#মিটু আন্দোলনে সমর্থন ক্রমেই বাড়ছে। লম্বা হচ্ছে নির্যাতিতাদের পাশে দাঁড়ানোর তালিকা। উল্টো দিকে চাপ বাড়ছে অভিযুক্তদের উপর। এমনকি, রাজধানীর রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, যৌন হেনস্থার অভিযোগের ভিত্তিতে চাকরি খোয়াতে পারেন বিদেশ প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর। এই আবহেই কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণমন্ত্রী মেনকা গাঁধীর পর এ বার এই আন্দোলনকে সমর্থন করলেন কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। আকবর প্রসঙ্গেও স্মৃতি বৃহস্পতিবার বলেন, যাঁর বিষয়, তিনিই ভাল বলতে পারবেন। পাশাপাশি, একের পর এক মহিলা যে অভিযোগ জানাচ্ছেন, তাতে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন স্মৃতি। অন্য দিকে #মিটু বিতর্কে পাশে দাঁড়িয়েছে সঙ্ঘ পরিবারও।
এখনও পর্যন্ত সাত জন মহিলা সাংবাদিক যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন এম জে আকবরের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত শুধু মানেকা গাঁধী সরব হয়েছেন। তদন্তের দাবি তুলেছেন তিনি। বাকিরা কার্যত গা বাঁচিয়েই চলছেন। নির্দিষ্ট প্রশ্ন করলেও উত্তর দেননি বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। অবশেষে বৃহস্পতিবার মানেকা গাঁধীর মতোই নির্যাতিতাদের পাশে দাঁড়ালেন স্মৃতি ইরানি। বার্তা দিলেন বিদেশে থাকা অভিযুক্ত বিদেশ প্রতিমন্ত্রীকেও।
স্মৃতি এ দিন বলেন, ‘‘ঘটনার সঙ্গে যিনি যুক্ত, তিনিই ভাল বলতে পারবেন। সাংবাদিকরা যে তাঁদের সহকর্মী-বন্ধুদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন, সেটা প্রশংসনীয়। তবে আমি মনে করি, যিনি অভিযুক্ত, তাঁরই বিবৃতি দিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করা উচিত। আমি তো সেখানে উপস্থিত ছিলাম না।’’ রাজনৈতিক মহলের মত, কার্যত আকবরের বিরুদ্ধেই কড়া বার্তা দিলেন স্মৃতি। একইসঙ্গে স্মৃতি বলেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে বা পেশাগত জগতে এ রকম ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন, তাঁদের লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই। প্রকাশ্যে এসে #মিটু বিতর্কে যোগ দেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন স্মৃতি। আশ্বাস দিয়েছেন সুবিচারের।
আরও পড়ুন: #মিটু বিতর্কে এ বার অভিযোগ উঠল মালিঙ্গার বিরুদ্ধে
বৃহস্পতিবার এ নিয়ে মত প্রকাশ করেছে সঙ্ঘ পরিবারও। সংগঠনের জয়েন্ট জেনারেল সেক্রেটারি বা সহ সরকার্যবাহ দত্তাত্রেয় হোসাবলে একটি টুইট করে #মিটু আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন। ভারত, দক্ষিণ এবং মধ্য এশিয়ার পাবলিক পলিসি ডিরেক্টর আঁখি দাস ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। তাতে তিনি লেখেন, ‘‘যে সব মহিলা সাংবাদিক নিজেদের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেছেন, তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য নিজে নির্যাতিতা হওয়ার দরকার নেই। মহিলা হতে হবে এমনও নয়। শুধু ঠিক-ভুল বিচার করার মতো একটা সংবেদনশীল মন দরকার।’’ এই পোস্টটির স্ক্রিন শট নিয়ে বৃহস্পতিবার টুইটারে দত্তাত্রেয় লিখেছেন, ‘‘আমি এটাকে সমর্থন করি। আমি যেটা বলতে চেয়েছিলাম, উনি সেটাই বলেছেন।’’
আরও পড়ুন: মিটু বিতর্কের জের আমিরেও, সরলেন প্রযোজনা থেকে
আরএসএস-এ যথেষ্ট প্রভাবশালী এই দত্তাত্রেয়। সংগঠনে যে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। পাশাপাশি, সরকারের সঙ্গে বোঝাপড়ার কাজও মূলত এই দত্তাত্রেয়ই করে থাকেন। ফলে সঙ্ঘ পরিবারের এই মতামতে এম জে আকবরের উপরেও যথেষ্ট চাপ বাড়ল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।