রুমালি রুটি আর কষা মাংস! বর্ষবরণের উদ্যাপনে এই মেনু যেমন সহজ, তেমনই সুস্বাদুও। রান্নার হাজার রকমের ঝঞ্ঝাট নেই। নেই সাজিয়ে গুছিয়ে পরিবেশনের সমস্যাও। বিশেষ করে ভোজনের সঙ্গে যদি পানের ব্যবস্থা থাকে, তবে হালকা খেতেই পছন্দ করেন অনেকে। তেমন ঘরোয়া পার্টিতে এই খাবার সামনে রাখলে অতিথিরা তৃপ্তি করে খাবেন। পেটের সঙ্গে ভরবে মনও। বাড়িতে কষা মাংস নয় বানিয়ে নিলেন। রুমালি রুটি আসবে কোথা থেকে? পাড়ার দোকান আছে হয়তো। কিন্তু চাইলে বাড়িতেও বানিয়ে নিতে পারেন। সঠিক পদ্ধতি জানা থাকলে দোকানের মতো পাতলা ও নরম নরম রুমালি রুটি বানিয়ে ফেলা যাবে বাড়িতেই। শুধু কয়েকটি কৌশল খেয়াল রাখতে হবে।
১. ময়দা ও ময়ান
রুটি সাধারণত আটা দিয়েই বানানো হয়। অনেকে আটার সঙ্গে ময়দা মেশান। তবে রুমালি রুটির জন্য শুধু ময়দা ব্যবহার করাই ভাল। আটা দিলে এই রুটি তেমন নরম হয় না। এই রুটি বানানোর জন্য ময়দায় সঙ্গে সামান্য নুন, এক চামচ চিনি এবং ২-৩ চামচ সাদা তেল মেশান। জল দিয়ে মাখার বদলে হালকা গরম দুধ দিয়ে ময়দা মাখলে রুটি অনেক বেশি নরম হয়।
২. ময়দা মাখার কৌশল
এটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। ময়দা খুব নরম করে মাখতে হবে। মাখা ময়দার তাল যেন কোনও ভাবেই শক্ত না মনে হয়। কমপক্ষে ১০-১৫ মিনিট ধরে ময়দা ঠাসতে হবে। যখন দেখবেন ময়দা হাতের সঙ্গে আর লেগে যাচ্ছে না, তখন বুঝবেন মাখা হয়ে গিয়েছে। রুমালি রুটির জন্য মাখা ময়দার তাল একেবারে মসৃণ হয়ে যাবে। মাখার পরে একটি ভিজে সুতির কাপড় দিয়ে ঢেকে অন্তত ১ ঘণ্টা রেখে দিন। এতে ময়দায় গ্লুটেন তৈরি হবে। আর গ্লুটেন তৈরি হলে তা রুটিকে টেনে আয়তনে বাড়িয়ে নিতে সাহায্য করবে। আকারে বড় হলেও লেচি টানলে ছিঁড়ে যাবে না।
৩. নুন জলের স্প্রে
দোকানে রুমালি রুটি বানানোর সময় লোহার কড়াই উল্টে তার ওপর নোনতা জল ছিটানো হয়। এক কাপ জলে ১ চামচ নুন গুলে রাখুন। রুটি সেঁকার আগে গরম কড়াইতে এই জল ছিটিয়ে দিন। এতে কড়াই নন-স্টিক হয়ে যায় এবং রুটি সেঁকার সময় তাতে সুন্দর সাদাটে ছোপ ধরে।
৪. পাতলা করে বেলা
লেচিগুলো আকারে একটু বড় করুন আর বেলার সময় যতটা সম্ভব পাতলা করে বেলুন। চাটুতে এই রুটি আঁটবে না। তাই পাথরের বা মার্বেলের কিচেনটপ থাকলে কিছুটা জায়গা পরিষ্কার করে সেখানেও রুটি বেলতে পারেন। বেলার জন্য শুকনো ময়দা ব্যবহার করুন। রুটি এতটাই পাতলা হবে যে নীচে হাত দিলে হাত দেখা যাবে।
৫. সেঁকার সঠিক পদ্ধতি
রুমালি রুটি খুব বেশি সময় ধরে সেঁকা যাবে না। তাতে রুটি শক্ত হয়ে যাবে। চাটুর বদলে লোহার কড়াই উল্টে নিয়ে তার পিঠে রুটি সেঁকুন। কড়াই গরম হয়ে ধোঁয়া বের হলে নুন-জল ছিটিয়ে দিন। তার পরে রুটিটি আলতো করে উপরে সেঁকতে দিন। রুটির এক একটি পিঠ ২০-৩০ সেকেন্ডের বেশি সেঁকা যাবে না। এক পিঠে ছোট ছোট বাবল তৈরি হলেই উল্টে দিন। একটি সুতির কাপড় দিয়ে আলতো করে চেপে চেপে সেঁকুন।
৬. কী ভাবে রাখবেন?
রুটি নামানোর সঙ্গে সঙ্গেই রুমালের মতো চার ভাঁজ করে নিন। তার পরে সেটিকে একটি ক্যাসেরোল বা হটপটে সুতির কাপড়ে মুড়িয়ে রাখুন। এতে রুটি অনেক ক্ষণ নরম থাকবে।