E-Paper

আকাশ-ছোঁয়া স্বপ্ননির্মাণে জাদুকরী স্পর্শ

বক্রতলের আশ্চর্য ব্যবহার, কোনও দেওয়ালের সংযোগস্থলে সমকোণ না রাখা ইত্যাদি নানা কারণে প্রথম জীবনে বার বার অমনোনীত হয়ে ফিরে এসেছে তাঁর স্থাপত্য-নকশা। কিন্তু তাঁকে আটকানো যায়নি। নিজস্ব শৈলীতে তিনি মুগ্ধ করেছিলেন বিশ্ববাসীকে। তাঁর নাম জাহা হাদিদ। তিনি প্রথম মহিলা, যিনি পেয়েছিলেন বিশ্বের স্থাপত্যকলার সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘প্রিটজ়কার আর্কিটেকচার প্রাইজ়’।

শুভব্রত নন্দী

শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৫ ০৬:৩৬
শিল্পস্থপতি: ব্যতিক্রমী রূপকার জাহা হাদিদ।

শিল্পস্থপতি: ব্যতিক্রমী রূপকার জাহা হাদিদ।

সেপ্টেম্বর, ২০১৩। জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে উড়ে যাওয়ার জন্য অন্য সহযাত্রীদের সঙ্গে প্লেনের মধ্যে অপেক্ষা করছেন তেষট্টি বছরের এক সপ্রতিভ, সুবেশা ইরাকি ভদ্রমহিলা। পার্কিং বে থেকে প্লেনটি বেরিয়ে রানওয়ের দিকে যাওয়ার জন্য তৈরি, হঠাৎ পাইলটের চোখে পড়ে যান্ত্রিক গোলযোগ। পার্কিং বে-তে ফিরে আসেন তিনি। কেবিন ক্রু-রা কিছুটা সময় চেয়ে নেন মেরামতির। বাকি যাত্রীরা অপেক্ষা করলেও কিছুক্ষণ পরই সেই ভদ্রমহিলার ধৈর্যচ্যুতি ঘটে। তিনি তাড়া দিতে থাকেন, কারণ ফ্রাঙ্কফুর্টে তাঁর পৌঁছতে দেরি হয়ে যাবে— সেখানে তিনি চলেছেন এক আন্তর্জাতিক সেমিনারে বক্তৃতা দিতে। দেশ-বিদেশের অতিথিরা অপেক্ষা করে আছেন।

বিমানসেবিকারা তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, বেশি সময় লাগবে না। তিনি তা বিশ্বাস করতে নারাজ। দাবি করে বসেন, তখনই ওঁকে অন্য কোনও ফ্লাইটের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। কিন্তু তা যে এক রকম অসম্ভব, পাইলট-সমেত বাকি কেবিন ক্রু-রা অনেক চেষ্টা করেও তা বোঝাতে না পেরে প্লেন থেকে নামিয়ে দেওয়ার সতর্কবাণীও শুনিয়ে দেন। রীতিমতো বাক্‌যুদ্ধ শুরু হয়ে যায় দু’পক্ষের। হঠাৎ এক জন বিমানসেবিকার চোখে পড়ে তাঁদের ইন-ফ্লাইট ম্যাগাজ়িনের তৎকালীন সংস্করণটির প্রচ্ছদ, কয়েক মুহূর্ত পরেই যেটি সব যাত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হবে। চমকে ওঠেন তিনি। যাঁর সঙ্গে এই তুমুল অশান্তি চলছে, প্রচ্ছদে তাঁরই পাতাজোড়া ছবি! তাঁকে নিয়েই তাদের ইন-ফ্লাইট ম্যাগাজ়িনের কভার স্টোরি।

বিমানসেবিকা কাঁপা-কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করেন, “আপনি কি জাহা হাদিদ?”

উত্তর শুনে মুহূর্তে নিস্তব্ধ গোটা প্লেন। নাম সবাই জানেন, কিন্তু এ ভাবে সামনাসামনি দেখেননি কেউ। জাহা হাদিদ! ‘কুইন অব দ্য কার্ভ’! বিশ শতকের শেষ দেড় দশক থেকে একুশ শতকের প্রথম দেড় দশক সময়কালে পুরুষ আধিপত্যশীল আর্কিটেক্ট বা স্থপতিকুলে এক অবিস্মরণীয় প্রতিভাধর মহিলা স্থপতি। ২০০৪ সালে চুয়ান্ন বছর বয়সে প্রথম মহিলা হিসেবে যিনি পেয়েছেন বিশ্বের স্থাপত্যকলার সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘প্রিটজ়কার আর্কিটেকচার প্রাইজ়’, যেটিকে নোবেল প্রাইজ়ের সমগোত্রীয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। নাম বলার সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেল পরিস্থিতি। অসম্ভব সম্ভব হয়ে গিয়ে ব্যবস্থা হয়ে গেল পরিবর্ত ফ্লাইটের।

ঘটনাটি লিপিবদ্ধ করেছেন লন্ডনের বিখ্যাত ‘দি অবজ়ারভার’ পত্রিকার শিল্প-সমালোচক রোয়ান মুর। এটি প্রকাশিত হয় ‘দ্য গার্ডিয়ান’ সংবাদপত্রে। ফ্রাঙ্কফুর্টের সেই আন্তর্জাতিক সেমিনারে রোয়ান মুর ছিলেন জাহা হাদিদের ‘ইন্টারলোকিউটর’, যাকে বলে কথোপকথন সহকারী।

জাহা হাদিদ সম্পর্কে এমন আরও অনেক ঘটনা আছে, যা শুনলে মনে হবে গল্পকথা। যে পেশায় চিরকাল পুরুষের একচেটিয়া আধিপত্য, যেখানে তাঁর কর্মজীবনের শুরুর দিকে প্রায় সত্তর শতাংশ ডিজ়াইন অমনোনীত হয়ে ফিরে আসত প্রযুক্তিগত ভাবে তৈরি করা সম্ভব নয় এমন কারণ দেখিয়ে, সেখানে নিজের তৈরি পথ পাড়ি দেওয়ার দৃঢ় সঙ্কল্প, যে কোনও ব্যবহারিক সীমাবদ্ধতাকে পদে পদে চ্যালেঞ্জ জানানো, স্থাপত্যকলার প্রচলিত আকার-আয়তনের ধরনধারণের বিরোধিতা করে তিনি যে ভাবে বিশ্বের প্রথম সারির অন্যতম সেরা স্থাপত্যশিল্পী হয়ে ওঠেন, সে উত্থান রূপকথাকেও হার মানায়।

১৯৫০ সালের ৩১ অক্টোবর ইরাকের বাগদাদে তাঁর জন্ম, পুরো নাম দেম জাহা মহম্মদ হাদিদ। ২০১৬ সালের ৩১ মার্চ আমেরিকার ফ্লোরিডা রাজ্যের মিয়ামি শহরে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে পঁয়ষট্টি বছর বয়সে তাঁর আকস্মিক প্রয়াণ। বাবা মহম্মদ হাদিদ ছিলেন এক জন উদারপন্থী ইরাকি রাজনীতিবিদ ও শিল্পপতি। জাহাকে নিয়ে তিনি ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণে বেরোতেন, যাতে শিশুমনে নানা দেশ, নানা সংস্কৃতির ছাপ পড়ে, বিভিন্ন বিষয়ে আগ্রহ জন্মায়।

স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে জাহা বেইরুটের আমেরিকান ইউনিভার্সিটি থেকে ১৯৭১ সালে গণিতশাস্ত্রে স্নাতক হন। ছোট থেকেই স্থাপত্যশিল্পের প্রতি তাঁর আগ্রহ থাকার ফলে ভর্তি হন লন্ডনের বিখ্যাত আর্কিটেকচারাল অ্যাসোসিয়েশন স্কুল অব আর্কিটেকচার-এ। এক নতুন দিগন্ত খুলে যায় তাঁর সামনে। ক্রমশ স্ফুরণ ঘটে তাঁর প্রতিভার। ১৯৭৭ সালে আর্কিটেকচারাল অ্যাসোসিয়েশনের সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ ডিপ্লোমা পুরস্কার লাভ করেন।

ছোটবেলায় এক বার বাবার সঙ্গে সুমেরীয় সভ্যতার শহর দেখতে গিয়েছিলেন জাহা। সেই শহরের স্থাপত্যের সরলরৈখিক আকার, বিভিন্ন উচ্চতার প্লাটফর্ম, বাঁধানো দেওয়াল এবং পোড়ামাটির কোণ বা আঁকা রিলিফ ব্যবহার করে জটিল সাজসজ্জার নকশা তাঁকে ওই বয়সেই এত প্রভাবিত করেছিল যে, পরবর্তী কালে একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “সুমেরীয় সভ্যতার শহরগুলি দেখে আমার মনে হয়েছিল সেই ভূদৃশ্যের সৌন্দর্যের মধ্যে বালি, জল, নলখাগড়া, পাখি, দালানকোঠা, বাড়ি এবং মানুষ সবাই এক সঙ্গে প্রবাহিত হয়ে চলেছে। ছোটবেলায় দেখা সেই সৌন্দর্যে আমি এখনও মোহাবিষ্ট।” জাহা হাদিদের সেরা স্থাপত্যগুলির মধ্যে কিন্তু সেই নানা অপ্রতিসম আকার-আয়তনের এক অদ্ভুত ছন্দোময় সহাবস্থান লক্ষ করা যায়, যা তাঁকে বিশ্বজোড়া খ্যাতিএনে দিয়েছিল।

তবে তাঁর এই উত্থান মোটেও সহজ ছিল না। পদে পদে নানা বাধার মুখোমুখি হতে হয়েছে তাঁকে। প্রখ্যাত ফরাসি দার্শনিক জাক দেরিদা-প্রবর্তিত বিনির্মাণবাদ বা ‘থিয়োরি অব ডিকনস্ট্রাকশন’— যা উত্তর-আধুনিকতার একটি মৌলিক উপাদান— সেই সময়ে শিল্প, সাহিত্যের বিভিন্ন শাখার পাশাপাশি স্থাপত্যের গঠন-ভাবনাতেও যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছিল। এই বিনির্মাণবাদকে ভিত্তি করেই জন্ম নেয় পোস্ট-মডার্ন বা উত্তর-আধুনিক স্থাপত্যশৈলী, যার পোশাকি নাম ‘ডিকনস্ট্রাকটিভিজ়ম’।

শিল্পভাবনার শুরুর দিকে জাহাকে খুবই অনুপ্রাণিত করেছিল বিখ্যাত রাশিয়ান চিত্রশিল্পী কাজ়িমির মালেভিচের ছবি। বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে চিত্রকলায় বিশুদ্ধ জ্যামিতিক বিমূর্ততার আন্দোলন যা ‘সুপ্রিম্যাটিজ়ম’ বা অতিপ্রাকৃতবাদ নামে পরিচিত, তা প্রথম মালেভিচের ছবিতেই দেখা গেছিল ১৯১৩ সাল নাগাদ। নানা ধরনের জ্যামিতিক আকার ন্যূনতম রঙের ব্যবহারে বিভিন্ন কৌণিক তলে প্রতিস্থাপিত হয়ে এমন দৃশ্যপট তৈরি করে, যা এক বিশুদ্ধ শৈল্পিক অনুভূতি এবং বস্তুজগতের বাইরে এক উচ্চতর আধ্যাত্মিক চেতনার জন্ম দেয়।

জাহা হাদিদ তাঁর স্থাপত্য-সৃজনে এই ‘সুপ্রিম্যাটিজ়ম’-এর সঙ্গে মিলিয়ে দিলেন ‘ডিকনস্ট্রাকটিভিজ়ম’কে। উচ্চতর আধ্যাত্মিক চেতনা সম্বলিত বিশুদ্ধ শৈল্পিক অনুভূতির সঙ্গে স্থাপত্যকলার উত্তর-আধুনিকতার মিশেল। সৃষ্টি হল স্থাপত্যের নতুন ভাষা। এই শৈলীর প্রয়োগেএকের পর এক চমকপ্রদ স্থাপত্যের নজির গড়েন জাহা হাদিদ।

গত শতকের আশির দশকে, সময়ের চেয়ে এগিয়ে থাকা সেই সমস্ত স্থাপত্য-নকশার অধিকাংশই অনুমোদিত হয়নি কোথাও। ১৯৭৭ সালে স্নাতক, ১৯৭৯ সালে লন্ডনে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন নিজস্ব প্রতিষ্ঠান ‘জাহা হাদিদ আর্কিটেক্টস’। স্নাতক হওয়ার পর তাঁর করা নকশার বাস্তবায়নের জন্য প্রায় ষোলো বছর অপেক্ষা করতে হয় তাঁকে। ১৯৯৩ সালে তাঁর প্রথম নকশা বাস্তবায়িত হয় জার্মানির ওয়েল-আম-রেন শহরে, যা ‘ভিট্রা ফায়ার স্টেশন’ নামে বিখ্যাত। এটি একটি ছোট দোতলা কাঠামো, যা বেশ কিছু তীক্ষ্ণ কৌণিক আকার দিয়ে পৃষ্ঠতলে সংযুক্ত। দূর থেকে দেখলে যাকে একটি উড়ন্ত পাখির মতো লাগে। আক্ষরিক অর্থেই এটি জাহা হাদিদের স্বপ্নের উড়ান। উত্তর-আধুনিক স্থাপত্যকলার জগতে শুরু হল এক নতুন অধ্যায়।

ইউরোপের গণ্ডি ছাড়িয়ে জাহার নাম ছড়িয়ে পড়ল অন্যান্য দেশে। মানুষকে আকৃষ্ট করল স্থাপত্যকলার এই নয়া দিশা।

২০০০-২০০৩ সময়কালে যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইয়ো শহরে নির্মিত হয় ‘লোইস অ্যান্ড রিচার্ড রোসেনথাল সেন্টার ফর কন্টেম্পোরারি আর্ট’। মালেভিচের চিত্রকল্পের ধরনে তৈরি এই স্থাপত্যটির রাস্তার দিকে মুখ করা অংশটি একটি স্বচ্ছ কাচের তৈরি। যার মধ্যে দিয়ে পথচলতি মানুষ এই মিউজ়িয়মের ভিতরে কী হচ্ছে তা দেখতে পান, এবং শিল্পের সঙ্গে একাত্মবোধ করেন। আমেরিকায় এক জন মহিলা স্থপতি দ্বারা নির্মিত এটি প্রথম মিউজ়িয়ম। ভিতরে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে পৃষ্ঠতল বা মেঝের একাংশ বক্ররেখায় উঠে গিয়ে দেওয়াল তৈরি করে। এটি জাহার নিজস্ব শৈলীর এক জাদুকরী স্পর্শ, কার্ভড লাইন বা বক্ররেখার সুনিপুণ ব্যবহার। ধীরে ধীরে জাহা হাদিদ হয়ে ওঠেন উত্তর-আধুনিক স্থাপত্যের ‘কুইন অব দ্য কার্ভ’। একে একে সৃষ্টি হয় অবিশ্বাস্য সব স্থাপত্য-নকশা। দেখলে মনে হবে এখনই হয়তো ভেঙে পড়বে, কারণ প্রায় প্রতিটি নকশা করা হয়েছে কোনও সমকোণ না রেখে। জাহা নিজে এই শৈলীর নাম দিয়েছিলেন ‘নো নাইন্টি ডিগ্রি আর্কিটেকচার’। ২০০৫-এ নির্মিত জার্মানির উল্ফসবার্গে ফেনো সায়েন্স সেন্টার, স্পেনের সারাগোসা শহরে ব্রিজ প্যাভিলিয়ন (২০০৮), আবু ধাবিতে শেখ জ়ায়েদ ব্রিজ (২০১০), লন্ডন অ্যাকোয়াটিক্স সেন্টার (২০১২), ২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের জন্য তৈরি কাতারের আল ওয়াকরাহ স্টেডিয়াম (২০১৯)— এ রকম মোট ২০৮টি স্থাপত্যের নকশা করেন জাহা তাঁর তিরিশ বছরের কর্মজীবনে। তবে আজ়ারবাইজানের বাকু শহরের হেদার আলিয়েভ কালচারাল সেন্টার (২০১৩) ডিকনস্ট্রাকটিভিজ়ম স্থাপত্যশৈলীর অন্যতম সেরা নির্মাণ।

জাহা হাদিদের বিস্ময়কর স্থাপত্যশৈলীর সাক্ষী আমরাও। তাঁর প্রয়াণের দু’বছর পর ২০১৮ সালে নবী মুম্বই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নকশার ভার দেওয়া হয় তাঁর সংস্থা জাহা হাদিদ আর্কিটেক্টস-কে। একটু উপর থেকে দেখলে এটিকে উড়ন্ত পাখির ডানার মতো মনে হয়। স্থাপত্যের ব্যবহারিক সীমাবদ্ধতাকে ভেঙেচুরে তার সঙ্গে ছন্দোময় বক্ররেখার সংলাপ। চোখ জুড়ানো এর নির্মাণকৌশল। গত ৮ অক্টোবর এই বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। আসলে হাদিদের যে কোনও স্থাপত্যের মূল বৈশিষ্ট্য, তা দর্শকের সঙ্গে কথা বলে। ইট, কাঠ, লোহা, পাথর, সিমেন্ট দিয়ে তৈরি হলেও এদের মধ্যে প্রাণের স্পন্দন অনুভূত হয়।

জাহা হাদিদ-কে সাধারণ ভাবে শুধুমাত্র স্থপতি হিসেবে মূল্যায়িত করা যাবে না। পুরুষশাসিত সামাজিক কাঠামোর মধ্যে প্রতিনিয়ত বাধা, নকশার অভিনবত্বের জন্য বার বার তা খারিজ হওয়া, তাঁর অতি সংবেদনশীলতার জন্য সমালোচিত হওয়া, কোনও কিছুই তাঁকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। তিনি নিজের শর্তে জীবন কাটিয়েছেন। অন্যায় দেখলে কড়া কথা শুনিয়েছেন সরকারি-বেসরকারি আধিকারিকদেরও।

প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধ চলাকালীন আমেরিকার হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব ডিজ়াইন-এ এক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত বক্তা ছিলেন জাহা। সেখানকার এক জন উচ্চপদস্থ কর্তা তাঁকে সিগারেট ফেলে দিতে বলায় জাহা তৎক্ষণাৎ উত্তর দিয়েছিলেন, “আপনারা ইরাকে বোমাবর্ষণ বন্ধ করুন, আমিও সিগারেট ফেলে দেব।”

চমকে উঠেছিলেন ওই আমেরিকান ভদ্রলোক জাহার উত্তরে। বিশ্ব জুড়ে যুদ্ধং দেহি আগ্রাসনের মুখের উপর এই রকম জুতসই উত্তর দেওয়ার মানুষ আজ বড় দুর্লভ।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Zaha Hadid

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy