Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
India-Pakistan Conflict

বোমাবর্ষণের পরও অক্ষত জইশের মাদ্রাসা! উপগ্রহের পাঠানো ছবি ঘিরে ধন্দ

বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ৪ মার্চ  নিজেদের একটি উপগ্রহকে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পাঠায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর প্ল্যানেট ল্যাবস আইএনসি সংস্থা।

উপগ্রহের পাঠানো এই ছবি নিয়েই বিতর্ক শুরু হয়েছে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

উপগ্রহের পাঠানো এই ছবি নিয়েই বিতর্ক শুরু হয়েছে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৯ ১৪:২৮
Share: Save:

পাকিস্তানে বায়ুসেনার অভিযান নিয়ে ফের প্রশ্নের মুখে মোদী সরকার। অভিযানে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিয়ে এ বার প্রশ্ন তুলছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমও। আর তার নেপথ্যে রয়েছে একটি বেসরকারি সংস্থার পাঠানো উপগ্রহের তোলা কিছু ছবি। তাতে ভারতীয় বায়ুসেনার হামলায় জইশ-ই-মহম্মদের প্রশিক্ষণ শিবিরে কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে দেখা গিয়েছে।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামাসিআরপি কনভয়ে হামলা চালায় জইশ। তার জবাবে ২৬ ফেব্রুয়ারি নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাকিস্তানে ঢোকে ভারতীয় বায়ুসেনা। পাক অধিকৃত কাশ্মীর, বালাকোট এবং চাকোটিতে বোমা ফেলে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ শিবির ধ্বংস করে দেওয়া হয়। পরে বায়ুসেনা এবং ভারতের বিদেশ সচিব বিজয় গোখেল তা নিশ্চিত করেন। উত্তর-পূর্ব পাকিস্তানের বালাকোটের জাবা গ্রামে জইশের ঘাঁটিতে বোমা ফেলা হয়েছে বলেজানান তাঁরা।

বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ৪ মার্চ নিজেদের একটি উপগ্রহকে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পাঠায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর প্ল্যানেট ল্যাবস আইএনসি সংস্থা। হাই রেজলিউশন যুক্ত ক্যামেরা বসানো ওই উপগ্রহ আকাশ থেকে মাটিতে থাকা ২৮ ইঞ্চি আয়তন বিশিষ্ট যে কোনও বস্তুর সুস্পষ্ট ছবি তুলতে সক্ষম।

ভারতের হাতে কী কী অস্ত্র রয়েছে জানেন?

আরও পড়ুন: ৮০ শতাংশ বোমাই লক্ষ্যে আঘাত করেছে, কেন্দ্রকে রিপোর্ট দিল বায়ু সেনা​

সেই উপগ্রহের পাঠানো বেশ কিছু ছবির নাগাল পেয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। সেগুলি পর্যবেক্ষণ করে তারা জানিয়েছে, ছবিতে কোনও ক্ষয়ক্ষতি ধরা পড়েনি। বালাকোটের জাবা গ্রামে জইশের জঙ্গিঘাঁটি দিব্য মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে। অক্ষত অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে জইশ চালিত মাদ্রাসা-সহ মোট ছ’টি বাড়ি। তবে শেষবার ওই এলাকায় কিছু তাঁবু দেখা গিয়েছিল। সেগুলির হদিশ নেই। হয় সেগুলি সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অথবা বায়ুসেনার অভিযানেই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। তবে ভারত সরকার যে বিপুল ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তুলে ধরছিল, তার কোনও প্রমাণ মেলেনি বলে তাদের দাবি।

আরও পড়ুন: বাবর যা করেছেন পাল্টানো যাবে না, বিবাদ মেটানোই লক্ষ্য, অযোধ্যা মামলায় বলল সুপ্রিম কোর্ট​

আরও পড়ুন: উত্তাপ কমাতে হ্যানয় থেকে দিল্লি, ইসলামাবাদে পম্পেওর তিনটি ফোন!​

যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলিতে এর আগে বোমার আঘাতে বাড়ির ছাদ ভেঙে পড়তে দেখা গিয়েছে। ফাটল দেখা দিয়েছে দেওয়ালে। কিন্তু বালাকোটে জইশ চালিত মাদ্রাসা এবং বাকি বাড়িগুলিতে সেরকম কোনও চিহ্ন দেখা যায়নি বলে দাবি রয়টার্সের। তাদের কথায়, বোমা যদি পড়ে থাকেও, তাহলে সেগুলি হয়ত তেমন শক্তিশালী ছিল না। তাই করোগেটেড টিন চাপিয়ে, রঙ করেই সামান্য ক্ষয়ক্ষতি চাপা দেওয়া গিয়েছে। বাড়ির দেওয়ালেও তেমন ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন চোখে পড়েনি জানিয়েছে। রয়টার্স জানিয়েছে, এ ব্যাপারে ভারতীয় বিদেশ এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হয়েছিল। প্রশ্ন পাঠানো হয়েছিল ইমেলেও। উপগ্রহের পাঠানো ছবি নিয়ে তাদের সাফাই চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনও জবাব মেলেনি।

ভারত সরকার যদিও মঙ্গলবারও নিজেদের দাবিতে অনড় থেকেছে। অভিযান নিয়ে প্রশ্ন তুলে আদতে বায়ুসেনার মনোবল ভেঙে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করে গতকাল বিরোধীদের একহাত নেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিডলবারি ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজে কর্মরত পূর্ব এশিয়ার অস্ত্রপ্রসার রোধ প্রকল্পের ডিরেক্টর জেফ্রি লুইস এবং জেমস মার্টিন সেন্টারের গবেষক ডেভ স্মারলার যুক্তি, ‘‘১২টি মিরাজ ২০০০ যুদ্ধবিমান থেকে ১০০০ কেজি বোমা ফেলার কথা জানা গিয়েছে দিল্লিসূত্রে তাতে একটা বাড়িও মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকার কথা নয়। কিন্তু উপগ্রহের পাঠানো ছবিতে অন্য দৃশ্য ধরা পড়েছে।’’ এ ব্যাপারে ভারত সরকারকে সবিস্তার তথ্য দিতেও আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।

(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE