Advertisement
E-Paper

সাধনার পঁচিশ

মধুবনী চট্টোপাধ্যায়ের একক নৃত্যানুষ্ঠানটি দেখে এলেন বারীন মজুমদারসালটা ছিল ১৯৯১। এক কিশোরীর ‘আরেঙ্গাত্রম’ হয়েছিল ভরত নাট্যমের মাধ্যমে বিড়লা সভাঘরে। সে দিনের সেই কিশোরী এখন ভরত নাট্যম শিল্পী মধুবনী চট্টোপাধ্যায় – যিনি তাঁর নৃত্য জীবনের রজতজয়ন্তী বর্ষ পালন করলেন। যে নৃত্যশৈলীর বর্ণ মাধুর্যে মধুবনী আকৃষ্ট হয়েছিলেন কৈশোরে, যৌবনে সেই আকর্ষণ রূপ লাভ করেছিল সন্নিষ্ট সাধনায়।

শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৬ ০০:০৩

সালটা ছিল ১৯৯১। এক কিশোরীর ‘আরেঙ্গাত্রম’ হয়েছিল ভরত নাট্যমের মাধ্যমে বিড়লা সভাঘরে। সে দিনের সেই কিশোরী এখন ভরত নাট্যম শিল্পী মধুবনী চট্টোপাধ্যায় – যিনি তাঁর নৃত্য জীবনের রজতজয়ন্তী বর্ষ পালন করলেন। যে নৃত্যশৈলীর বর্ণ মাধুর্যে মধুবনী আকৃষ্ট হয়েছিলেন কৈশোরে, যৌবনে সেই আকর্ষণ রূপ লাভ করেছিল সন্নিষ্ট সাধনায়।
ভারতীয় নৃত্য জগতের যে সব শিল্পীর শিষ্যত্ব তিনি গ্রহণ করেছেন তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম হল কলানিধি নারায়ণম, গোবিন্দম ও থাঙ্কমনি কুট্টি এবং এখনও রয়েছেন কলামণ্ডলম ভেঙ্কিটের কাছে যিনি এ দিন মধুবনীর সঙ্গে নাটুভঙ্গমে সহায়তা করেছেন। মধুবনীর প্রথম নিবেদনটি ছিল ‘গণেশ কীর্ত্তনম’। যে আনন্দ নৃত্যের পূর্ণ মহিমা বিধৃত করেছেন দেহভঙ্গির বিন্যাস ও বৈভবে প্রথম পদটির ভিতর দিয়ে দ্বিতীয় নৃত্যপদ তুলসীদাস কৃত রামচরিত মানসের ভজনে তাকেও ছাপিয়ে গেলেন। নাচ যেন তখন হয়ে উঠল এক বর্ণময় কবিতা। ভাব, সুর এবং তালের ত্রিবেণী সঙ্গমে নৃত্য ব্যঞ্জনায় সার্থক হয়ে উঠল শ্রী রামচন্দ্রের অপার রূপ বর্ণনা। পরবর্তী নিবেদন ছিল জয়দেব বিরচিত দশাবতার। ভিন্ন ভিন্ন অবতারের রূপ বর্ণনায় প্রাধান্য পেয়েছে গতি, ভঙ্গি এবং অবশ্যই ভাব। এই পর্বে এবং অন্যান্য পদগুলিতেও দেহবিস্তৃতির সঙ্গে আশ্চর্যভাবে ক্রিয়াপর ছিল শিল্পীর দুটি চোখ। এইটাই তাঁকে স্বতন্ত্র করে। তবে যে অন্তর্নিহিত রসের দাক্ষিণ্যে ব্যাকরণ নিয়ম পেরিয়ে কবিতা হয় মধুবনীর নিজস্ব দৃষ্টি ‘নত্তরস নায়কী’ তার চূড়ান্ত উদাহরণ। সকল নারীর ভাষাই যেন এক। আনন্দ ও যন্ত্রণার ভাষাও যখন এক হয়ে যায় যুগে যুগে, কালে কালে তাই তিনি বর্ণনা করেছেন নবরসে কখনও চিত্রাঙ্গদা, কখনও সীতা, কখনও যশোধরা প্রভৃতি চরিত্রগুলির মাধ্যমে। নবরসের বর্ণনাতেও মধুবনীর চোখ দুটি ভারি সংবেদনাময়। বিশেষত শৃঙ্গার এবং ভয়ানক রসের ব্যাখ্যায়। নৃত্যের সার্থকতা সৌন্দর্য সৃষ্টিতে। সেই মুখ্য উদ্দেশ্যটি পূর্ণ থাকলে তাল লয়ের সকল খেলার আয়োজনই যে সার্থক হয় মধুবনীর নাচ যেন তার চূড়ান্ত প্রকাশ। সঞ্চালনায় ছিলেন দেবাশিস বসু ও বিভিন্ন যন্ত্রে তাঁকে সহযোগিতা করেন বাঁশি টি এন চম্পক, সেতার সুখময় চক্রবর্তী এবং কণ্ঠে ছিলেন কলামণ্ডলম রাজেশ মেনন।

যেখানে মুক্তি আছে

অলকানন্দা রায়ের নৃত্যনাট্যে। লিখছেন পিয়ালী দাস

কেউ অপরাধী হয়ে জন্মায় না। পরিস্থিতি বাধ্য করে। এমনটাই মনে করেন নৃত্যশিল্পী অলকানন্দা রায়। বদ্ধ কারাগারের বাইরের পৃথিবীটার সঙ্গে পরিচয় ঘটাতে চেয়েছিলেন আবাসিকদের। তাদের অন্য জীবনের স্বাদ দিয়ে, মুক্তির পথ দেখিয়েছেন। সম্প্রতি তাঁর ভাবনা এবং পরিচালনায় মঞ্চস্থ হল নৃত্যনাট্য ‘ধ্রুবজ্যোতি তুমি যীশু’। এতে অংশগ্রহণ করেছিল প্রেসিডেন্সি, মেদিনীপুর, দমদম এবং আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারের আবাসিকরা। শুধু তাই নয়, এক সময়ে জেলের প্রাক্তন আবাসিকও। হরিয়ানার নরেন্দ্র সিংহ। এদিন তাঁকে দেখা গেল যীশুর ভূমিকায়।

বিড়লা অ্যাকাডেমির মুক্তমঞ্চে আবাসিকরা মঞ্চস্থ করল নৃত্যনাট্যটি। যেখানে মিলে মিশে যায় যীশুর জীবন এবং রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টি। সব মানুষেরই যন্ত্রণা, বোধ, আবেগ, অনুভূতিগুলোও একইরকম। সেই বোধ থেকেই এমন ভাবনা। ‘ক্লান্তি আমার ক্ষমা কর প্রভু’ গান দিয়ে শুরু। যে দৃশ্যে দেখা যায় পিঠে ভারী ক্রশের বোঝা বহন করে যীশু চলেছেন। পিছনে চলেছেন যন্ত্রণাদীর্ণ মাতা মেরি (অলকানন্দা রায়)। এখানে ব্যবহৃত হয়েছে ‘একদিন যারা মেরেছিল’, ‘প্রভু দয়া কর হে’, প্রভৃতি রবীন্দ্রসঙ্গীত। এমনই অনুভূতিতে ধরা পড়ে ক্ষমা, ভালবাসা, মুক্তি’র বাণী। যীশুর মাথায় কাটার মুকুট পরিয়ে মারতে মারতে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য কিংবা অমানবিক অত্যাচারের পরে যীশুকে ক্রশ বিদ্ধ করার দৃশ্য মনকে আহত করে। প্রহরীদের নাচের দৃশ্যে ছৌনৃত্যের প্রয়োগ ভাল লাগে। আলোর ব্যবহারে কাপড় দিয়ে সমুদ্রের ঢেউ তৈরি করা, স্রোতের বিপরীতে মাছেদের ভেসে বেড়ানোর দৃশ্য মনকে আনন্দ দেয়।

ওগো তুমি পঞ্চদশী

বৈতালিক-এর অনুষ্ঠানে

রবীন্দ্রসদনে ‘বৈতালিক’-এর বার্ষিক অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল রবীন্দ্রনাথের ‘সানাই’ কাব্যগ্রন্থের কবিতা ও প্রাসঙ্গিক গান অবলম্বনে সঙ্গীতালেখ্য ‘অধরা মাধুরী’। একক গানে দেবারতি সোমের ‘ওগো তুমি পঞ্চদশী’-তে সুরের সূক্ষ্ম কারুকাজ, আবার ‘তুমি কোন ভাঙনের পথে’-ও আবেদনময়। স্বপন সোমের ‘এই উদাসী হাওয়ার’ বা ‘যদি হায় জীবনপূরণ’ অনুভবী নিবেদন। দেবারতির সুপরিচালনায় প্রায় শতকণ্ঠে পরিবেশিত সম্মেলক গানগুলির প্রতিটি সুমিলিত ও উজ্জ্বল। সঙ্গীতাংশকে যোগ্য সহযোগ দেয় উর্মিমালা বসু, সুমন্ত্র সেনগুপ্ত, বিশাখা মুখোপাধ্যায়ের বোধসম্পন্ন কবিতা পাঠ।

অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ‘বৈতালিক’-এর ছাত্রছাত্রীদের পরিবেশনায় রবীন্দ্রনাথের বর্ষার গান অবলম্বনে ‘আজ শ্রাবণের আমন্ত্রণে’ বেশ উপভোগ্য। একক গানে মোনালিসা দে, গার্গী গোস্বামী, ঝুমা দত্ত, ইন্দ্রাণী দাস, সরস্বতী সোরেন প্রমুখ যোগ্যতার পরিচয় দিয়েছেন।

নবরঙের নৃত্য

পিনাকী চৌধুরী

অবনমহলে অনুষ্ঠিত গন্ধর্বলোক কলাকেন্দ্রের অনুষ্ঠানের শুরুতেই ছিল সংস্থার ছাত্রছাত্রীদের নৃত্যানুষ্ঠান ‘নবরঙ’। পরিচালনায় শ্যামল মহারাজ। এর পর ‘পঞ্চতাল’। কত্থক আঙ্গিকে, তিনতাল, ধামার, রূপক, ঝাঁপতাল প্রভৃতির মিশ্রণে পরিবেশিত নৃত্যানুষ্ঠানটি নজর কাড়ে। ভাল লাগে ওড়িশি নৃত্যের মঙ্গলাচরণ। সংস্থার শিশু শিল্পীরা পরিবেশন করে নৃত্য ‘ধিনিক তাতা ঢোলক বাজে’। যা অনবদ্য। ‘ব্যালে নৃত্য’-র পরিবেশনও মন্দ লাগে না। অংশ নিয়েছিল পায়েল ঘোষ, পাপড়ি ঘোষ, অনন্যা ভৌমিক, সিঞ্জিনি চৌধুরী প্রমুখ। এ দিনের সেরা প্রাপ্তি ‘দশাবতার নৃত্য’। অরুণিমা পাল এবং চন্দ্রিমা চৌধুরীর নৃত্যবিন্যাস নজর কাড়ে। এক নতুন আঙ্গিকের নৃত্য ‘কথকমালা’। যাতে শ্যামল মহারাজ অনবদ্য তবলা বাদনের মাধ্যমে সওয়াল করেন এবং তাঁর ছাত্রীরা নিখুঁত নৃত্যের মাধ্যমে জবাব দেন। অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন গীতালি বসুআইচ। ভাষ্যপাঠে ছিলেন অমিত রায়।

বসন্তের ডাকে

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে শিখা চৌধুরী শোনালেন বেশ কয়েকটি রবীন্দ্রসঙ্গীত। তার মধ্যে ‘একটুকু ছোঁয়া লাগে’ যেন বসন্তের পরিবেশ গড়ে তোলে। এ ছাড়াও গাইলেন ‘তুমি কিছু দিয়ে যাও’ এবং ‘আমার প্রাণের পরে’ মন ছুঁয়ে যায়। পরের গানগুলি ছিল সুনির্বাচিত।

মিলন-মুক্তি

পিনাকী চৌধুরী

স্বল্প পরিসরের এই জীবন তো মিলনেরই কাব্য। রবীন্দ্রনাথের গানে যেন বারবার মিলনের কথা এসেছে, সেখান থেকেই যেন আমরা মুক্তির স্বাদ গ্রহণ করি।

সম্প্রতি দক্ষিণ কলিকাতা সংসদে রাগা মিউজিকের তরফে অনুষ্ঠিত হল অরূপ এবং বিদীপ্তার রবীন্দ্রগীতি আলেখ্য ‘মিলন মুক্তি’। এছাড়াও ছিল তিন জন শিশু শিল্পী। ঊদিষা, শ্রেয়ান এবং শিবানী। এ দিন বিদীপ্তা অরূপের কণ্ঠে ‘শ্রাবণের ধারার মতো’ গানটি অন্য মাত্রা পায়। অন্য গানগুলিও মন্দ নয়। সঞ্চালনায় ছিলেন মৌসুমী।

শুধুই পাঠ

সুজাতা সদনে অনুষ্ঠিত আবৃত্তি-উত্তমের অনুষ্ঠানের শুরুতেই সঙ্গীত পরিবেশন করেন মৌমিতা বসু। আবৃত্তি পরিবেশন করেন অন্তরা দাশ, অপূর্ব দত্ত, অপরাজিতা মল্লিক, মেঘনা সেনগুপ্ত, মৌনীতা মুখোপাধ্যায়, রোকেয়া রায়, বাসুদেব নন্দী প্রমুখ। অর্ণব চক্রবর্তীর পরিচালনায় কবি দেবব্রত দত্তের রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে আলেখ্যটি অন্য মাত্রা দেয়। সঞ্চালনায় ছিলেন অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় ও মৌলি।

গানের সুরে

সম্প্রতি বিড়লা অ্যাকাডেমিতে বসেছিল ওড়িশি নৃত্যানুষ্ঠান ও রবীন্দ্রসঙ্গীতের আসর। আয়োজক ‘পায়েল’ সংস্থা। অনুষ্ঠানে নৃত্যশিল্পীদের সকলেই দর্শকদের নজর কাড়েন। তবে অনুষ্ঠানে অন্য মাত্রা এনে দেয় সহেলি গোস্বামীর রবীন্দ্রসঙ্গীত। তাঁর গাওয়া গানগুলি শ্রোতাদের মনে দাগ কাটে।

নদীর গল্প

পিনাকী চৌধুরী

ইজেডসিসিতে বাগুইআটি সৃষ্টি কলাকেন্দ্রের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছোট-বড়দের গান ও আবৃত্তির অনুষ্ঠানটি ছিল ছিমছাম। গানে-গল্পে ‘হিংসুটে দৈত্য’ মন টানে। অনিন্দিতা চক্রবর্তীর পরিচালনায় ‘নদীর গল্প’ আলেখ্যটি বর্তমান প্রেক্ষাপটে প্রাসঙ্গিক। প্রশংসার দাবি রাখে সঞ্জয় চক্রবর্তীর মঞ্চ ভাবনা। পাশ্চাত্য নৃত্যের আঙ্গিকে রাজা সরকারের ‘বন্দেমাতরম’ নিখুঁত উপস্থাপনা।

short stories patrika music play
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy