Advertisement
E-Paper

শরীরে বাড়ছে ভেজাল-বিষ, ভাল খান সুস্থ থাকুন

ব্যস্ত জীবনে প্রকৃতির কাছ থেকে সরে যাচ্ছি না তো? যার জেরে শরীরে বাড়ছে ভেজাল-বিষ! তাই আসুন না, এ বার বিশুদ্ধতার কাছে ফেরার চেষ্টা করি। লিখছেন সোহিনী দাসব্যস্ত জীবনে প্রকৃতির কাছ থেকে সরে যাচ্ছি না তো? যার জেরে শরীরে বাড়ছে ভেজাল-বিষ! তাই আসুন না, এ বার বিশুদ্ধতার কাছে ফেরার চেষ্টা করি। লিখছেন সোহিনী দাস

শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৩১

দেখতে দেখতে পুজো শেষ। হাঁটি হাঁটি পায়ে ফিরে গিয়েছে কোজাগরীও। হাতে বাকি মাত্র দিওয়ালি আর ভাইফোঁটা। কিন্তু এর মধ্যেই পুজোয় বাঁচিয়ে রাখা লং ড্রেসটা একটু আঁটোসাঁটো! সাধ করে কেনা টি-শার্টটার উপর থেকে লুকোনো যাচ্ছে না নির্লজ্জ ভুঁড়িটাকে। ব্যস অমনি কপালে চিন্তার ভাঁজ।

হবে না! গোটা মাস জুড়েই নানাবিধ অনিয়মে বারোটা বেজেছে ডায়েটের। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। বেড়েছে মেদ। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ক্লান্তিও। এ দিকে ঠাকুর যেতে না যেতেই খুলে গিয়েছে স্কুল, কলেজ, অফিস-পত্তর।

আরও পড়ুন: তৈমুরকে কার মতো দেখতে? কী বললেন সইফ?

অনেকে আবার ভাবছেন, পুজো তো শেষ! তবে তো সাঙ্গ সাজাগোজার পালাও! কিন্তু এটাই তো সময় নিজেকে আরও বেশি করে সাজিয়ে গুছিয়ে তোলার। যত্নে রাখার। দিন কয়েকের ভূরিভোজের পাপস্খালনে অনেকে আবার কঠিন সাধনায় বসে পড়েছেন। আসুন, এ বার বরং অন্য রকম কিছু চেষ্টা করি।

আমাদের মা-ঠাকুমাদের অমন সুস্থ, উজ্জ্বল থাকার রহস্যটা কী ছিল জানেন? প্রকৃতির কাছাকাছি থাকা। কিন্তু বর্তমানের এই ধুলো-ভেজালে ভরা দুনিয়ায় তার সুযোগ কোথায়!

উপায় অবশ্য আগেই বাতলেছেন বিশেষজ্ঞরা। আসলে এখনকার চটজলদির যুগে আমরা ‘রেডিমেড’ শব্দটায় বিশ্বাসী হয়ে পড়েছি বড় বেশি। হাতের কাছে হাজারটা মল, শপিং কমপ্লেক্স, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, আমাদের মুখে তুলে দিচ্ছে সমস্ত কিছু, যা কিনা ‘রেডিমেড’। ফল, সবজি থেকে শুরু করে মাছ, মাংস সমস্ত কিছুই প্যাকেটজাত হয়ে হাতে পৌঁছচ্ছে আমাদের, আর তার থেকেই বাড়ছে আমাদের শরীরে বিষাক্ত পদার্থের পরিমাণ। যাকে কিনা বলা যেতে পারে টক্সিন। আর এই টক্সিন শরীরে জমতে থাকলে দেখা দিতে পারে নানা ধরনের শারীরিক অসুস্থতা। ক্লান্তি কিংবা মেদ কিন্তু সেগুলিরই প্রাথমিক লক্ষণ।

আর এ ধরনের সমস্যা থেকে রেহাই পেতে গেলে, নিতেই পারেন বিশুদ্ধতার কাছাকাছি ফেরার চ্যালেঞ্জ।

কী সেটা?

এখনকার দিনে আমরা যা যা খাই, তার অধিকাংশই এত বেশি মাত্রায় পরিস্রুত বা রিফাইন্ড হয়ে আসে যে, বেশির ভাগ সময়েই তা পুষ্টিগুণ হারিয়ে ফেলে। আর প্যাকেটজাত সব খাবারকে অতিমাত্রায় পরিস্রুত করতেই হয়, নয়তো তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই আসুন, যতটা সম্ভব বিশুদ্ধ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করি আগামী ক’দিন। যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলি ভেজাল তথা ‘প্লাস্টিক’ খাদ্যদ্রব্য।

প্রকৃতির কাছাকাছি ফেরার এই চেষ্টাকে অনেকে ‘ক্লিন ডায়েট’ও বলে থাকেন। এই ডায়েটের মোদ্দা কথা হল, প্রাকৃতিক খাবারদাবারকে অবিকৃত, ন্যূনতম পরিস্রুত অবস্থায় খাবারের প্লেটে নিয়ে আসা। অর্থাৎ আমরা টম্যাটো খাব, কিন্তু দোকান থেকে কেনা সস নয়। মাছ, মাংস কিংবা নানা প্যাকেটজাত শাকসবজির ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।

আসুন, জেনে নিই কী কী বাদ দেব খাবারের তালিকা থেকে...

নুন বা মিষ্টি দিয়ে প্রসেসড যে-কোনও রকম খাবার।

পরীক্ষাগারে কৃত্রিম উপায়ে প্রস্তুত যে-কোনও ধরনের খাবার।

রিফাইন্ড রুটি, কিংবা প্রসেসড ফলের রস থেকে শুরু করে তেলে ভাজা খাবারদাবারও।

অর্গানিক পাস্তা সস কিংবা ইন্সট্যান্ট ওটসও বাদ। বাদ পিৎজা, বার্গার, হটডগ এই ধরনের যে কোনও ফাস্ট ফুড।

তা হলে খাব কী?

আপনার ডায়েট চার্টে বরং থাক মিনিমালি প্রসেসড খাবারদাবার। আনপ্রসেসড খাবারদাবারের তালিকায় থাকতে পারে...

টাটকা ফল, শাকসবজি, শুকনো ডাল-জাত খাবার, বাদাম ও ডিম।

মিনিমালি প্রসেসড খাবারের মেনুতে থাকতে পারে...

অপরিশুদ্ধ শস্য থেকে পাওয়া খাবারদাবার। যেমন গম থেকে তৈরি রুটি, পাস্তা, ওটমিল, ব্রাউন রাইস ইত্যাদি।

টিনজাত মাছ, মাংস একেবারেই বাদ তালিকা থেকে। চলবে বাজার থেকে কিনে আনা টাটকা মাংস। তবে মুরগির মাংস খাওয়াটাই বেশি নিরাপদ।

হরমোন-ফ্রি ডেয়ারি জাত খাবার অর্থাৎ টাটকা দুধ ও দুদ্ধজাত বিভিন্ন খাবার।

যে কোনও রকম পেস্টিসাইড ও প্রিজারভেটিভ মুক্ত টাটকা খাবারদাবার খাওয়াই হচ্ছে এই ডায়েটের প্রধান শর্ত। তবে শুধু প্লেটে বদল আনলেই চলবে না, বদল আনতে হবে বাজার করার পদ্ধতিতেও। তার মানে কেবলই প্রিজারভেটিভহীন খাবার খাব, তা কিন্তু নয়। বরং কম প্রসেসড খাবারদাবার চিনতে শেখাটাও কিন্তু এই পদ্ধতিরই একটা অংশ।

পাশাপাশি, খাবারের খাদ্যগুণ বজায় রেখে রান্না করাটাও জরুরি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রান্না করার সময় শাক সবজির অধিকাংশ ভিটামিনকে বাদ দিয়ে ফেলি আমরা। অতিরিক্ত তেল ব্যবহার বা বেশি ভেজে বা কষে রান্না করলেও খোয়া যায় খাদ্যগুণ। তাই খেয়াল রাখতে হবে সে দিকেও।

অর্থাৎ কষ্টসাধ্য ডায়েট নয়, প্রকৃতির কাছাকাছি থেকেও আমরা পেতে পারি সুন্দর স্বাস্থ্যকর একটা জীবন। কেবল মাত্র পারফেক্ট ফিগারই তো নয়, সুন্দর ত্বক, সুন্দর চুল কে না চায়! আর এ সব কিছুকেই নিয়ন্ত্রণ করে আসলে আমাদের খাদ্যাভাস। বাইরে থেকে হাজার রকম যত্ন আমাদের সাময়িক সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারলেও, চিরস্থায়ী সমাধানের জন্য আমাদের স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস কিন্তু সবচেয়ে জরুরি।

তবে আর দেরি কীসের?

সব দিক দিয়ে সৌন্দর্য ও লাবণ্য ধরে রাখতে একবার নিয়েই দেখুন না প্রকৃতির কাছাকাছি ফেরার চ্যালেঞ্জ!

মডেল: দীপশ্বেতা, মেকআপ: সন্দীপ নিয়োগী হেয়ার: মৌসুমি ছেত্রী, পোশাক: ওয়েস্টসাইড

লোকেশন: দ্য কনক্লেভ ক্লাব ভর্দে ভিস্তা

ছবি: অমিত দাস

Health Care Fruits Vegetables Food
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy