কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের প্রাকৃতিক রক্ষী সুন্দরবনের পরিবেশ রক্ষায় নিছক হস্তক্ষেপ নয়, রীতিমতো সক্রিয় হয়ে উঠল জাতীয় পরিবেশ আদালত। সেখানকার দূষণ পরিস্থিতি জানতে তারা এ বার নিজেদের দলকেই পরিদর্শনে পাঠাচ্ছে। আদালতকে সরাসরি রিপোর্ট দেবে ওই দল।
জাতীয় পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চলীয় বেঞ্চের এই উদ্যোগের মূলে আছে আগেকার কমিটির নিষ্ক্রিয়তা। সুন্দরবনের দূষণ ঠেকাতে রাজ্য প্রশাসন এবং পরিবেশকর্মীদের নিয়ে একটি কমিটি গড়ে দিয়েছিল জাতীয় পরিবেশ আদালতই। কিন্তু প্রায় চার মাসেও সেই কমিটি কোনও বৈঠক করেনি। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় পরিবেশ আদালতের বিচারপতি প্রতাপ রায় ও বিশেষজ্ঞ-সদস্য পি সি মিশ্রের ডিভিশন বে়ঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, ইউনেস্কোর ‘হেরিটেজ সাইট’ হিসেবে চিহ্নিত সুন্দরবনের দূষণ পরিস্থিতি সরেজমিন পরিদর্শনে যাবে তাদের নিজেদের প্রতিনিধিদল। সেই সঙ্গে ১৫ দিনের মধ্যে আগেকার কমিটির বৈঠক ডাকার ব্যবস্থা করার জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্যকে।
সুন্দরবনের পরিদর্শনের জন্য পরিবেশ আদালতের দলে তাদের মনোনীত তিন আইনজীবী থাকছেন। থাকবেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত, রাজ্য সরকারের আইনজীবী বিকাশ করগুপ্ত এবং রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আইনজীবী অর্পিতা চৌধুরী। ওই দলে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কয়েক জন বিশেষজ্ঞকেও নেওয়া হবে বলে আদালত সূত্রের খবর। ওই দলের যাবতীয় খরচ এবং নিরাপত্তার দায়িত্ব রাজ্য প্রশাসনকে বহন করতে হবে।
অর্পিতাদেবী বুধবার জানান, সুন্দরবন এলাকায় সব বেআইনি নির্মাণ ভেঙে দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সুন্দরবনে উপকূল বিধি ভেঙে গড়ে ওঠা নির্মাণ নিয়ে অভিযোগ উঠছে দীর্ঘদিন ধরে। তার সঙ্গে ওই এলাকায় কয়েক হাজার ভুটভুটিও চলে। অভিযোগ, ডিজেল ও কেরোসিনের মিশ্রণ (কাটা তেল) ব্যবহার করা হয় ভুটভুটিতে। ফলে জলে ও বাতাসে দূষণ ছড়ায়। এর আগে সরকার আদালতে হলফনামায় জানিয়েছিল, কাটা তেল ও অবৈধ নির্মাণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। পরিবেশকর্মী সুভাষবাবু জানান, সরকার হলফনামায় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানালেও বাস্তবে কিছুই হয়নি। গদখালিতে জেলা প্রশাসনেরই বাড়ি তৈরি হচ্ছে উপকূলীয় বিধি ভেঙে। ভুটভুটিগুলিও কাটা তেলেই চলছে। পরিবেশ বিষয়ক ছাড়পত্র ছাড়াই কী ভাবে ওই সব ভুটভুটি চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন সুভাষবাবু। তিনি বলেন, ‘‘অবিলম্বে ভুটভুটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy