কয়েক বছর আগেও ভারতে পাওয়াই যেত না ব্রকোলি। তবে এখন বাজারে গেলে সারা বছরই চোখে পড়ে সবুজ রঙের এই সব্জি। চিকিৎসকদের মতে, খেতে ভাল লাগুক বা না লাগুক ব্রকোলির পুষ্টিগুণ প্রচুর। এই সব্জিকেই এখন গবেষকরা বলছেন, ‘আলটিমেট ক্যানসার ফুড’।
ব্রোকোলি হল ক্রুসিফেরাস গোত্রের সব্জি। ওই গোত্রের সব্জির বিশেষত্ব তাদের ক্যানসার প্রতিরোধের ক্ষমতায়। ব্রোকোলিতে রয়েছে সালফোরেফেন এবং ইনডোল থ্রি কার্বিনোল। যা ক্যানসার ঘটানো কার্সিনোজেনকে নিষ্ক্রিয় করতে সাহায্য করতে পারে। এ ছাড়া ক্যানসার কোষে কোষে ছড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে যে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস প্রভাব ফেলে এবং ক্যানসারকে বাড়িয়ে দেয়, ব্রোকোলিতে থাকা উপাদান সেই অক্সিডেটিভ স্ট্রেসও কমাতে পারে। এ ছাড়া এই সব্জি ভিটামিন কে, ভিটামিন সি, ফোলিক অ্যাসিড, পটাশিয়াম ও ফাইবারে পরিপূর্ণ। যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
বাজারে কখনও কখনও এই সব্জির দাম শুনলেও আঁতকে উঠতে হয়। চাহিদার কারণে দাম দিন দিন বাড়ছে ব্রকোলির। চড়া দাম দিয়ে কিনলেও এই সব্জি রান্নার সময় মস্ত বড় ভুল করে বসেন কেউ কেউ। রান্নার ভুল পদ্ধতির জন্য সব্জিটির অর্ধেক গুণই নষ্ট হয়ে যায়। জেনে নিন, কী ভাবে ব্রকোলি রান্না করলে সবচেয়ে বেশি পুষ্টি পাবে শরীর।
ব্রকোলি রান্নার সময় অনেকেই তা সেদ্ধ করে নেন, আর সেখানেই ভুলটা হয়। সেদ্ধ করার সময় ব্রকোলিতে থাকা ভিটামিন সি, ফোলেট জলের সঙ্গেই বেরিয়ে যায়। ক্যানসার কোষ ধ্বংসে সাহায্যকারী উপাদান সালফোরেফেনের গুণাগুণও নষ্ট হয়ে যায় ব্রকোলি সেদ্ধ করার সময়। অনেকেই ব্রকোলি ভাল ভাবে সেদ্ধ করে তার পর খান, তবে ব্রকোলির সবুজ রং ফ্যাকাশে হয়ে গেলে এবং সেটি খুব বেশি নরম হয়ে যাওয়ার অর্থ কিন্তু তা অতিরিক্ত সময় ধরে রান্না করা হয়েছে। এর ফলে সেদ্ধ করা জলেই ব্রকোলির পুষ্টিগুণ সব বেরিয়ে যায়, শরীর অবধি আর পৌঁছয় না।
ব্রকোলির রান্নার সঠিক পদ্ধতি কী?
ব্রকোলি সেদ্ধ করে নয়, ভাপিয়ে খাওয়া উচিত। বাড়িতে স্টিমার থাকলে তাতেই ভাপিয়ে নিতে পারেন। আর তা না হলে খানিকটা জল গরম করে তার উপর একটি স্ট্যান্ড দিয়ে তার উপর একটি পাত্রে ব্রকোলি রেখে দিতে পারেন। ৪-৫ মিনিটেই রান্না হয়ে যাবে ব্রকোলি। ভাপানো ব্রকোলি ভাজার প্রয়োজন নেই। সামান্য অলিভ অয়েল, লেবুর রস, বিটনুন, গোলমরিচ আর রসুনগুঁড়ো মিশিয়ে নিলেই স্বাদ বেড়ে যাবে কয়েক গুণ।