Advertisement
E-Paper

মুচমুচে মজলিসি ভোজ বা বান্ধবীর ক্যালোরি কমানোর আবদার! রান্নায় সমাধান দিলেন রন্ধনশিল্পী সুশান্ত সেনগুপ্ত

রেস্তরাঁয় রেস্তরাঁয় এই সময় পুজোর মেনু। তবে তার সঙ্গে পুজোর ভিড়ও। ভিড় এড়িয়ে রেস্তরাঁর খাবার খাবেন কী ভাবে? বাংলার রন্ধনশিল্পীরা আনন্দবাজার ডট কমে বলে দিচ্ছেন তাঁদের রেস্তরাঁর পুজো স্পেশ্যাল রেসিপি।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১১:০৩
স্বাস্থ্য বাঁচিয়ে দুর্গা পুজোর মজলিসি খানার রেসিপি দিলেন সুশান্ত সেনগুপ্ত।

স্বাস্থ্য বাঁচিয়ে দুর্গা পুজোর মজলিসি খানার রেসিপি দিলেন সুশান্ত সেনগুপ্ত। ছবি: সংগৃহীত।

পুজো মানে লাটাইয়ের আলগা সুতোয় দমকা হাওয়া লেগে ছিটকে যাওয়া ঘুড়িদের ঘরে ফেরা। কাজের সূত্রে কেউ হিল্লি-দিল্লি তো কেউ থাকেন দূর দেশে। সেই পরিযায়ীদের সঙ্গে দেখা হওয়ার সুযোগ আসে পুজোয়। হয় প্যান্ডেলে, নয় গঙ্গার ধারে অথবা কারও বাড়িতে মজলিসি আড্ডায় দীর্ঘ দিন পরে কাছে পাওয়া চেনা মানুষগুলোর ‘জাদু কি ঝপ্পি’। সেই মিলনোৎসব পেটপুজো ছাড়া সম্ভব নয়। তবে পেটপুজোরও অনেক শর্ত থাকে। খাওয়াদাওয়ার আসরে কেউ বায়না ধরেন ‘ডায়েট করছি’। আবার কেউ বলেন আড্ডার মৌতাত আনতে পানীয়ের সঙ্গে মুচমুচে খাবার চাই। দু’তরফেরই চাহিদা মেটানোর বন্দোবস্ত রইল।

বাংলা জুড়ে রেস্তরাঁয় রেস্তরাঁয় এই সময় পুজোর মেনু। তবে তার সঙ্গে পুজোর ভিড়ও। বাংলার শেফ বা রন্ধনশিল্পীরা তাই আনন্দবাজার ডট কমে বলে দিচ্ছেন তাঁদের রেস্তরাঁর পুজো স্পেশ্যাল রেসিপি। সেই সব খাবার খোদ শেফের কাছ থেকে শিখে নিয়ে বানিয়ে ফেলুন বাড়িতেই।

‘৬ বালিগঞ্জ প্লেস’-এর এগজ়িকিউটিভ শেফ এবং সুশান্ত সেনগুপ্ত সাজিয়ে দিলেন তাঁর রান্নাঘরের দু’টি বিশেষ রান্নার রেসিপি।

চিংড়ি মাছের শাল্মি

বছরের বাকি দিন গুলি যেমনই হোক, উৎসবে একটু রাজকীয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছে হয় বঙ্গজনের। আর বাড়িতে রাজকীয় খাবার বানানোর কথা হলে আজও ঠাকুরবাড়ির রান্নার কথাই ভাবেন বহু বাঙালি। এই রান্নাটিও সেই ঠাকুরবাড়ির হেঁশেল থেকেই তুলে আনা। রন্ধনশিল্পী সুশান্ত বলছেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যেমন তাঁর রচনায় বাঙালির সুখ-দুঃখের সঙ্গী, তেমনই উৎসবের বাঙালির খাবারের টেবিলকে অন্য মাত্রা দেয় ঠাকুরবাড়ির রান্না। সে কথা মাথায় রেখেই পুজোর পেটপুজোয় এই রেসিপি বেছে নেওয়া। পুজোর আড্ডা মুখরোচক ভাজাভুজি ছাড়া জমে না। তেমন আড্ডারই সঙ্গী হোক ঠাকুরবাড়ির এই রান্না।

উপকরণ:

১২টি বাগদা চিংড়ি (একটু বড় মাপের)

২০০ গ্রাম চিংড়ি (ছোট হলেও অসুবিধা নেই)

১টি লেবুর রস

৩-৪টি কুচোনো কাঁচালঙ্কা

২টি ডাঁটি সমেত ধনেপাতাকুচি

১ টেবিলচামচ সর্ষেবাটা (হলুদ, কাঁচালঙ্কা, নুন দিয়ে ভেজানো সর্ষেদানা বাটা)

১ টেবিল চামচ পেঁয়াজ ও আদার রস

১/২ চা চামচ সাদা গোলমরিচগুঁড়ো

স্বাদ মতো নুন

ব্যাটারের জন্য—

৫ টেবিল চামচ ময়দা

১টি ফেটানো ডিমের অর্ধেকাংশ

১/৪ চা চামচ সাদা গোলমরিচ গুঁড়ো

১৫০ গ্রাম বিস্কুটের গুঁড়ো

ভাজার জন্য তেল

প্রণালী: বাগদা চিংড়ির খোলা ছাড়িয়ে মাথা বাদ দিয়ে শুধু লেজের অংশটি রেখে দিন।

এ বার চিংড়ির কালো শিরাটা বার করে নিয়ে একটি ধারালো ছুরি দিয়ে এমন ভাবে কাটুন, যাতে ওটি মলাট খোলা বইয়ের মতো খুলে যায়। কিন্তু আড়া আড়ি কেটে না যায়।

ছোট্ট হাতুরি, হামানদিস্তার নোড়া দিয়ে ওর উপর হালকা হাতে ঠুকে ঠুকে চিংড়ির একটা চ্যাটালো পরত তৈরি করুন।

সব ক’টি বড় চিংড়ি এ ভাবে চ্যাটালো করে নেওয়ার পরে তাতে নুন, মরিচগুঁড়ো, লেবুর রস, পেঁয়াজ এবং আদার রস মাখিয়ে আলাদা করে রাখুন।

ছোট চিংড়িগুলোকে ভাল ভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে ধারালো ছুরি দিয়ে মিহি করে কুচিয়ে নিন। তার পরে তাতে কাঁচালঙ্কা, ধনেপাতা, সর্ষেবাটা এবং নুন ভাল ভাবে মাখিয়ে নিন।

এ বার এক একটি বড় চিংড়ির চ্যাটালো পরতের মাঝখানে কুচনো চিংড়ির পুর দিয়ে ভাল ভাবে মুড়ে নিন।

ময়দা, ডিম, নুন, মরিচ এবং জল দিয়ে ব্যাটার বানান। পুর ভরা চিংড়ি ব্যাটারে ডুবিয়ে বিস্কুটের গুঁড়োয় মাখিয়ে গরম তেলে সোনালি করে ভেজে তুলুন।

কাসুন্দি এবং শসা-পেঁয়াজের স্যালাডের সঙ্গে পরিবেশন করুন।

গন্ধরাজ ভাপা ভেটকি

পুজোয় অস্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে ভেবে যাঁরা শঙ্কিত, এ রেসিপি তাঁদের কথা ভেবে দিয়েছেন সুশান্ত। কারণ গন্ধরাজ ভাপা ভেটকি হল এমন একটি খাবার, যা তেল, অতিরিক্ত মশলা এবং ভাজার ঝঞ্ঝাট ছাড়াই বানানো যায়। তাই এই পদে ক্যালোরি অত্যন্ত কম, পুষ্টিগুণে ভরা আর ওজন বৃদ্ধিরও ভয় নেই এই খাবার খেলে। সবচেয়ে বড় কথা হল এ রান্নায় পরিশ্রমও বেশ কম। অথচ মাছে-ভাতে বাঙালির স্বাদের সঙ্গে কোনও রকম আপস করতে হবে না এই রান্নাটি খেলে।

উপকরণ:

১২০ গ্রাম ভেটকি মাছের ফিলে

৩৫ গ্রাম টক দই

১টি গন্ধরাজ লেবু

৫ গ্রাম কাঁচালঙ্কার রস

৫ গ্রাম আদার রস

১ চিমটে কর্নফ্লাওয়ার

স্বাদমতো নুন

প্রণালী: ভেটকির ফিলে ভাল ভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নরম কাপড় বা ন্যাপকিন দিয়ে মুছে নিন।

এ বার একটি পাত্রে অর্ধেক গন্ধরাজ লেবুর রস, লঙ্কার রস এবং আদার রস একসঙ্গে মিশিয়ে নিয়ে ওই মিশ্রণে ভেটকির ফিলেগুলো ভাল ভাবে মাখিয়ে রেখে দিন কিছু ক্ষণ। যাতে ওই গন্ধ আর স্বাদ ভাল ভাবে মাছের মধ্যে ঢুকে যাওয়ার সুযোগ পায়।

একটি পাত্রে দই, কর্ন ফ্লাওয়ার, স্বাদমতো নুন দিয়ে ভাল ভাবে ফেটিয়ে নিন। তার পরে আদা-লঙ্কা-লেবুর রসে মাখিয়ে রাখা মাছের ফিলে গুলো দইয়ের মিশ্রণে মাখিয়ে নিয়ে ৫-৭ মিনিটের জন্য ভাপিয়ে নিন।

সেদ্ধ হয়েছে কি না বুঝতে টুথপিক ব্যবহার করতে পারেন। সেদ্ধ হলে নামিয়ে নিন।

গ্রেটারে গন্ধরাজলেবুর খোসার সবুজ অংশ কুরে নিয়ে উপরে ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।

Durga Puja Recipes Durga Puja 2025 Prawn Recipe Bhetki Fish Recipe
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy