রমেন লাহিড়ি-র লেখা ‘রাজযোটক’ নাটকটির বয়েস হয়েছে ঢের। আজকের সময়ের আঁচ পড়েনি সেই নাটকের গায়ে। অথচ, ‘শৈলিক নাট্য সংস্থা’র অভিনয়ের জোরে সেই নাটকটিই হয়ে ওঠে দমফাটা হাসির উপভোগ্য প্রযোজনা। আবার, বিরতির পর যখন শুরু হয় চন্দন সেন-এর লেখা ‘ফিরে দেখা’, তাতে সময়ের দাগ অনিবার্য। বাড়ির চাকর হারু মাসপয়লায় হাঁড়ি ফাটানোর হুমকি দিয়ে আপাত সুখী পরিবারের মুখোশের আড়ালে থাকা ভয়ঙ্কর সব মুখ প্রকাশ্যে নিয়ে আসে। তার পর, মাসপয়লায় আর তাকে খুঁজে পাওয়া যায় না। বাড়ির মানুষগুলো পরস্পরের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে মুখোশহীন হয়ে।
দুটি নাটকই উপভোগ্য। বিশেষ করে উল্লেখ করতে হয় দুটি নাটকেরই প্রধান চরিত্র প্রবীর বসুর কথা। রাজযোটক-এ তিনি গ্রাম্য, খানিক উচ্চকিত, এক চরিত্র। ফিরে দেখা-য় তিনি হারু, সেই চাকর, যার ভয়ে তটস্থ হয়ে আছে গোটা পরিবার। প্রথম নাটকটিতে অন্তিকা চট্টোপাধ্যায় এবং দ্বিতীয়টিতে শ্যামলী আদক পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছেন। গৌরীদাস বসাকও দুটি নাটকেই করেছেন যথাযথ অভিনয়। তবে, খামতিও আছে অনেকগুলি। দ্বিতীয় নাটকে গৃহকর্তা বিমলেশের ভূমিকায় তপন কুণ্ডুর উচ্চারণ কানে লেগেছে। নাটকের প্রয়োজনে ইংরেজি শব্দ যদি বলতেই হয়, তবে তার উচ্চারণ চর্চা করে নেওয়া ভাল। পুলিশের ডিএসপি-র ভূমিকায় শান্তনু চট্টোপাধ্যায় একেবারেই বেমানান। প্রবীর বসুর অভিনয় ক্ষমতা অনস্বীকার্য, কিন্তু দুটি নাটকেই মুখ্য চরিত্রের ভার বহনের কাজটা বেশ কঠিন। মঞ্চসজ্জা, আলো সাদামাঠা।
রাজনৈতিক ভাবনার প্রতিফলন
সুপ্রতিম রায়ের নাটকে। লিখছেন শিখা বসু
থার্ড বেলের আগেই যখন একটা কোরাস চিৎকার শোনা যায় তখনই বুঝে নিতে হয় অন্য কিছু বলতে চায় নির্দেশক। অসাধারণ কোরিওগ্র্যাফি, বিশেষত প্রথম দৃশ্যে ফ্যাতাড়ুদের ওড়ার দৃশ্য। কোনও টেকনোলজি নয়, শুধু শরীরী অভিনয়। যা গোত্রহীনের স্বতন্ত্র সম্পদ। বাবলু সরকারের আলো খুবই সাদামাঠা। ম্যাজিক রিয়্যালিজমকে ধরতে আলোর আরও একটু ভাবনাচিন্তার প্রয়োজন ছিল। আবহ ও সঙ্গীতে শুভদীপ গুহ অনবদ্য। বিশেষ করে টাইটেল সং অনবদ্য। শরীরী ভঙ্গি, সংলাপ বলার ভঙ্গি সব নিয়ে অসাধারণ ডিএস চরিত্রে শুভ্রাংশু মুখোপাধ্যায়। পুরন্দর ভাট (পাভেল পাল) কোথাও কোথাও চরিত্রটি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে, এমনকী তার রাজনৈতিক বোধ ও বিশ্বাসটাও আমাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না। ঢনঢনিয়া (সুমন নন্দী) অসাধারণ অভিনেতা। অন্যান্য অভিনেতারা সঠিক ভাবেই নাটকটির মধ্যে ছিলেন। তবে এই সময়ে দাঁড়িয়ে উল্টো কথা বলার সাহস নবারুণের মতোই সুপ্রতিম দেখালেন, এবং তা নবারুণের হাত ধরে।
নিঃসন্দেহে অন্যতম
লিখছেন মনসিজ মজুমদার
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy