Advertisement
E-Paper

আজ পুজো দিবস

অগস্টের ১৫ থেকেই যে শুরু হয়ে গেল কাউন্ট ডাউন! জেনে নিন এ বারের ফ্যাশন-ট্রেন্ড নিয়ে ডিজাইনাররা কী বলছেন। জানাচ্ছেন সংযুক্তা বসুহট প্যান্টে ক্যাটরিনা কইফ। নাকি শাড়ি-পরা সোনাক্ষী সিংহ? এ বার পুজোয় বাঙালি মেয়েদের ফ্যাশনের আইকন কে? নেটে সার্চ করলে হরেক রকম নকশা চোখের সামনে ভেসে উঠছে। হিরোইন, মডেল— সবাই যে যাঁর ডিজাইনারদের তৈরি পোশাকে, এ বলে আমায় দ্যাখ ও বলে আমায়। কিন্তু আপনাকেও তো অদ্বিতীয়া হতে হবে। আর সেটা বাস্তবে দাঁড়িয়ে। শুধুই নেটের তথ্য দিয়ে নয়।

শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৪ ০০:১৫
অগ্নিমিত্রা পলের ডিজাইনে ইক্কতের গাউন। ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল

অগ্নিমিত্রা পলের ডিজাইনে ইক্কতের গাউন। ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল

হট প্যান্টে ক্যাটরিনা কইফ। নাকি শাড়ি-পরা সোনাক্ষী সিংহ?

এ বার পুজোয় বাঙালি মেয়েদের ফ্যাশনের আইকন কে?

নেটে সার্চ করলে হরেক রকম নকশা চোখের সামনে ভেসে উঠছে। হিরোইন, মডেল— সবাই যে যাঁর ডিজাইনারদের তৈরি পোশাকে, এ বলে আমায় দ্যাখ ও বলে আমায়। কিন্তু আপনাকেও তো অদ্বিতীয়া হতে হবে। আর সেটা বাস্তবে দাঁড়িয়ে। শুধুই নেটের তথ্য দিয়ে নয়।

প্রথমত শাড়ি তোমাকে চাই

পুজো বাঙালিয়ানায় ভরপুর একটা উৎসব, তাই শাড়ি ছেড়ে অন্য ড্রেসের কথা ভাবতেই পারেন না ডিজাইনার প্রণয় বৈদ্য।

ডিজাইনার প্রণয় বৈদ্য, অ্যান্টিক সিলভার সিক্যুইন বসানো লেহেঙ্গা শাড়ি, পাড়ে রাজস্থানি গোটা পাত্তির কাজ।

গরদের শাড়িতে বেনারসির পাড় বসিয়ে তিনি তৈরি করেছেন এক অভিনব শাড়ি। সঙ্গে ব্রোকেডের ব্লাউজ। বললেন, “উত্তর কলকাতার বনেদি বাড়ির পুজোগুলোয় দিদি-বৌদি থেকে মা-মাসিমারা প্রত্যেকেই এই ধরনের শাড়ি পরা পছন্দ করবেন বলে আমার ধারণা।”

আর ভরযুবতী মেয়েরা, তাঁরাও কি শাড়ি সামলাবেন পুজোয়? “অবশ্যই। সেই ভাবেই তো বানিয়েছি জেন ওয়াই শাড়ি। খুব জমকালো সেই শাড়ির নাম লহেঙ্গা শাড়ি। আঁচলের দিকটা ভারী। কুচির দিকটা তিন লহরী দিয়ে স্টিচ করা। দেখতে অনেকটা লহেঙ্গার মতো কিন্তু আসলে শাড়ি। রয়েছে কলিদার লহেঙ্গা শাড়িও। কোমরের ঘেরা থেকে পা পর্যন্ত যার কলিদার কাট। হাঁটু থেকে আরও একটা ঘেরা দেওয়া যেতে পারে যাতে যে মেয়ে পরবে তাঁকে ‘গডেস গডেস’ দেখাবে,” হাসতে হাসতে বললেন প্রণয় বৈদ্য।

এ বার পুজোয় নেটের শাড়িতে থাকছে মুক্তোদানা। পার্লড্রপ। নকশা মানে এমব্রয়ডারি আঁচল। সেই রকমই ভারী পাড়। কিন্তু মুক্তোর দ্যুতিতেই উজ্জ্বল এই শাড়ির নীচে থাকছে শেডেড পেটিকোট।

পুজোর পরই আসে বিয়ের মরসুম। তাই অনেকেই এই ধরনের জমকালো শাড়ি কিনে রাখেন পুজোতেই, বিয়ের অনুষ্ঠানগুলোতে পরবেন বলে। “তা ছাড়া শাড়ির বাজার বিশ্বজুড়ে। শীতপ্রধান দেশে তো এখনই শীত এসে গিয়েছে। তাই ভারী শাড়ি পরার রেওয়াজ সেখানে বেশি বলেই ডিজাইনাররা হেভিওয়ার্কের শাড়ি বানাচ্ছেন।” জানালেন প্রণয়।

নানা ডিজাইনারের অভিমত নিয়ে জানা গেল এবার ঝকমকে পাথরের রং শাড়ির পাড়ে, আঁচলে শোভা পাবে, হিরে, মুক্তো, গোমেদ, পোখরাজ পান্না, চুনীর রঙের এফেক্ট। নানা রঙের সিলভার পাড়ের শেড থাকবে শাড়িতে ও আঁচলে। এমনটাই অনুমান করছেন প্রণয়।

শাড়ি নয়, অন্য কিছু

ইক্কতের শাড়ি খুব জনপ্রিয়। নিজের কালেকশনে পুজোর জন্য অগ্নিমিত্রা পল ইক্কত সিল্কের ম্যাক্সিগাউন বানিয়েছেন। ইচ্ছে করলে বাজার থেকে নানা ধরনের সিল্ক বা ইক্কত সিল্ক কিনে ক্যাটালগ দেখে এই রকমই ম্যাক্সিগাউন বানানোর পরামর্শ দিলেন অগ্নিমিত্রা পল।

ইক্কতের ডিজাইন খুব স্মার্ট বলেই ডিজাইনার ওয়্যারে মানায়, বলছেন অগ্নিমিত্রা। ক্রোশিওর স্কার্টের সঙ্গে চলতে পারে লং জ্যাকেট। জারদৌসি করা। এই স্কার্ট শাড়ির সঙ্গেও পরা যায়। পেটিকোটের বদলে স্কার্টকে ব্যবহার করে শাড়ি জড়াতে হবে। চুড়িদারের সঙ্গেও জ্যাকেটটা আলাদা করে পরা যেতে পারে। এটা মাল্টিপারপাস আউটফিট। পুজো, দেওয়ালি দুটোতেই ভাল চলবে। ছবিতে মডেল মাধবীলতা এই রকমই জ্যাকেট লংস্কার্টই পরেছেন।

তবে তাঁর শেষ কথা একটাই—যেমনই সাজুন চোখের সাজই সব চেয়ে বড় সাজ। কাজল, ম্যাসকারা, লাইনার তো আছেই, সেই সঙ্গে আরও নানা রকম প্রসাধন এখন বাজার ছেয়ে। পোশাক পরার আগে ঠিক করে নিন, কোন পোশাকের সঙ্গে কেমন হবে নয়নের সাজ।

ত্রিনয়নীকে ঘিরে উৎসব। চোখের সাজ যেন এমন হয় আপনিও হয়ে উঠতে পারেন ত্রিনয়নী।

এমন ব্যঞ্জনাই যোগ করলেন অগ্নিমিত্রা তাঁর কথার শেষে। আরও একটি তথ্যও তিনি দিলেন। বললেন, “ছাপার বদলে যদি পুজোয় অন্য কিছু পরতে মন চায় বাজারে আসছে নানা ধরনের পাথরের এমবেলিশমেন্ট করা গাউন, ও অন্য সব ড্রেস।” তাঁর মতে শ্রাগ আর ক্লোক দুটোই যে কোনও পোশাকের উর্ধ্ববাস হবে এবার। শাড়ির সঙ্গে ক্লোক খুব ভাল মানাবে। গলার কাছে একটা মাত্র বোতাম লাগানো থাকবে।

চন্দ্রাণী সিংহ ফ্লোরার ডিজাইনে ওয়েস্ট কোট নকশা করা, সঙ্গে ভারী সিল্কের প্যালাজো।

ফোক মোটিফে বাজিমাত

ডিজাইনার পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার পুজোর জন্য মাহেশ্বরী সিল্কের ওপর নানা রঙের বুনোটে শাড়ি বানিয়েছেন। রেশমে এনেছেন ঢাকাই জামদানির মোটিফ। কিন্তু শাড়ির পাশাপাশি যাঁরা এক্সপেরিমেন্টে বিশ্বাসী তাঁদের জন্য ফোক মোটিফের টিউনিক কুর্তা, কুর্তি পরার পরামর্শ দিচ্ছেন পারমিতা।

নিজের কালেকশনে কচ্ছের আজরাকপুরের ফোক মোটিফ ব্যবহার করে বানিয়েছেন টিউনিক। বললেন, “আজরাক প্রিন্টের টিউনিক শুধু আমার কাছে পাওয়া যাবে, কিন্তু যে কোনও বড় দোকানে বা শোরুমে এবার ফোক মোটিফেই পাওয়া যাবে ইন্দো ওয়েস্টার্ন ফিউশন ড্রেস। পাতিয়ালার সঙ্গে ফোক মোটিফের টপ— সে কুর্তি বা কুর্তা হোক বা টিউনিক খুব ভাল দেখায়। কিন্তু আনারকলি যদি পরতেই হয় দর্জির কাছে ডিজাইন করে বানিয়ে পরাই ভাল। তা না হলে শরীর অনুপাতে বেঢপ দেখাতে পারে।”

হাম্পটি শর্মা কি দুলহানিয়া

বেশির ভাগ ডিজাইনারই পুজোর সময় শাড়ি পরার কথা বলেন। কিন্তু অল্পবয়েসি মেয়েরাও কি ষষ্ঠী থেকে দশমী শাড়ি পরেই ঘুরে বেড়াবে রোজ? তাও এত গর্জাস শাড়ি?

সোনালি জরি দিয়ে কুরুশের কাজ স্কার্টে, সঙ্গে লং জ্যাকেট, অগ্নিমিত্রা পলের ডিজাইন।

হেসে বললেন চন্দ্রাণী সিংহ ফ্লোরা, “না না, তা কি হয় নাকি। আলিয়া ভট্ট, দীপিকা পাড়ুকোনদের অনুসরণ তো থাকবেই। ‘হাম্পটি শর্মা কি দুলহানিয়া’ ছবিতে আলিয়া ভট্ট যে পাতিয়ালা পরেছেন, ঝুমকো পরেছেন, রঙিন বালা পরেছেন তার হবহু অনুকরণ হবে এই বারের পুজোয়।

আবার হট প্যান্টও চলবে। তবে এ সব জিনিস পাওয়া যাবে হয় ডিজাইনারদের কাছে, নয়তো বা বিভিন্ন বড় বড় শপিং কমপ্লেক্সের শো রুমে ব্র্যান্ডেড পোশাকে।

ছোট কুর্তির সঙ্গে চলবে ডিভাইডেড প্যালাজো, ঘের দেওয়া স্কার্ট। আর হাই ওয়েস্ট মিড লেংথ স্কার্ট এখন ইন।”

বোঝে না সে বোঝে না

এই মুহূর্তে জনপ্রিয়তম সিরিয়াল ‘বোঝে না সে বোঝে না’-র নায়িকা পাখির পোশাক নিয়ে হুলস্থূল কাণ্ড। বাংলাদেশের কোনও এক মেয়ে ঈদে পাখি ড্রেস না পাওয়ায় আত্মহত্যা করেছে। আর এক জন স্বামীকে ডিভোর্স দেবেন-দেবেন করছেন।

‘বোঝে না সে বোঝে না’-র কস্টিউম ডিজাইনার পুনম ঝা বলছেন, “সুতির ওপর ফ্লোরাল প্রিন্টের ছাপার মধ্যে উজ্জ্বল স্নিগ্ধতাই এই সালোয়ার কামিজের বৈশিষ্ট্য। পুজোতে অনেক মেয়েই এই ধরনের সালোয়ার কামিজ খোঁজ করবেন। তবে একে আনারকলি বলাই ভাল।

আনারকলির সঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে পিংপং দুল। একে আমরা বলছি পমপম দুল। পায়ে রংবাহারি কোলাপুরি চটি। প্রেমের গল্পে সুন্দর সাজ দেখে মেয়েরা রোমান্টিক মন নিয়েই এই আনারকলি খোঁজ করছে,” বলেন পুনম। তিনি আরও জানালেন, “তা ছাড়া আমরা ভারী এমব্রয়ডারি করাভেলভেটের, সিল্কের ঘাগরাও ব্যবহার করেছি। পুজোয় এই ধরনের ঘাগরার খুব ক্রেজ হবে বলে মনে হয়।”

পুজোর ফ্যাশনে এখন হরেক সম্ভার। আর মাত্র কিছু দিন বাকি। এখনই ঠিক করে নিন কোন দিন কী পরবেন। বাজারে কিন্তু প্রচণ্ড ভিড়। আর এই ভিড়টা বাড়বে বৈ কমবে না!

ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল। মডেল: মাধবীলতা।

sanjukta basu agnimitra paul agnimitra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy