ছবি: অনুসূয়া দাশগুপ্ত
সেই বার সোয়াই মাধোপুরে দুপুর থেকে পশ্চিমী ঝঞ্ঝার উৎপাতে ঝমঝমিয়ে নামল বৃষ্টি। মাঘ মাসে আষাঢ়কে হার মানানো বৃষ্টি! নাহ্ ,বাঘ দেখার কোনও আশাই নেই। হতাশ মুখে আমরা সাতজন ভিজতে ভিজতে ক্যান্টারে উঠলাম। বর্ষাতি তো দূরের কথা, ছাতাও নেই সবার কাছে। ভিজে জবজবে সিটে হোটেলের কম্বল গায়ে জড়িয়ে সব বসে আছে। ক্যান্টার চলছে ঝড়ের বেগে। ঠান্ডায়, বৃষ্টিতে কি কাপুঁনি আমাদের! ক্যামেরা মোটা তোয়ালেতে জড়িয়ে বসেছি। আশায় বাঁচে চাষা। যদি বৃষ্টি থামে!
কথায় বলে মাঘের শীত বাঘের গায়ে। তার ওপরে এমন মুষলধারে বৃষ্টি! বাঘ বাবাজি ঘাপটি মেরে বসে থাকবে কোথাও! বয়েই গেছে আমাদের দেখা দিতে। সবাই চুপচাপ ভিজে যাচ্ছি। ঘড়ির কাঁটায় প্রায় চারটে বাজল। পদ্ম লেকের ধারে ক্যান্টার পৌঁছল। বেলাশেষের বৃষ্টিতে লেকটা আধো অন্ধকারে রহস্যময় ধূসর চাদরে ঢাকা। শীতের বৃষ্টি গায়ে যেন কাঁটা ফোটাচ্ছে। আমরা মনে মনে ভাবছি “এবার ফেরার রাস্তা ধরো তো গাইড ভাইটি।”
হঠাৎ যেন একটু আলো আলো হয়ে এল। বৃষ্টিটাও ধরে গেল। পিছনের ক্যান্টার থেকে বাঘ বাঘ রব। আর তিনি মানে কিশোরী বাঘিনী ঋদ্ধি গুটি গুটি পায়ে হেঁটে এলেন সোজা আমাদের ক্যান্টারের পিছনে। এত কাছে বাঘ! আমার চশমার কাঁচ বৃষ্টির জলে ঝাপসা। কোনওমতে মুছে টুছে ক্যামেরা বাগাতেই দেখি ঋদ্ধি পাশের লম্বা ঘাসবনের মধ্যে ঢুকে উধাও। ডানদিকের জলা জমির ওদিকে আবার উদয় হলেন রাজকন্যে। বৃষ্টি তখনও পড়ছে টিপটিপ করে।
এই প্রতিবেদনটি ‘আষাঢ়ের গল্প’ কনটেস্ট থেকে সংগৃহীত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy