Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Electricity Bill Amendment Act

বিদ্যুৎ বিল প্রত্যাহার করুন: প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি মমতার

মুখ্যমন্ত্রীর সংশয়, দেশের সব মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই। ফলে তাঁদের টাকা সরাসরি অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব কতটা সফল হবে?

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২০ ০৪:৪২
Share: Save:

বিদ্যুৎ পরিষেবা সংবিধানের যৌথ তালিকার অন্তর্ভুক্ত। তা সত্ত্বেও রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনা ছাড়া দেশের বিদ্যুৎ আইনে কেন্দ্র যে বদল আনছে, তার বিরোধিতা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংশোধিত বিলটি প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন তিনি।

শুক্রবার ওই চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী জানান, প্রস্তাবিত বিদ্যুৎ বিলটি জনবিরোধী, কৃষক-বিরোধী, অসংগঠিত ক্ষেত্রের স্বার্থ বিরোধী। আধাশহর ও গ্রামীণ এলাকায় বসবাসকারী গ্রাহকদের জন্যও তা অমানবিক। মমতা লিখেছেন, আইন অনুযায়ী প্রথমে গ্রাহকদের মোটা টাকা বিদ্যুৎ বিল দিতে হবে। পরে ভর্তুকির টাকা তাঁরা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে (ডিটিবি) পেয়ে যাবেন। ফলে বহু গ্রাহক সময়ে বিল মেটাতে পারবেন না এবং তাঁদের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হতে পারে। প্রসঙ্গত, প্রস্তাবিত সংশোধনের বিরোধিতা করে এ মাসের প্রথমে দেশ জুড়ে কালা দিবস পালন করেছে বিদ্যুৎকর্মী এবং ইঞ্জিনিয়ারদের ১৪টি সংগঠনের যৌথ কমিটি। বিলের বিরোধিতা করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিও দেন বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী।

মুখ্যমন্ত্রীর সংশয়, দেশের সব মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই। ফলে তাঁদের টাকা সরাসরি অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব কতটা সফল হবে? সে কারণে বিদ্যুৎ শুল্ক নির্ধারণে যে নীতি (পারস্পরিক ভর্তুকি) অনুসরণ করা হয়, তা চালিয়ে যাওয়া উচিত। প্রস্তাবিত বিলে শুল্ক নির্ধারণের ক্ষমতা কেন্দ্রের গঠিত সংস্থাকে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এর ফলে রাজ্যের ক্ষমতা কেন্দ্রের হাতে চলে যাবে। বিদ্যুতের মাসুল কেন্দ্র যে এক তরফা ভাবে ঠিক করবে, তা মানা সম্ভব নয় বলেও মুখ্যমন্ত্রী চিঠিতে জানান।

আরও পড়ুন: মহাকালীর উৎসে ঘনাচ্ছে বিবাদ, খুব সতর্ক পা ফেলতে হবে ভারতকে

আরও পড়ুন: মৃতের অমর্যাদায় ক্ষুব্ধ সুপ্রিম কোর্ট, বাংলা-সহ ৫ রাজ্যকে নোটিস

বিদ্যুৎ পরিবহণ, সংবহণ বা ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত আইনি বিবাদ নিষ্পত্তির জন্য ইলেকট্রিসিটি কনট্র্যাক্ট এনফোর্সমেন্ট অথরিটি (ইসিইএ) নামে একটি সংস্থা গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে কেন্দ্র। মুখ্যমন্ত্রী এর বিরোধিতা করে লিখেছেন, বিবাদ মেটাতে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশন এবং রাজ্য বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশন নামে দু’টি সংস্থা রয়েছে। আরও একটি আধা-আইনি সংস্থা গঠনের প্রয়োজন নেই। এ ছাড়া, কেন্দ্রের প্রস্তাবিত নতুন সংস্থায় রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব থাকবে না। তা খুবই ‘আশ্চর্যের’। মুখ্যমন্ত্রী লিখছেন, ইসিইএ গঠনের মাধ্যমে কেন্দ্র রাজ্যের সমস্ত ক্ষমতা খর্ব করতে চায়, যা কেন্দ্রের ‘অসৎ উদ্দেশ্যের’ ইঙ্গিত। এমন ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ নয়।

মুখ্যমন্ত্রী আরও লিখেছেন, প্রস্তাবিত বিলে একটি কায়েমি গোষ্ঠীকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কারণ, বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার হাতে সাব-লাইসেন্স বা ফ্র্যাঞ্চাইজি দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে। তার জন্য রাজ্য বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের কাছে লাইসেন্স নেওয়ার ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হচ্ছে ওই সংস্থাগুলিকে। ফলে এই পুরো ব্যবস্থায় রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ থাকবে না।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যের বণ্টন সংস্থাগুলির জন্য কিছুটা অপ্রচলিত বিদ্যুৎ কেনা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। এর ফলে আর্থিক ভাবে দুর্বল বণ্টন সংস্থাগুলির উপর চাপ বাড়বে। ন্যাশনাল সিলেকশন কমিটির মাধ্যমেও রাজ্যের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ কায়েমের ব্যবস্থা হচ্ছে বলে তাঁর অভিযোগ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE