Advertisement
E-Paper

নামাবলি

মায়া, ছায়া, গোপাল আর নয়। ছেলেমেয়ের নাম এখন অপ্সরী, মাণ্ডবী, মণিজিঞ্জির...! নামকরণের ইতিহাস-ভূগোল নিয়ে তোলপাড় স্বপ্নময় চক্রবর্তীনামে কী যায় আসে— এটা একটা মনীষী বচন। আবার যদি বলি, নামের আমি নামের তুমি নাম দিয়ে যায় চেনা, ফেলে দিতে পারবেন না। লালিমা পাল শুনলে যে অবয়বটি ভেসে ওঠে, বিশ্বম্ভর সিংহ শুনলে সেই ছবি পাবেন না। মেঘমল্লার কিংবা ম্যান্ডেভিলা গার্ডেন অথবা সিলভার স্প্রিং-এর বাসিন্দাদের মধ্যে লম্বোদর গুছাইত কিংবা মদনানন্দ মোদক পাবেন না। আবার সন্দেশখালিতে খুঁজে পাওয়া মুশকিল কোনও কিটি বোস কিংবা প্রেটি ভোঁস।

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৫ ০০:০৩

নামে কী যায় আসে— এটা একটা মনীষী বচন। আবার যদি বলি, নামের আমি নামের তুমি নাম দিয়ে যায় চেনা, ফেলে দিতে পারবেন না।

লালিমা পাল শুনলে যে অবয়বটি ভেসে ওঠে, বিশ্বম্ভর সিংহ শুনলে সেই ছবি পাবেন না।

মেঘমল্লার কিংবা ম্যান্ডেভিলা গার্ডেন অথবা সিলভার স্প্রিং-এর বাসিন্দাদের মধ্যে লম্বোদর গুছাইত কিংবা মদনানন্দ মোদক পাবেন না।

আবার সন্দেশখালিতে খুঁজে পাওয়া মুশকিল কোনও কিটি বোস কিংবা প্রেটি ভোঁস।

বিড়া বল্লভপাড়া শান্তিপিপাসা বালিকা বিদ্যালয় গোছের স্কুলে ছাত্রীদের মধ্যে এখনও মালতী, সুলেখা, সন্ধ্যা, ছায়া, মায়া পাওয়া যেতে পারে, কিন্তু লরেটো-পাঠভবন-সাউথ পয়েন্টের রেজিস্টার থেকে এই সব নাম এত দিনে উধাও।

বামাচরণ, হরিদাস, ননীগোপাল, সুধাময়ী, কমলাসুন্দরী— এই নামগুলি শুনলেই মনে হয় এদের বয়েস সত্তরের বেশি।

কোনও চিত্রপরিচালক সত্তরোর্ধ্ব নারী চরিত্রের নাম মোনালিসা কিংবা তানিয়া রাখবেন না। সিনেমাটা যদি এ সময়কে কেন্দ্র করে হয়, তরুণ চরিত্রগুলির নাম হবে অর্ণব, অরিজিৎ দিগন্ত, শমীক, বিদিশা...। যদি গজানন হয়, বুঝতে হবে কমিক চরিত্র।

আবার প্রেমকান্ত্, ওমপ্রকাশ, রাজকিশোর, সোহনলাল— নাম শুনলেই বোঝা যায় এঁরা হিন্দিতে কথা বলেন।

বাংলা ব্যক্তিনামের পাশে একটা শ্রেণিচরিত্র আছে। নাম শুনে ব্যক্তি আন্দাজ করা হয়— বিশেষত হিন্দুদের ক্ষেত্রে। খ্রিষ্টানদের ক্ষেত্রে কিন্তু নাম শুনে ব্যক্তি আন্দাজ করা যায় না। অ্যান্টনি, চার্লস বা জন গায়ক, চর্মকার বা বিজ্ঞানী যা খুশি হতে পারেন। মুসলিমদের ক্ষেত্রেও অনেকটা এইরকমই।

চরিত্রের নামকরণে লেখকের খুব সমস্যা হয়। খেতমজুরের নাম সুস্নাত করা যাবে না। আবার রামচরণ কিংবা দুখীরামও খুব ক্লিশে হয়ে যায়।

জমিদারদের নাম জয়ন্তনারায়ণ, দুর্লভকুমার এসব হত। এখন জমিদার নেই, নানা ধরনের ক্ষমতাবান আছেন। আগে লোফার এবং গুন্ডা শ্রেণির চরিত্রনাম দেওয়া হত জগা, দেদো, বুল্টন...। রাজনীতির লোকেরা এদের ব্যবহার করত। এখন এরাই রাজনৈতিক নেতা ও ক্ষমতাবান। থানার ওসিদের কলারে হাত দিতে পারে অনায়াসে। ফলে রাজনৈতিক নেতাদের নাম আর নরেন-হরেন-করতে হয় না। দেদোবাবু, বুকাইবাবু, ট্যারা বাবলু বা বেঁটে হাবলু হলেও চলে যাবে। আইএএস অফিসার বা চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট লখাই হতে পারে না।

অনেক সময় বংশ-লতিকা দেখে ব্যক্তিনামের বিবর্তন বোঝার চেষ্টা করেছি।

তিন-চার পুরুষ আগে মদনমোহন, গদাধর, বাসুদেব ইত্যাদি নাম হলে দুই পুরুষ আগে অমল বিমল কমল ছাড়াও ব্যতিক্রমী ইন্দ্রজিৎ নাম পাওয়া যেত। আর এখন ডিকশনারি ঘেঁটে অতিব্যতিক্রমী নাম সন্ধান করে অভিপ্সিতা, বজ্রকেতন, অদ্রিজা ইত্যাদি নাম রাখা হচ্ছে।

টুসু, বিহু, মহুল— এ সব নাম আদিবাসী প্রীতির জন্য নয়, এখনও তেমন কেউ এ সব নাম রাখেনি বলে। মহুয়া নাম রাখলেও হাঁড়িয়া রাখেনি কেউ।

যদি আরও চারশো বছর পিছিয়ে যাই, দেখব দেবদেবীর নামে নাম রাখা হত না। আমাদের মধ্যযুগের সাহিত্যে যে নামগুলো পাই, তার মধ্যে দেবদেবীর নাম কই? বেহুলা, সনকা, খুল্লনা, লহনা, রঞ্জাবতী, কোকিলা, আদুনা, পাদুনা, চাঁদু, লখীন্দর, শ্রীমন্ত, কালকেতু, লাউসেন, কর্ণসেন, ভাঁড়ুদত্ত— আরও কত উদাহরণ খোঁজা যায়।

প্রাচীন ভারতেও দেবদেবীর নামে মানুষের নামকরণের প্রথা ছিল না, যদিও দেবদেবীরা বারবার পাল্টে গেছেন। সেই প্রাচীন ইন্দ্র-বরুণ-অগ্নি-অশ্বিনীকুমারদের স্থান নিলেন বিষ্ণু-মহাদেব, লক্ষ্মীরা। এর পর আরও কত দেব-দেবী এলেন গেলেন কিন্তু মানুষের নামে ওরা কেউ ছিলেন না।

প্রাচীন রাজারাজড়াদের নাম দেখুন— বিন্দুসার, অশোক, সমুদ্রগুপ্ত, চন্দ্রগুপ্ত, বিক্রমাদিত্য, হর্ষবর্ধন, শশাঙ্ক, ধর্মপাল, দেবপাল, বল্লালসেন, লক্ষ্মণসেন ইত্যাদি।

আদিযুগ থেকে ত্রয়োদশ শতাব্দী পর্যন্ত আমাদের কবি-সাহিত্যিক নাট্যকারেরা হলেন বাল্মীকী, ব্যাসদেব, ভাস, ভবভূতি, দণ্ডী, ভর্ত্তৃহরি, বিশাখ দত্ত, ভট্টনারায়ণ, ক্ষেমীশ্বর, অভিনন্দ, কালিদাস ইত্যাদি (কালিদাস নামের উৎস নিয়ে আমার একটা সন্দেহ আছে। এই নামের অর্থ কি কালীর দাস? কালীর ধারণা কি সেই সমাজে খুব বেশি রকম ছিল? নাকি কৃষ্ণবর্ণের দাস?)।

প্রাচীন চরিত্রগুলির নাম ধৃতরাষ্ট্র, অর্জুন, দশরথ, সুমিত্রা, কৌশল্যা, দ্রৌপদী ইত্যাদি।

তবে প্রাচীন ভারতেও নামকরণের ক্ষেত্রে শ্রেণিভেদ ছিল। রাজারানিদের এক ধরনের নাম, তো চাকর-চাকরানিদের নামের অন্য ধরন। মালবিকা, ইরাবতী, গৌতমী, অনসূয়া, শকুন্তলা, প্রিয়ংবদা এঁরা সম্ভ্রান্তা। রাজকন্যা, মন্ত্রীকন্যা বা ঋষিকন্যা। চতুরিকা, নিপুণিকা, মধুরিকা, পরভৃতিকা, এরা হল পরিচারিকা শ্রেণির। আবার জানুক, শূদ্রক, শম্বুক— এরা পরিচারক শ্রেণির।

পরবর্তী কালে মনুসংহিতায় পাওয়া গেল ব্রাহ্মণের নাম হবে মঙ্গলবাচক, ক্ষত্রিয়ের বলবাচক, বৈশ্যের ধনবাচক, শূদ্রের হীনতাবাচক।

ব্রাহ্মণের নামের শেষে শর্মা। যেমন বিদ্যাসাগর লিখতেন ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা। ক্ষত্রিয়ের নামের শেষে বর্মা— যা কি না রক্ষাবাচক উপপদ। যেমন বজ্রবর্মা। বৈশ্যের নামের সঙ্গে ভূতি, যথা বসুভূতি বা ভবভূতি (নাট্যকার)। শূদ্রনামে দাস। যেমন দীনদাস। কিন্তু রামায়ণ মহাভারতের নামগুলি মনুশাসিত নয়। মনু আরও পরবর্তী লোক। দুই মহাকাব্যের নামগুলির ফোনেটিকস বা শব্দঝঙ্কার চরিত্রগুলির ইমেজ অভিমুখী। কুমন্ত্রণা দেয় যে রানি, তার নাম কৈকেয়ী। শুনতে কর্কশ লাগে। লক্ষ করুন, পরবর্তীকালে কেউ নিজের কন্যার নাম কৌশল্যা, সুমিত্রা, সুভদ্রা সবই রেখেছে, কিন্তু কৈকেয়ী রাখেনি।

দেখুন, কোনও রাক্ষসীর নাম পারমিতা, অনুশীলা, উত্তরা হয় না। হিড়িম্বা হয়। শব্দঝঙ্কারটা খেয়াল করুন। শূর্পনখা, পূতনা, ছিন্না, চীৎকৃতা ইত্যাদি।

যে শূদ্রটি বেদপাঠের অপরাধে মার্ডার হয়ে গিয়েছিল, ওর নাম শম্বুক, মানে শামুক। অসুরদের নাম হত চণ্ডাসুর, মুণ্ডাসুর, বকাসুর, মহিষাসুর আর রাজাদের নাম হত দয়াশূর, বিদ্যাশূর।

বত্রিশ সিংহাসন, পঞ্চতন্ত্র, বেতাল ঘেঁটে দেখুন, ইমেজ এবং শ্রেণি অনুযায়ী নামকরণ হচ্ছে। ব্রাহ্মণদের নাম পাচ্ছি— যজ্ঞশর্মা, মিত্রশর্মা, বিষ্ণুশর্মা ইত্যাদি। সেনাপতিরা বলভদ্রবর্মা, চন্দ্রবর্মা...। রাজা-গন্ধর্বসেন, চন্দ্রভানু, হরিশচন্দ্র, চন্দ্রাপীড়...। রানি- পদ্মাবতী, সুলোচনা, ভানুমতি...। বণিকদের নাম- মণিভদ্র, ধনপতি, সাগরদত্ত, হিরণ্যদত্ত...। সাধারণ লোক- বামন, অন্ধক, চপলক, ক্ষেমংকর, জলদাস...।

এই ধারাবাহিকতাতেই বঙ্কিমচন্দ্র তাঁর চরিত্রদের নাম দিয়েছেন। উঁচু ঘরের মেয়েদের নাম- রজনী, রোহিণী, কুন্দনন্দিনী, শৈবলিনী, হিরণ্ময়ী, সূর্যমুখী, ভ্রমর...। আর পরিচারিকা-নাপিতানি-কুট্টনীদের নাম— হারানী, হরিদাসী, হীরা, ক্ষীরোদা, রামী, বামী, প্রমদা, মাধু...।

রবীন্দ্রনাথে দেখুন না কেন, যে ছেলেটি হাঁস চুরি করে জামার তলায় লুকিয়েছে, ওর নাম হারাধন, আর যে এমএ পাস করে গ্রামে আসে, তার নাম চতুর্ভুজ। গৃহভৃত্যের নাম রাইচরণ কিংবা কেষ্টা।

রবীন্দ্ররচিত চরিত্রগুলির নামের চরিত্রবদল হল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই। প্রথম দিকের চরিত্র-নাম ছিল— তিনকড়ি, হরিমতি, বিহারী, ক্ষেমঙ্করী, কেদার, বরদাসুন্দরী, দ্রাক্ষায়নী, হরসুন্দরী, হরিপদ, অনঙ্গসুন্দরী ইত্যাদি।

রবিবার গল্পে দেখছি, গল্পের নায়ক অভয়চরণ পিতৃদত্ত নামটা পাল্টে করেছিলেন অভীককুমার। রবিবার গল্পের স্ত্রী চরিত্র সুস্মি। চোরাই ধনে সুনেত্র, পুনরাবৃত্তি গল্পে রুচিরা, চার অধ্যায়ে এলা, প্রগতিসংহারে সুরীতি...। রবীন্দ্রনাথ যুগের দিকে নজর রেখে নায়ক-নায়িকাদের নাম দিতেন। রবীন্দ্রনাথ যদি আজও বেঁচে থাকতেন, তাঁর চরিত্রদের নাম হত ঋভু, অর্ক, মোম, তৃণা, রেনবো, র‌ম।

র‌ম মানে রম্যকান্তির হ্রস্বরূপ, যেমন বিক্রমের এ যুগের হ্রস্বরূপ ভিক। ইংলিশ মিডিয়ামের ছেলেমেয়েরা রণবিজয়কে বলে রনি। বিবেকানন্দ হয়ে যায় ভিব কিংবা ভিক। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নামকরণ পাল্টায়।

নামেরও একটা সমাজতত্ত্ব আছে। এই দেখুন না, যত স্বরাজ আর স্বাধীন নামের মানুষ আছেন বা ছিলেন, ওদের সবারই জন্ম ১৯২০ থেকে ১৯৫০-এর মধ্যে। স্বরাজ বন্দ্যোপাধ্যায় নামে একজন সাহিত্যিক ছিলেন, এক সময় ওঁর উপন্যাস খুবই জনপ্রিয় ছিল।

যত বিপ্লব সব ১৯৪০ থেকে ১৯৭০-এর মধ্যে জন্মেছেন। এখন কেউ ছেলেমেয়েদের নাম স্বাধীন, স্বরাজ, বিপ্লব, ক্রান্তি, সংগ্রাম রাখছেন না। স্বাধীনতার পর নতুন স্বপ্ন দেখল দেশের মানুষ। দেশ ভাগের কারণে প্রচুর উদ্বাস্তু এল, কিন্তু কলোনি পরিবারে কারও নাম বাস্তুহারা কিংবা উদ্বাস্তু রাখা হয়নি। উদ্বাস্তু পল্লিতে প্রচুর স্বপন জন্ম নিয়েছিল। সে রকম অনেক স্বপন এখন সমাজে প্রতিষ্ঠিত। ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় থেকেই বাঙালি মধ্যবিত্তের ঘরে স্বপনরা জন্মাতে থাকে।

১৯৪৪-৪৫ সালেও দু’চার জন স্বপন জন্মেছিলেন। আমি এক জনকে জানি, অধ্যাপক স্বপন মজুমদার। আমার জানা উনিই সবচেয়ে বয়স্ক স্বপন। এর আগে বাঙালি সন্তানের নাম স্বপন রাখেনি। ‘স্বপনবুড়ো’ তো ছদ্মনাম। আসল নাম অখিল নিয়োগী।

স্বাধীনতার পর পর মানুষ দেখল পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, ডিভিসি, দুর্গাপুর, কল্যাণী, এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ। স্বপ্ন নির্মিত হল সন্তানের নামকরণে। ১৯৮০-৮৫ থেকে স্বপনরা শেষ।

চুঁইয়ে পড়ার তত্ত্ব অনুযায়ী মধ্যবিত্তদের থেকে নিম্নবিত্ত পরিবারেও নামগুলি ঢোকে, স্বপনও ঢুকেছিল। শ্মশান স্বপন, ট্যারা স্বপন, হাতকাটা স্বপনরাও নিজেদের ক্ষেত্রে বিখ্যাত হয়েছিল, এখন এ সব ঘরেও স্বপন নাম রাখা হয় না।

বাবরি মসজিদ ভাঙার পর কিছু নবজাতকের নাম সম্প্রীতি রাখা হয়েছিল। আবার দু’হাজার সালের পর প্রচুর ‘সৌরভ’ জন্মেছে। সুস্মিতা সেন বিশ্বসুন্দরী হওয়ার পর অনেক সুস্মিতা নামকরণ হয়েছিল যেমন।

আগেই বলেছিলাম দেবদেবীর নামে নামকরণের প্রথা ছিল না। পঞ্চদশ শতকের শেষে সারা ভারত জুড়েই একটা বৈষ্ণব-ভাব আন্দোলন হয়েছিল। বাংলায় কৃষ্ণ ধারণার প্রসার হয়। কৃষ্ণ নাম নিয়ত উচ্চারণ করা ভাল এরকম ধারণা থেকেই হয়তো সন্তানের নানা রকম কৃষ্ণবাচক নাম রাখা শুরু হয়। মুরারী, বংশীধারী, গোবিন্দ। তারপর শৈব এবং শাক্ত ধারণায় বিশ্বাসীরাও ভোলা, তারক, তারা, দুর্গা এ সব নাম রাখতে শুরু করে।

এ বার বৈষ্ণবীয় বিনয় প্রকাশের ব্যাপারটাও চলে আসতে লাগল নামকরণে। শুধু গোবিন্দ নয়, গোবিন্দদাস। এ ভাবে কৃষ্ণপদ, কালীপদ, হরিদাস, রামপ্রসাদ, হরিসেবক, কালীকিংকর, শিবচরণ, দুর্গাচরণ, হরিচরণ ইত্যাদি। ক্রমশ চরণ শব্দটা খুবই জনপ্রিয় হয়ে গেল।

আমাদের ঠাকুরদাদাদের আমলে নামের মধ্যপদে প্রায়শই দেবদেবী নাম ব্যতিরেকে চরণ ঢুকে যেত। যেমন, অভয়চরণ, মাখনচরণ, অক্ষয়চরণ ইত্যাদি।

আমার বাবাদের আমলে মাঝখানে কুমার শব্দটা খুবই আধুনিক ছিল। অরুণ চ্যাটার্জি নাম পাল্টে উত্তমকুমার হয়েছিলেন।

গোয়েন্দা গল্পের কিংবদন্তি স্বপনকুমারের আসল নাম ছিল সমরেন্দ্রনাথ পাণ্ডে। ওই নাম বজায় রাখলে কি তিনি স্বপনকুমার হতে পারতেন?

তুর্কি আগ্রাসনের আগে পর্যন্ত গুণবাচক নাম বা বস্তুবাচক নাম রাখা হত। যেমন শশাঙ্ক, সুতনু, প্রফুল্ল, বঙ্কিম, ময়ূরাক্ষী, বজ্রসেন ইত্যাদি।

প্রাচ্য মাগধী প্রাকৃতের নিদর্শন যে পাথুরে লিপি, তাতে ব্রাহ্মী হরফে লেখা আছে, ‘‘শুতনুকা নম দেবদশিক্যী তং কময়িথ বলনশয়ে দেবদিনে নম লুপদখে।’’ মানে হল, সুতনুকা নামে এক দেবদাসী, তাকে কামনা করেছিল বারাণসীর দেবদিন নামের এক রূপদক্ষ। রূপদক্ষ মানে ভাস্কর। এ যেন প্রাচীরের গায়ে লেখা ভোম্বল+পিঙ্কির আদিরূপ।

কিন্তু নবম/দশম শতাব্দীর বাংলা নামের আদিরূপে দেখি দুটি নাম দেবদিন ও সুতনুকা। তুর্কী আক্রমণের পর এল দেবদেবীদের নাম, তারপর নামের সঙ্গে উপপদ। যেমন দাস, চরণ, প্রসাদ ইত্যাদি। বহু দিন এরকম চলল। ইংরেজ আগমনের পর বেশ কিছু বিদেশি নাম এল উঁচু সমাজে। যেমন, ডলি, কিটি, আইভি, মলি, রিনি, বেলা ইত্যাদি।

ব্যক্তিনামে যুক্ত হল স্থাননাম। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই ব্যাপারটা আরও ব্যাপক হল। আশি বছরের বেশি কোনও মানুষের নাম ইরানি, চায়না, জাপানি, তিস্তা, ঝিলম, শ্রাবস্তী, বিপাশা, নেপাল, সাহারা খুঁজে পাওয়া যাবে না।

বিখ্যাত ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন ক্রম্পটন দত্ত। ক্রম্পটন একজন বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক ছিলেন। ওঁর ভাইয়ের নাম নিউটন। একটি মেয়েকে জানি, বছর কুড়ি বয়স। ওর নাম নাসা। এই নাসা মানে নাক নয়, NASA।

এখন হয়েছে কি, সন্তান জন্মানোর আগে থেকেই নাম ভাবা শুরু হয়। ছেলে হলে এই নাম, মেয়ে হলে ওই নাম। আগে রাশি অনুযায়ী নাম রাখা হত। মেষ রাশি হলে অ কিংবা ল দিয়ে শুরু করতে হবে। বৃষ হলে উ, ব, ই দিয়ে ... এ রকম নিয়ম ছিল। আমার পিতামহের সরকারি নাম কৃষ্ণকমল হলেও কোষ্ঠীর নাম পতিতবন্ধু।

এখন আর রাশি নাম চলে না। ব্যতিক্রমী নাম চাই। একমেবাদ্বিতীয়ম হতে হবে।

আইটি-র প্রবেশ এবং চাউ-বার্গার-পিৎজার প্রকোপের আগে সন্তানের নাম রাখা নিয়ে বাপ-মায়েদের এত গবেষণা দেখিনি। যা হোক একটা বাজারচলতি ধরনের নাম হলেই হত। তবে গোবর্ধন, রাধারমণ, হরিদাস, খগেন এ সব নাম বাদ দিয়ে। অনিল, সুনীল, দীপঙ্কর, দিলীপ, শম্পা, রীতা, মিতা দিব্যি চলত। এর পর পার্থ আর অমিতাভর হুজুগ এল। গাদাগাদা পার্থসারথি, পার্থপ্রতিম। দেবাশিস, দেবাদিত্য ইত্যাদিও প্রচুর।

মেয়েদের নাম আগে ফুল থেকে বেশ হত। পদ্ম, জবা, শিউলি, ডালিয়া ইত্যাদি। এবার নদী। নদী অভিযান। তিস্তা, আত্রেয়ী, ডুলুং, ঝিলম...। এখন আর নতুন নদী পাওয়া যাচ্ছে না। রাইন, সিন, ভলগাও হয়ে গেছে।

যে সব উৎস থেকে নাম বাছা হয় তা হল পুরাণ, ক্লাসিক-কাব্য-মহাকাব্য থেকে রবীন্দ্রসাহিত্য এর মধ্যে পড়ে। মহাকাশের গ্রহনক্ষত্র থেকে যেমন ফাল্গুনী, চিত্রা, বিশাখা...। ফুল, পাখি, ঋতু, নদ, নদীর নাম থেকে, নগরীর নাম থেকে যেমন বিদিশা, শ্রাবস্তী, ভূপাল, বৃন্দাবন। মণিরত্ন ও প্রসাধন থেকে যেমন হীরা, পান্না, প্রবাল, কুমকুম, চন্দন, আবির...। নৃত্য, গীত, বাদ্য, ছন্দ, অলঙ্কার, রাগরাগিণীর নামে যেমন মৃদঙ্গ, ঝঙ্কার, অনুষ্টুপ, মন্দাক্রান্তা...।

মনোবাসনা বা অভিপ্রায় থেকেও নাম তৈরি হয়। যেমন ঈপ্সা। স্নিগ্ধা, শ্রীময়ী, সুকান্তা, লাবণ্য, স্থিতধী— এ সবের মধ্যেও অভিভাবকের ইচ্ছা প্রকাশ পায়। আবার অনেক আগে আন্নাকালী ধরনের নামও কিছু মেয়ের হয় যেত। বারবার কন্যা সন্তান হবার পর মা কালীর কাছে প্রার্থনা— আর না কালী, সেটাই আন্নাকালী হয়ে যেত। এ তো গত শতাব্দীর কথা।

কিছু নাম এমন, মানেই বুঝতে পারি না। যেমন তুর্ণা, ইর্মা, লাজুলি, পার্নো ইত্যাদি। উত্তর কলকাতার একটি বালিকা বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির হাজিরা খাতা থেকে এই নামগুলি পাওয়া গেল। মেঘমালা, পৃথা, স্বর্ণালী, রেবেকা, শাওন, অপ্সরী, মাণ্ডবী, টুসু, উপমা, শিরিন, ছন্দ্রাকান্তা, স্বপ্নাঞ্জলি, সোমশুক্লা...। অঞ্জলি, নিলীমা, সাধনা, মিনতি, শেফালিরা আগেই ক্ষেমঙ্করী, হরিপ্রিয়া, সুধাময়ীদের সরিয়ে নামাবলিতে ঢুকেছেন।

নিলীমা, সাধনারা তবু আছে। বিড়া, গুমা, দত্তপুকুর, পায়রাডাঙায়। খালি মেয়েদের নাম কেন, ছেলেদের নাম রাখা নিয়েও বিস্তর ঘাম ঝরে। মাথা ঘামানো হয়। ‘ফুরায়ে গেল উনিশ পিপা নস্য’ গোছের ব্যাপার। কী সব নাম! মণিজিঞ্জির, প্রজ্ঞানপরাঙ্গম, আর্য্যকুসুম, অনির্বাণজ্যোতি...।

আমি তো জানি, বড় হলে মণিজিঞ্জির কয়াল ‘ম্যাক’ হয়ে যাবে। কারণ এত বড় নাম ও লিখতে পারবে না, বলতেও পারবে না বন্ধুরা।

ব্রিটিশ আমলে অনেক জনার্দন জন হয়ে যেত, হরি হত হ্যারি। এখন অভিষেকরা বিদেশে গিয়ে অ্যাভি। বোধিসত্ত্ব ব্যানার্জি হয় বব।

ব্যতিক্রমী নাম দেওয়া নিয়ে এক ধরনের অদ্ভুত পাগলামি দেখি আজকাল। সুদেব বক্সীর একটা ছড়ার কথা মনে পড়ছে— ‘নামটি কী তোর?— কী বললি?/চিলাতচুলু চিলোঞ্জলি।’ ছড়ার কথা যখন উঠলই, অন্নদাশঙ্কর রায়ের নাম রাখা নিয়ে একটা ছড়া বলি। —‘বাপ যত কিনছে ছেলে তত ছিঁড়ছে/ জামা জুতো ধুতি আর চাদর/ এই ছেলেটি বাঁদর/মিষ্টি মিষ্টি হাসে/চুপি চুপি কাছে আসে/ নাকে মুখে দিয়ে যায় নস্যি/এই মেয়েটি দস্যি।’ বোঝাই যাচ্ছে এগুলো আদরের নাম। আদরের নাম অনেক সময় ডাক নাম হয়ে যায়। ডাকনাম বলতে বুঝি যে-নামে সাধারণত বেশি মানুষ ডাকে। আসলে নাম হল, কোনও কিছুর শনাক্তকরণের প্রতীক শব্দ। স্থান, বস্তু, প্রকৃতি, জীব, জন্তু সহ মানুষ সব কিছুরই শনাক্তকরণের দরকার হয়।

হোমিওপ্যাথ ডাক্তার কানাইলাল কয়াল। নাম ও পদবির আদ্যক্ষর মিলিয়ে পাড়ায় ওঁর পরিচয় কাক ডাক্তার। ওঁর আবাসনে ওঁর পরিচয় ডা. কয়াল। ওঁর বন্ধুরা ওকে ডাকে কেকে (KK)। ওঁর মা-বাবা ছোট বেলা থেকেই ‘কানু’ ডেকেছেন। শ্বশুরবাড়িতে ওঁর পরিচয় বেঁটে জামাই। কানাইলাল কয়াল পোশাকি নাম হলেও ওঁর আরও এত গুলো নাম আছে। যোগীন্দ্রনাথ সরকারের ছড়ায় আছে ‘শ্বশুরবাড়ি গিয়ে গোপে হল গোপীনাথ’, মানে, লোকটি গোপে নামেই পরিচিত, একটু উঁচু প্ল্যাটফর্মে গেলে সে গোপীনাথ।

আমাদের লোকসমাজ বস্তুকে দু’ভাগে ভাগ করে। আটপৌরে ও তোলা। তোলা কাপ প্লেট থাকে, অতিথি এলে বের করা হয়, তোলা জামাও। তেমন তোলা নামটা থাকে অফিস-আদালত-শ্রাদ্ধশান্তিতে। আর আটপৌরে নামটা বাড়িতে, পাড়ায়, পরিজনদের কাছে। ওটাই ডাকনাম।

বিশ্বনাথ হয়ে যায় বিশে, ধনঞ্জয় ধনা। সব সময় যে এমনই হবে তার কোনও মানে নেই। সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের ডাকনাম ছিল মানু। বিজ্ঞানী সত্যেন বসুর ডাকনাম ছিল বোঁদে, সত্যজিৎ রায়ের মানিক। ডাকনাম সাধারণত রাখা হয় না, হয়ে যায়।

দন্তহীন একটি শিশুকে অতিশয়োক্তিতে বুড়ো ডাকতে ডাকতে কখন সেই বুড়ো নামটাই প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়, সেটা অভিভাবকরাও জানে না। কত বুড়োর নাম এখনও খোকা। একান্নবর্তী বাড়িতে বড় খোকা-মেজ খোকা এরকম ডাকনামও ছিল। ছোটন, নোটন, ঘোঁতন, বাবু, হাবু, পটলা, ডাবু এরকম বহু নাম আছে। পোশাকি নামের সঙ্গে যার সম্পর্ক নেই। নানা ভাবে একটা ডাকনাম তৈরি হতে পারে। শারীরিক কারণে একটা নাম তৈরি হয়ে যায়, যেমন মটু, শুটকো, ঢ্যাঙা, বাঁটুল, প্যাকাটি, খ্যাঁদা। মাথায় চুল কম থাকলে নেড়া, বাম হাত বেশি সচল হলে ন্যাটা... ইত্যাদি। স্বভাব অনুযায়ী ডাকনাম তৈরি হয় কখনও। বোকাসোকা হলে হাদা, চঞ্চল হলে ফরকে। জন্ম বার অনুযায়ী কখনও ডাকনাম হয়। সোমা, বুধো, বুধি, রবি ইত্যাদি। সংস্কারবশত একটা ডাকনাম তৈরি হত। আগে শিশুমৃত্যুর হার বেশি ছিল, আগে সন্তানের অকাল মৃত্যু হলে পরের সন্তানকে পয়সার বিনিময়ে একটা প্রতীকী বিক্রয়কর্ম করা হত। এই ভাবে পাঁচকড়ি, সাতকড়ি, ন’কড়ি নামের জন্ম। পাঁচকড়ি হয়ে যেত পাঁচু। সাতকড়ি সতু। নকড়ি নকু।

সত্য নামটিও সতু হতে বাধা ছিল না অবশ্য। নকুলচন্দ্রও নকু হয়ে যেতে পারত। গাত্রবর্ণ অনুযায়ীও ডাকনাম হতে পারে। যেমন ধনা, কেলে, কেলো, গোরা...। অনেক সময় একটু বড় হলে কখনও ঠাট্টাচ্ছলে কাউকে এক ভাবে চিহ্নিত করা হয়। যেমন ভোদাই, গুয়ে, কুমড়ো, হ্যাংলা ইত্যাদি। আদর বোঝাতে গেলে একটা ‘উ’ ধ্বনির প্রয়োগ হয়। ‘উ’ উচ্চারণ করতে গেলে ঠোঁট দুটো একটু ছুঁচলো করতে হয়। চুমু খাবার সময়ও। তাই বোধ হয় আদর করতে গেলে ছুনুমুমু, তুনুমুনু বলি।

অনেক ডাকনাম আদরবাচক সম্ভাষণ থেকে তৈরি হয়ে গেছে যেমন বুতুন, তুতুন। বুবু, মুনমুন, মিতুল। টুলু, টুকটুক, পুলু ইত্যাদি। ওই পুলুকে যদি অবজ্ঞা করা হয়, ও হয়ে যাবে প্যালা। অবজ্ঞা বোঝাতে অ্যা শব্দটির প্রয়োগ দেখি। নেপালকে আদর করে ডাকলে সে নেপু, অবজ্ঞায় ন্যাপলা। গণেশ গণশা হয়, আর একটু আদরে গণু। ওকে গালি দেবার সময় গ্যানা।

পূর্ববঙ্গে আদরবাচক শব্দ আবার একটু অন্যরকম। পরাণ হয়ে যায় পরাইণ্যা, গোপাল গোপাইল্যা, হামিদ হামিদ্যা, গোলাম গোলাইম্যা।

আবার ঠিক অবজ্ঞা নয়, একটু কম প্রাধান্য দেওয়া হলে বাবু হয়ে যায় বাবুয়া, মনু মনুয়া। লালু লালুয়া। একটু ব্যঙ্গ করতে গেলে শব্দপ্রয়োগ একটু আলাদা হয়। পাঁচু হয়ে যায় পেঁচো, মদন হয়ে যায় মদনা। সোলেমান সালু হতে পারে, ওর ওপর রাগ করলে সালুয়া। আজকাল একটু সচ্ছল ঘরে ডাকনামটাও রাখা হয়। রিয়া, টিয়া, নদী, বর্ষা, রাজা, পাখি, সোনা, টুনা ইত্যাদি। ‘আই’ প্রত্যয় যুক্ত করে ডাকনামেরও বেশ চল হয়েছে। যেমন বাবাই, টুকাই, তাতাই, কুচাই...।

নামকে বিকৃত করে ডেকে অবজ্ঞা প্রকাশ করতে বাঙালি হিন্দুর জুড়ি নেই। কেলে, জেদো, হেলে ইত্যাদি সবই বিকৃত নাম। বাঙালি মুসলমান দের মধ্যে এটা ততটা চোখে পড়ে না। ইসলাম নামকরণের বিষয়টি নিয়ে অনেক কথা বলা যায়। এখানে সে-প্রসঙ্গ আনতে পারলাম না। পরে না হয় বলা যাবে।

একটা ব্যাপার দেখবেন, নামকরণের সমস্যা যত বড়লোক আর মধ্যবিত্তদেরই। খেটে খাওয়া মানুষদের ডিকশনারি ঘেঁটে নাম খুঁজতে হয় না। যা হোক একটা নাম হয়ে যায়। তবে কখনও নামের মধ্যে একটা সুপ্ত বাসনার ছায়া থেকে যায়। এরকম কয়েকটা নাম দারোগা বাগদি, পুলিশ মাহাতো, বিড্ডো (বিডিও) হাঁসদা, কেক রুইদাস, কিশমিশ সোরেন, জমিদার কাঁড়ার...। একটা অনুন্নত অঞ্চলের ১০০ দিনের কাজ পেয়েছে এমন একটা তালিকা এরকম। শঙ্কর রুইদাস, উত্তম রুইদাস, তুবড়ি বাউড়ি, ব্যাঙ বাউড়ি, দুর্গা বাউড়ি, জবা বাউড়ি, গ্যাঁদা বাউড়ি, বাঁকু বাগদি, পাগল বাগদি, পোদো বাগদি, মঙ্গলা বাগদি, আহ্লাদি বাগদি, নোংরা মেটে, সন্ন্যাসী মেটে, কাঁদন মেটে, মনসা গড়াই, আরতি গড়াই...। গত দু’দশক ধরে এদের নাম হয়তো এক রকমই আছে। উত্তম, মিঠুন এ রকম কয়েকটা নাম যুক্ত হতে পারে শুধু।

প্রথমেই বলেছিলাম, নাম দিয়ে যায় চেনা। রবীন্দ্রনাথও বলেছিলেন ‘নাম নামমাত্র নয়’। নাম দিয়েই সমাজ ও ব্যক্তিকে বোঝা যায়। কিন্তু সব গণ্ডগোল হয়ে যায় যখন শুভব্রত বা অনুব্রত নামের কেউ প্রকাশ্য সভায় বলেন পুলিশকে বোম মারো, ঘর জ্বালাও কিংবা এলাকার স্বঘোষিত সমাজসেবী নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন চোখ ঢুলুঢুলু ছবি-সহ। সমাজসেবীর নাম পেটো জগাই।

অঙ্কন: দেবাশীষ দেব।

Swapnamoy Chakraborty Name History of Name Bengali name nick name
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy