ফাইল চিত্র।
কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন শিক্ষাবর্ষ জুলাইয়ের বদলে শুরু হোক সেপ্টেম্বরে। পরীক্ষা নিয়ে নেওয়া হোক জুলাইয়ের মধ্যে। এমনই সুপারিশ করেছে ইউজিসি-র সাত সদস্যের কমিটি। অনলাইন পঠনপাঠন খতিয়ে দেখতে ইউজিসি আরও একটি কমিটি তৈরি করেছিল। সেই কমিটির সুপারিশ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলি সম্ভব হলে অনলাইনেই পরীক্ষা নিতে পারে। না-হলে করোনা পরিস্থিতির অবসানে খাতায়-কলমে পরীক্ষা নিতে হবে।
ইউজিসি-র তরফে রাতে জানানো হয়েছে শীঘ্রই তাদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এবং সেই মতো বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোকে জানানো হবে।
এ ব্যাপারে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ইউজিসিকে চিঠি দেওয়ার পরে আমি কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে পরীক্ষা বাধ্যতামূলক না-করতে বলেছিলাম। সেটি উল্লেখ করা হয়েছে। চূড়ান্ত পরীক্ষা নেওয়ার কথা আমরা জানিয়েছিলাম। কিন্তু সব পরীক্ষা নিতে হলে খুবই অসুবিধা হবে।’’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত সিমেস্টারের পড়ুয়ারা বাদে অন্য সিমেস্টারের পড়ুয়ারা এক ধাপ এগিয়ে যাবে। এর ফলে দু’টি সিমেস্টারের পরীক্ষা একসঙ্গে হবে কি না, তা নিয়েও বিতর্ক দানা বাঁধে। শিক্ষক সংগঠনগুলির মতে, একসঙ্গে দু’টি সিমেস্টারের পরীক্ষা কখনোই বাস্তবসম্মত নয়। ইউজিসি নিযুক্ত কমিটিও চলতি সিমেস্টারের পরীক্ষা নিয়ে নেওয়ার কথা বলেছে।
কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে চূড়ান্ত গাইডলাইন তৈরি করে ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে পাঠাতে পারে। অবশ্য রাজ্য ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, শিক্ষা যুগ্ম তালিকাভুক্ত হওয়ায় কমিটির রিপোর্ট সব রাজ্যের কাছে পাঠাতে হবে। সকলের মতামত নিয়ে ইউজিসিকে অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার এবং পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
আরও পড়ুন: টেস্ট কিটের ত্রুটি নিয়ে প্রশ্ন
আরও পড়ুন: করোনা-যুদ্ধে পরিকল্পনাহীন কেন কেন্দ্র, প্রশ্ন কংগ্রেসের
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা নিয়ে রাজ্যের সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছিল, দুটি সিমেস্টারের পরীক্ষা এক সঙ্গে হলে পড়ুয়ারা খুবই চাপের মুখে পড়বেন। সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস সরকার শনিবার বলেন, ‘‘ইউজিসির সুপারিশের সঙ্গে আমাদের চিঠির বয়ানে পুরোপুরি মিল রয়েছে। পরীক্ষা নিতেই হবে।’’ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জুটা) দু’টি সিমেস্টারের পরীক্ষা এক সঙ্গে হলে সিবিসিএস পদ্ধতির উদ্দেশ্য ব্যর্থ হবে বলে জানিয়েছিল। জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘আমরা যে দাবি করেছিলাম ইউজিসি-র সুপারিশেও তাই রয়েছে। পরীক্ষা শেষ করে নতুন সিমেস্টার চালুর কথা বলা হয়েছে সেখানে।’’ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (কুটা)-র সভাপতি, পার্থিব বসু বলেন, ‘‘ইউজিসি-র পরামর্শে চলতি সিমেস্টারগুলির পরীক্ষা সম্পূর্ণ করেই পরের সিমেস্টারের ক্লাস শুরুর কথা বলা হয়েছে৷’’ তাঁর আশা, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই পরামর্শ অনুযায়ী বিভিন্ন বিভাগের সঙ্গে আরও আলোচনা করে সব দিক খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন৷ উচ্চশিক্ষা দফতরও পঠনপাঠন সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহনে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকারে হস্তক্ষেপ না-করে যথোচিত পরামর্শ দেবে। শিক্ষক নেতাদের মতে, অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়া ভারতবর্ষের নিরিখে সম্ভব নয়। কারণ, অনলাইন প্রযুক্তির সুযোগ অনেক ক্ষেত্রেই এখনও অধরা।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy