Advertisement
E-Paper

চায়ে মিশছে কৃত্রিম রং, ধাতুর চূর্ণ! খাঁটি আর ভেজালের পার্থক্য করবেন কী ভাবে?

এক কাপ গরম চা শরীর ও মনে আরাম দেয়। সেই চায়েও যদি ভেজাল থাকে, তা হলে খুব মুশকিল। দোকান থেকে যে চা কিনে আনছেন, তা খাঁটি না ভেজাল, বুঝবেন কী ভাবে?

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২৪ ১৮:৪২
How to detect adulteration in tea leaves

যে চা পান করছেন রোজ, তা খাঁটি তো! ছবি: ফ্রিপিক।

সকালে উঠে এক কাপ চা ছাড়া যেন দিনটাই শুরু হয় না। চা শুধু নেশা নয়, এক কাপ আবেগ। রাস্তায় দাঁড়িয়ে মাটির ভাঁড়ে চা হোক বা নামী রেস্তোরাঁয় বাহারি পোর্সেলিনের পাত্রে, চায়ের কাপে তুফান তুলেই বাঙালির কত না আড্ডা, সমালোচনা, তর্ক-বিতর্ক। ঘন দুধ দিয়ে সাদা চায়ের প্রতি মোহে আবৃত নন, এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া কঠিন! তবে স্বাস্থ্য সচেতনরা একটু সমঝে চলেন। সেক্ষেত্রে গ্রিন টি, কালো চা , ভেষজ চায়ের কদর বেড়েছে। তবে শুধু বাঙালি বলেই নয়, দেশ-বিদেশে বহু মানুষের দিনটাই শুরু হয় চায়ে চুমুক দিয়ে। অথচ দেখুন, সেই চায়েও কিনা ভেজাল। দুধ, মাখন, পনির থেকে চাল, ডাল, মশলা— ভেজাল এখন সবেতেই। সব্জি, ফল তাজা দেখাতে কৃত্রিম রঙের ব্যবহারও হচ্ছে। তাই বলে চা?

‘ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি অফ ইন্ডিয়া’ বা ‘এফএসএসআই’ চায়ে ভেজাল সম্পর্কে বিভিন্ন সময়েই মানুষজনকে সচেতন করেছে। ‘এফএসএসআই’ তাদের রিপোর্টে যা জানাচ্ছে, তা চমকে ওঠার মতোই। চায়ের মধ্যেও নাকি মেশানো হচ্ছে কৃত্রিম রং। কেবল রং নয়, বিভিন্ন রকম রাসায়নিক, ভারী ধাতুও মিশছে চায়ে। কালো চা-তে নাকি গাদা গাদা সীসা মেশানো হচ্ছে। এক ঝলক দেখে বুঝতেই পারবেন না, আপনার দামি চা পাতার মধ্যে কতটা পাতা আছে আর কতটা আছে লোহার গুঁড়ো। তা ছাড়া এমন কিছু রাসায়নিকও মিশছে যা বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই।

চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই বলছেন, “দোকান থেকে যা কিনে আনা হচ্ছে, তার সবটাই যে খাঁটি তা নয়। গুঁড়ো দুধে মিশছে ডিটারজেন্ট। তা হলে চা-ই বা বাদ থাকে কেন! চা পাতা তুলে তার থেকে গুঁড়ো চা তৈরির সময় বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। অসাধু ব্যবসায়ীরা সেখানেই গন্ডগোলটা পাকান। গুঁড়ো চায়ের পরিমাণ বাড়াতে তাতে মিশিয়ে দেওয়া হয় সীসা, লোহার মতো ধাতু। রঙের হেরফের যাতে বোঝা না যায়, সে জন্য মিশিয়ে দেওয়া হয় কৃত্রিম রং যা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক।”

কী-কী রাসায়নিক মেশে চায়ে? ‘টি বোর্ড অফ ইন্ডিয়া’ জানাচ্ছে, মিসমার্ক ব্রাউন, পটাশিয়াম ব্লু, ইন্ডিগো, প্লামবেগোর মতো রং মেশানো হচ্ছে চায়ে। এইসব রং দিনের পর দিন শরীরে ঢুকলে, তা স্বাস্থ্যের উপর বড় প্রভাব ফেলবে বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই। তিনি বলছেন, এইসব রং এবং ধাতুর চূর্ণ শরীরে গেলে তা লিভারের রোগের কারণ হতে পারে। অন্ত্রের ক্ষতি করতে পারে কৃত্রিম রং। কিডনির জটিল রোগের কারণ হয়ে উঠতে পারে। এমনকি ক্যানসারেরও ঝুঁকি বাড়াতে পারে এইসব কৃত্রিম রং ও রাসায়নিক।

চায়ে ভেজাল আছে কি না ধরবেন কী ভাবে?

‘টি বোর্ড অফ ইন্ডিয়া’ জানাচ্ছে, চায়ে ভেজাল আছে কি না ধরার উপায় আছে। এক ঝলক দেখেই হয়তো বোঝা যাবে না। তবে কিছু পরীক্ষা করে দেখতে হবে।

১) প্রথমে একটি ব্লটিং পেপারে কিছুটা চায়ের গুঁড়ো ঢালুন। সেই গুঁড়ো চায়ের উপর সামান্য জল ছিটিয়ে দিন। তার পর কিছু ক্ষণ অপেক্ষা করে চায়ের গুঁড়োগুলো সরিয়ে ব্লটিং পেপারটি আলোর সামনে নিয়ে গিয়ে দেখুন। ভেজাল চা কাগজের উপর কালো বা খয়েরি রঙের দাগ ফেলবে, কিন্তু চা খাঁটি হলে কাগজের উপর কোনও দাগ পড়বে না। এ বার ব্লটিং পেপারটি পরিষ্কার জলে ধুয়ে নিন। চায়ে যদি ভেজাল থাকে, তা হলে দেখবেন ধোয়ার পরেও খয়েরি দাগ থেকে যাবে।

২) আরও একটি উপায় আছে বোঝার। একটি কাচের পাত্রে চায়ের গুঁড়ো নিন। এ বার ছোট চুম্বক নিয়ে ধীরে ধীরে চায়ের উপর ঘোরাতে থাকুন। চা খাঁটি হলে চুম্বকে কিছু লাগবে না। কিন্তু গুঁড়ো চায়ে লৌহচূর্ণ মেশানো থাকলে, তা চুম্বকের গায়ে আটকে যাবে। তখন বুঝবেন ভেজাল মেশানো আছে।

৩) চায়ের লিকার তৈরি পরে, ছাঁকনিতে যে চা পাতা আটকে যাবে সেগুলি তুলে নিয়ে দেখুন। খাঁটি চা হলে, পাতাগুলি সহজে ছিঁড়বে না, রঙও উজ্জ্বল ও গাঢ় থাকবে। যদি ভেজাল মেশানো থাকে, তা হলে ভেজাল চা পাতার রং ফ্যাকাশে হয়ে যাবে। একটু টানলেই ছিঁড়ে যাবে।

food adulteration Food Safety Tea leaves
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy