশু মৃত পুরুলিয়ায়
নিজস্ব সংবাদদাতা • পুরুলিয়া
সদ্যোজাত শিশুর মৃত্যু হয়েই চলেছে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার মাঝরাত থেকে রবিবার মাঝরাত অবধি সাতটি শিশু মারা গিয়েছে। এদের মধ্যে মাত্র এক জনের ঠাঁই হয়েছিল নবজাত শিশুর পরিচর্যা কেন্দ্রে (এসএনসিইউ)। বাকিদের অবশ্য এই ওয়ার্ডে ভর্তি করানো সম্ভব হয়নি। সোমবার মৃত্যু হয়েছে আরও এক সদ্যোজাতের। হাসপাতালের সুপার নীলাঞ্জনা সেনের দাবি, “মৃত শিশুদের মধ্যে পাঁচ জনই ছিল কম ওজনের। আর দু’জন জন্মগত শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত ছিল। আমি চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছি। এই শিশুদের কোনও ভাবেই বাঁচানো যেত না।” সোমবার যে শিশুটি মারা গিয়েছে, তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে অবশ্য কিছু জানাতে পারেননি সুপার। তিনি বলেন, “এ নিয়ে আমি এখনও রিপোর্ট পাইনি।” এ দিকে নবজাতকদের পরিচর্যা কেন্দ্রে আরও চারটি শয্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। পুরুলিয়া জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মানবেন্দ্র ঘোষ বলেন, “এসএনসিইউ-এর উপরে প্রচণ্ড চাপ রয়েছে। চাহিদাও রয়েছে। আমরা শীঘ্রই এই কেন্দ্রে চারটি শয্যা বাড়াবো।” শনিবার ভোররাতে ওই হাসপাতালে একটি শিশুকন্যার মৃত্যু হয়েছিল। প্রাথমিক তদন্তে স্বাস্থ্য দফতরের ধারণা, ওই শিশুর শ্বাসনালীতে মায়ের দুধ আটকে যাওয়াতেই বিপত্তি হয়েছিল। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “এ বার থেকে ওয়ার্ডে যে মায়েরা থাকছেন, তাঁদের বলে দেওয়া হবে, কেমন ভাবে শিশুকে বুকে ধরে তাঁরা বুকের দুধ খাওয়াবেন। কয়েক দিন পরে সেই সংক্রান্ত ছবিও আমরা ওয়ার্ডে টাঙিয়ে দেব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy