Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

বারো হাতের আবাহন

বাঙালির কাছে পুজো মানে তার চিরন্তন আবরণ শাড়িকে বরণ করে নেওয়া। এ যেন শিকড়ে ফেরা! তাই চার দিনের জন্য শাড়ির ঔজ্জ্বল্যে, জমকে সেজে উঠেছেন প্রিয়ঙ্কা সরকারবাঙালির কাছে পুজো মানে তার চিরন্তন আবরণ শাড়িকে বরণ করে নেওয়া। এ যেন শিকড়ে ফেরা! তাই চার দিনের জন্য শাড়ির ঔজ্জ্বল্যে, জমকে সেজে উঠেছেন প্রিয়ঙ্কা সরকার

শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী, দশমী— চারটি দিন মায়ের মর্ত্যবাস। দীর্ঘ এক বছরের অপেক্ষার পর উমা তাঁর বাপের বাড়িতে আসেন।

আসলে শরতের এই চার দিন আগমনীর পিতৃভূমে আগমনের গুরুত্ব বাঙালি জীবনের পরতে পরতে। কোন দূর মুলুকের ব্যস্ত ইঞ্জিনিয়ার কিংবা জরির কাজ করা শ্রমিকটি বছরভর ছুটি জমাতে থাকেন, এ সময় ঘরে ফেরার জন্য। এ যেন শিকড়ে ফেরার টান।

তাই বোধ হয় আবাহন থেকে বিসর্জনের দিন ক’টিতে আরামের জিন্‌স, কেপ্রি, শর্টস ছেড়ে আমরাও আপন করে নিই সাবেক পোশাকটিকে। শাড়ি। বারো হাতের যে বয়নশৈলী, কারুকাজের সূক্ষ্মতা, রঙের খেলা... এ ক’দিন দেখা যায়, বছরের অন্য সময় তার বারো আনা দেখাও বোধ হয় মেলে না।

অভিনেত্রী প্রিয়ঙ্কা সরকারেরও তাই মত। বাঙালির সেরা পার্বণে শাড়ির চেয়ে সুন্দর আর কী আছে! আর সত্যিই চার ধরনের আনন্দ শাড়ির বাহারে সালঙ্কারা প্রিয়ঙ্কার থেকে চোখ সরে না।

সপ্তমীর রাতের জন্য সোনালি জরিতে সাজানো গোলাপি রঙা কাঞ্জিভরম সেজে উঠেছে প্রিয়ঙ্কার পরনে। অপূর্ব ফ্লোরাল টিয়ারড্রপ ডিজাইন আরও স্পষ্ট হয়েছে চওড়া জরির পাড় ও ফ্লোরাল পেজলি প্যাটার্নে। আর শাড়ির প্রাণভোমরা তার আঁচল। সোনালি জরির ফুলেল শোভা যেন আলোর রেণু। এর সঙ্গে যোগ্য সঙ্গত সোনার গয়নার আর কপালের লাল টিপের!

ম্যাজেন্টা, সবুজ, কমলা, বেগুনি রঙের খেলা জামেওয়ার শাড়ি জুড়ে। অষ্টমীর রাতে এমন সাজ যেন হারিয়ে যাওয়া বনেদি শোভাকে মনে করায়। শাড়ির ড্রেপিং স্টাইলে রয়েছে ভিন্নতা। কিন্তু তা পুরো মুডের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন নয়। এখানেও প্রিয়ঙ্কা সোনার গয়নাই বেছে নিয়েছেন। তবে আপনি চাইলে অ্যান্টিক জুয়েলারিও পরতে পারেন।

দেখতে দেখতে এসে গেল নবমী। সাবেকি সাজ এ সময় সুন্দর ঠিকই। কিন্তু একদিন ছক ভাঙলে মন্দ লাগে না। আরও বৈচিত্র আসে। তাই এ দিন প্রিয়ঙ্কা এক্সপেরিমেন্টাল। শাড়ির যে কত রূপ ও বিন্যাস আছে, তা বোঝার জন্যও কখনও কখনও নতুন পথে হাঁটতে তিনি পছন্দ করেন। অফ শোল্ডার ব্লাউজের সঙ্গে কাতান শাড়িকে ড্রেপ করা হয়েছে ধুতির স্টাইলে। এ শাড়ির হালকা ও ঘন সবুজ রঙা জরিতে নীলের উজ্জ্বল পরশ। শাড়ির জমিনে ক্লাসিক্যাল খেজুরছড়ি প্যাটার্নের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে ফ্লোরাল বুটি। রয়েছে কনট্রাস্টিং জরি বর্ডার। অফ শোল্ডার ব্লাউজের কারণে হাতে পরেছেন বাজুবন্ধ। গলায় চোকার। এর সঙ্গে কানে বড় দুল মানানসই হবে না। তাই পাশাই যথেষ্ট।

শাড়ি পরার ব্যাপারে প্রিয়ঙ্কার টিপ্‌স হল, তা যেন যেমন-তেমন ভাবে পরা না হয়। তার পারিপাট্যে যেন খামতি না থাকে। তা না হলে কিন্তু সব মাটি!

দশমীতে আবার সেই চিরায়ত সাজ। আজ যে পুজোর শেষ দিন। মাকে সিঁদুরে রাঙিয়ে দেওয়ার পালা। তাই এ দিনের জন্য লাল ছাড়া অন্য কোনও রং হতেই পারে না। লাল শাড়িতে সোনালি জরির খেলা। জরির বর্ডারে ফুলের আলপনা থাকলেও তার ফিনিশিং কিন্তু ম্যাট। এ শাড়িটির বৈশিষ্ট্য হল, তার ডাবল বর্ডার। তাই তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেছে নেওয়া হয়েছে দু’লহরী হার, ঝুমকো আর হাতে একগোছা চুড়ি। এ বার মাকে বরণের পালা। তখন মনে একটাই সুর, আসছে বছর আবার এসো মা!

পারমিতা সাহা

শাড়ি: আনন্দ, রাসেল স্ট্রিট

গয়না: টিবিজেড-দ্য ওরিজিনাল (ত্রিভোবনদাস ভীমজি জাভেরি লিমিটেড), ক্যামাক স্ট্রিট

মেকআপ ও ড্রেপিং: নবীন দাস

ব্লাউজ: প্রীতি দাস

ছবি: আশিস সাহা

লোকেশন: দি আইভি হাউস, কর্মা কেট্‌ল, সুইনহো স্ট্রিট, বালিগঞ্জ

ফুড পার্টনার: বন আপেতি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE