Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
brain

Life After Death: মৃত্যুর পরেও কি মানুষ দেখতে পায় জীবনের ছবি? ইইজি রেকর্ডিংয়ে ধরা পড়ল অদ্ভুত তথ্য

মৃত্যুর পরে কি সব শেষ হয়ে যায় নাকি চেতনা থেকে যায় মস্তিষ্কে! মানুষ কি দেখতে পায় জীবনের ছবি?

মৃত্যুর পরে কি সব শেষ হয়ে যায় নাকি চেতনা থেকে যায় মস্তিষ্কে!  -ফাইল ছবি।

মৃত্যুর পরে কি সব শেষ হয়ে যায় নাকি চেতনা থেকে যায় মস্তিষ্কে! -ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৬:৪৮
Share: Save:

মৃত্যুর পরেও কি জীবনকে অনুভব করতে পারে মানুষ? হৃদস্পন্দন, রক্তপ্রবাহ থেমে যাওয়ার পরেও কি সক্রিয় থাকে মস্তিষ্ক, অন্তত কিছু ক্ষণ? মস্তিষ্কে আন্দোলিত হয় কোনও তরঙ্গ যা কি না মৃত্যুর অতলে তলিয়ে যাওয়ার সময়ও তুলে ধরে ফেলে আসা জীবনের ছবি?

সাম্প্রতিক একটি গবেষণা এই সব প্রশ্নকেই উস্‌কে দিল। যা হৃদস্পন্দন, রক্ত প্রবাহ পুরোপুরি থেমে যাওয়ার পরের কিছু ক্ষণ ধরে মস্তিষ্কে কী কী ঘটে সেই সব ঘটনাই রেকর্ড করল। এই প্রথম।

হাসপাতালের এমার্জেন্সি বিভাগে ৮৭ বছর বয়সি এক রোগীর হৃদস্পন্দন ও রক্তপ্রবাহ থেমে যাওয়ার আগে ও পরের ৩০ সেকেন্ডে ঠিক কী কী ঘটনা ঘটে ইলেকট্রোএনসেফ্যালোগ্রাফি (ইইজি) যন্ত্রে তার খুঁটিনাটি রেকর্ড করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, বিজ্ঞানীরা। সেই রেকর্ডিং চলার সময়েই রোগীর মৃত্যু হয় হৃদরোগে। ইইজি-তে জানা যায়, তাঁর মৃগী হয়েছিল।

তাঁর মৃত্যু-মুহূর্তের ইইজি রেকর্ডিং খতিয়ে দেখে গবেষকরা জানতে পেরেছেন, মৃত্যুর সময় নানা ধরনের তরঙ্গে আলোড়িত হয়েছিল তাঁর মস্তিষ্ক। তাঁর চোখে ভেসে উঠেছিল সেই সব তরঙ্গের আন্দোলন। ভেসে উঠেছিল মানবমস্তিষ্কের বিশেষ ধরনের আলফা ও গামা তরঙ্গগুলিরও ছবি। রেকর্ডিং খতিয়ে দেখে গবেষকদের ধারণা, হৃদস্পন্দন ও রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরের ৩০ সেকেন্ডেও সচল সক্রিয় ছিল ওই রোগীর মস্তিষ্ক। তিনি অনেক কিছুই দেখতে পাচ্ছিলেন জীবনের, মস্তিষ্কের ওই তরঙ্গগুলির আন্দোলনের মাধ্যমে। তরঙ্গগুলি একে অন্যের সঙ্গে মিশে যাচ্ছিল। কোনও তরঙ্গ অন্য একটি তরঙ্গকে ঠেলে সরিয়ে দিচ্ছিল।

সেই রেকর্ডিং-এর সংশ্লিষ্ট গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘ফ্রন্টিয়ার্স ইন এজিং নিউরোসায়েন্স’-এ।

গবেষকদের বক্তব্য, মৃত্যুর পরেও কিছু ক্ষণ ওই রোগীর মস্তিষ্কে আলফা ও গামা তরঙ্গের মতো যে তরঙ্গগুলির প্রবল আন্দোলন রেকর্ডিংয়ে ধরা পড়েছে সেই তরঙ্গগুলি চেতনার দ্যোতক। সেই তরঙ্গগুলি মস্তিষ্কের স্মরণশক্তির কোষ (‘মেমরি সেল’)-গুলিরও সজীব সক্রিয় থাকার প্রমাণ। সেই তরঙ্গগুলিকে মৃত্যুর ৩০ সেকেন্ড পরেও রোগীর মস্তিষ্কে প্রবল ভাবে আন্দোলিত হতে দেখে গবেষকদের ধারণা, রোগীর জীবনের স্মৃতি সেই সময়ও জাগ্রত ছিল। রোগী দেখতেও পেয়েছিলেন সেই সময় তাঁর ফেলে আসা জীবনের টুকরোটাকরা বেশ কিছু ছবি। গাড়ি চলতে চলতে ব্রেক কষলেও যেমন গতিজাড্যের দরুণ তার চাকা কিছুটা গড়িয়ে যায় তেমনই ওই তরঙ্গগুলিও হৃদস্পন্দন ও রক্তপ্রবাহ থেমে যাওয়ার ৩০ সেকেন্ড পর পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছিল।

যা একটা কথাই বলে— রোগী তখনও তাঁর চেতনা হারাননি পুরোপুরি। জীবনের ফেলে যাওয়া দিনগুলির ছবি তখনও তাঁর চোখে ভেসে উঠছিল।

বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, এই গবেষণা মৃত রোগীর চেতনা কত ক্ষণ পর্যন্ত জাগ্রত থাকতে পারে সে সম্পর্কে আরও গবেষণার দরজা খুলে দিল। যাঁরা মৃত্যুর পর তাঁদের অঙ্গদানের অঙ্গীকার করে যান তাঁদের অঙ্গ ঠিক কতটা সময় পর তুলে নেওয়া উচিত সে ব্যাপারেও নতুন ভাবে ভাবনাচিন্তা করার পথ দেখাতে পারে এই গবেষণা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

brain
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE