Advertisement
E-Paper

১৯ দিন পর মঙ্গলে উড়বে কপ্টার, ইতিহাসের পাতায় নাম লেখার অপেক্ষায় ২ বাঙালি-সহ ৩ ভারতীয়

সভ্যতা অন্য কোনও গ্রহে হেলিকপ্টার ওড়াতে পারবে কি না, তা নির্ভর করছে প্রকল্পের মূল কর্ণধার চিফ ইঞ্জিনিয়র জে বব বলরামের উপর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২১ ১৭:০০
ধাপে ধাপে যে ভাবে মঙ্গলে নামবে নাসার রোভার। ছবি- নাসার সৌজন্যে।

ধাপে ধাপে যে ভাবে মঙ্গলে নামবে নাসার রোভার। ছবি- নাসার সৌজন্যে।

এখন বলরামের নাম জপছে নাসা! ১৯ দিন পর ‘লাল গ্রহ’ মঙ্গলে সভ্যতার পাঠানো প্রথম যে হেলিকপ্টারটি (নাম-‘ইনজেনুইটি’) উড়বে, তার মূল কর্ণধার চিফ ইঞ্জিনিয়র জে বব বলরাম। মঙ্গলের আকাশে হেলিকপ্টার ওড়ানোর স্বপ্নটা প্রথম দেখার জন্য অবশ্য বলরামের সঙ্গে ইতিহাসে লেখা থাকবে দুই বঙ্গসন্তানের নামও। অনুভব দত্ত এবং সৌম্য দত্ত। মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যারোডায়নামিক্স ও অ্যারোইলেকট্রিসিটি বিভাগের অধ্যাপক অনুভব। সাড়ে ৩ দশক আগে যিনি তাঁর এই পরিকল্পনা প্রথম জানিয়েছিলেন একটি আন্তর্জাতিক সেমিনারে।

লাল গ্রহের কক্ষপথে পৌঁছনো মহাকাশযান থেকে মঙ্গলে নিরাপদে নামার জন্য যে দৈত্যাকার প্যারাস্যুট বানানো হয়েছে, তা তৈরির সঙ্গেও জড়িয়ে রয়েছে দ্বিতীয় বঙ্গসন্তানের নাম। বর্ধমানের সৌম্য দত্ত। যিনি এখন ভার্জিনিয়ায় নাসার ল্যাংলে রিসার্চ সেন্টারের অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়র।

বলরাম বেঙ্গালুরুর সন্তান। যিনি ৩৬ বছর আগে যোগ দিয়েছিলেন নাসা-য়। পৃথিবী প্রথম বার সফল ভাবে অন্য কোনও গ্রহে হেলিকপ্টার ওড়াতে পারবে কি না, তা যে পুরোপুরি নির্ভর করছে বলরামের উপরে। তাঁরই তো মস্তিষ্কপ্রসূত ইনজেনুইটি। ম‌ঙ্গলের হেলিকপ্টার।

আর ঠিক ১৯ দিনের মাথায়, অর্থাৎ ১৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলে পা ছোঁয়াবে নাসার ল্যান্ডার। তার পরেই লাল গ্রহে ল্যান্ডার থেকে বেরিয়ে পড়বে রোভার ‘পারসিভের‌্যান্স’। আকাশে চক্কর মারতে উড়বে হেলিকপ্টার- ইনজেনুইটি। হেলিকপ্টারকে সঙ্গে নিয়ে নাসার যে রোভার পৃথিবী থেকে মঙ্গলের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিল সাড়ে ৬ মাস আগে। গত ৩০ জুলাই।

মঙ্গলের আকাশে উড়বে ইনজেনুইটি। ছবি সৌজন্যে: নাসা।

মঙ্গলের আকাশে উড়বে ইনজেনুইটি। ছবি সৌজন্যে: নাসা।

মঙ্গলে যে হেলিকপ্টার উড়তে চলেছে তার ওজন ১.৮ কিলোগ্রাম (৪ পাউন্ড)। যার মাথার উপরে রয়েছে দু’টি ব্লেড বা রোটর। প্রত্যেকটির ব্যাস ৪ ফুট বা ১.২ মিটার।

রোভার পারসিভের‌্যান্স লাল গ্রহের ‘জেজেরো ক্রেটারে’ পা ছোঁয়ানোর আড়াই মাস পর তার শরীর থেকে বেরিয়ে আসবে বলরামের হাতে গড়া হেলিকপ্টার ইনজেনুইটি। তার পরের এক মাসে মোট ৫ বার মঙ্গলের আকাশে উড়বে সেই হেলিকপ্টার। প্রতি বার দেড় মিনিটের জন্য। লাল গ্রহের পিঠ থেকে তা উড়বে সর্বাধিক ১০০ মিটার উচ্চতায়।

স্বপ্নপূরণের তিন জাদুকর। চার্লস এলাচি (বাঁ দিক থেকে), জে বব বলরাম ও অনুভব দত্ত।

স্বপ্নপূরণের তিন জাদুকর। চার্লস এলাচি (বাঁ দিক থেকে), জে বব বলরাম ও অনুভব দত্ত।

বায়ুই নেই প্রায়, কী ভাবে উড়বে হেলিকপ্টার?

বিজ্ঞান বলে, পৃথিবীতে ১ লক্ষ ফুট বা সাড়ে ৩০ হাজার মিটার উঁচুতে ওড়া আর মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে ওড়াটা কার্যত একই রকমের। কিন্তু পৃথিবীতে তো হেলিকপ্টার ওড়ে তার ৭ ভাগের এক ভাগ উচ্চতা পর্যন্ত। তার বেশি উচ্চতায় তো পৃথিবীতে হেলিকপ্টার ওড়ানোর প্রযুক্তি করায়ত্ত হয়নি আমাদের। তার উপর আবার মঙ্গলের হেলিকপ্টারের কয়েক কিলোগ্রাম ওজনও থাকতে হবে। তার মধ্যে ভারী ব্যাটারি থাকবে। থাকবে যে যোগাযোগের জন্য রেডিও। তাদের ওজনটাকে তো আর উড়িয়ে দেওয়া যাবে না!

আর সেটাই ছিল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলরামের সামনে। নাসার সামনেও। শেষ পর্যন্ত পথ দেখান বলরামই। ভ্যাকুয়াম চেম্বার আর জেপিএল-এ ২৫ ফুট লম্বা স্পেস সিম্যুলেশন চেম্বারে পরীক্ষানিরীক্ষায় উতরে যায় বলরামের স্বপ্নের হেলিকপ্টার। তার পরেই তাকে পাঠানো হয় মঙ্গল অভিযানে। গত সেপ্টেম্বরে।

ছবি সৌজন্যে: নাসা।

nasa Mars Rover
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy