রংবেরঙের পালকের জন্য ময়ূরের জুড়ি মেলা ভার। ময়ূরপুচ্ছের মনভোলানো রূপ এমনিতেই সকলের প্রিয়। এ বার নতুন গবেষণায় জানা গেল, সেই পালক থেকে নাকি ঠিকরে বেরোয় আলো! সম্প্রতি এমনটাই দাবি করেছেন মার্কিন গবেষকদের এক দল।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ময়ূরের পালকে এক ধরনের অতি সূক্ষ্ম গঠন বা ‘ন্যানোস্ট্রাকচার’ থাকে। তার উপর আলো পড়লে সেই আলো লেসার রশ্মির মতো চারদিকে বিচ্ছুরিত হয়। আর সেই কারণেই নাকি ময়ূরের পালকে নীল-সবুজ রঙের ঝিকিমিকি দেখা যায়। সম্প্রতি ময়ূরপুচ্ছ নিয়ে নানা পরীক্ষানিরীক্ষার পর প্রাণিজগতের এই অদ্ভূত রহস্যের বিষয়ে জানতে পেরেছেন আমেরিকার ফ্লরিডা পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটি এবং ইয়ংস্টাউন স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা।
আরও পড়ুন:
লেসারের পুরো নাম হল ‘লাইট অ্যামপ্লিফিকেশন বাই স্টিমুলেটেড এমিশন অফ রেডিয়েশন’। নির্দিষ্ট কিছু রঞ্জক বা স্ফটিকজাতীয় পদার্থের পরমাণুগুলির উপর আলো পড়লে তা থেকে ফোটন কণার স্রোত নির্গত হয়। আর যদি এই নির্গত তরঙ্গগুলির পর্যায় একে অপরের সঙ্গে মিলে যায়, তা হলেই তাকে লেসার রশ্মি বলা চলে। তবে, এই ঘটনা প্রকৃতিতে বিরল নয়। আর সে কারণেই বিজ্ঞানীরা প্রাণিজগতে এমন উদাহরণ খুঁজছিলেন, যাতে জৈবিক লেসার তৈরি করা যায়। খুঁজতে খুঁজতে ময়ূরের পালকের এই বিশেষ বৈশিষ্ট্য আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানীরা।
গবেষণায় দেখা যায়, ময়ূরের পালকের উপর বিভিন্ন জায়গায় অতি সূক্ষ্ম ন্যানোস্ট্রাকচারের আকারের ‘অপটিক্যাল ক্যাভিটি’ রয়েছে। এগুলি থেকে দু’টি ভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যের ‘লেসার’ আভা বিচ্ছুরিত হয়— একটি সবুজ, অন্যটি কমলা। দেখা যায় যে, প্রতিটি পালক থেকেই কমবেশি এই দু’ধরনের তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো নির্গত হচ্ছে। আর তাতেই আরও রঙচঙে দেখাচ্ছে ময়ূরের পালক। আশা করা হচ্ছে, এই গবেষণা অদূর ভবিষ্যতে লেসার প্রযুক্তির অগ্রগতিতেও সাহায্য করবে।