Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Lunar South Pole

একটুও আলো নেই, পদে পদে ‘বিপদ’! কী আছে চাঁদের অনাবিষ্কৃত দক্ষিণ মেরুতে?

চাঁদের দক্ষিণ মেরু এখনও পর্যন্ত অনাবিষ্কৃত। ইসরোর চন্দ্রযান-৩ যদি সফল ভাবে চাঁদের মাটি ছুঁতে পারে, তবে দক্ষিণ মেরুতে সেটাই হবে বিশ্বের প্রথম সফল অভিযান।

What the South Pole of Moon is hiding as most of the Lunar Exploration is targeted towards it.

চাঁদের কক্ষপথে চন্দ্রযান-৩। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০২৩ ১৯:১৮
Share: Save:

চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নামার কথা ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর তৈরি চন্দ্রযান-৩-এর। উৎক্ষেপণের পর থেকে সেই দক্ষিণ মেরুর দিকেই এগিয়ে চলেছে মহাকাশযানটি। তবে ইসরো একা নয়। অন্য দেশগুলিও চন্দ্র অভিযানে পাখির চোখ করে এই দক্ষিণ মেরুকে।

ইসরোর চন্দ্রযান-৩ ছাড়াও চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নামার কথা আরও এক মহাকাশযানের। আগামী ১১ অগস্ট রাশিয়ার লুনা-২৫ মিশন উৎক্ষেপণের কথা। তার গন্তব্যও চাঁদের দক্ষিণ মেরু।

কিন্তু কেন? কী আছে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে? কেন বার বার সেখানেই মহাকাশযান পাঠানোর চেষ্টা করা হয়? কেনই বা ব্যর্থতার হারও সেখানেই বেশি?

চাঁদের দক্ষিণ মেরু এখনও পর্যন্ত অনাবিষ্কৃত। ১৯৬৯ সালে নীল আর্মস্ট্রংরা চাঁদের উত্তর গোলার্ধের একটি অংশে নেমেছিলেন। তার পর থেকে এখনও পর্যন্ত চাঁদে যে ক’টি সফল অভিযান হয়েছে, সবই উত্তর গোলার্ধকে কেন্দ্র করে। ইসরোর চন্দ্রযান-৩ যদি সফল ভাবে চাঁদের মাটি ছুঁতে পারে, তবে দক্ষিণ মেরুতে সেটাই হবে বিশ্বের প্রথম সফল অভিযান।

২০২০ সালে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা এবং জার্মান এরোস্পেস সেন্টারের যৌথ প্রচেষ্টায় নির্মিত সোফিয়া (স্ট্র্যাটোস্ফেরিক অবজারভেটরি ফর ইনফ্রেয়ারড অ্যাস্ট্রোনমি) টেলিস্কোপ চাঁদের দক্ষিণ মেরু সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য আবিষ্কার করে। জানা যায়, এই অংশ জল এবং অন্যান্য একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ লুকিয়ে রেখেছে চাঁদ।

চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সূর্যের আলো পড়ে না। এই অংশটি চিরআঁধারে নিমজ্জিত। বিজ্ঞানীদের মতে, এই অংশে প্রাণের অস্তিত্বের জন্য উপযোগী সম্পদ পাওয়া যেতে পারে। তবে এই অংশ যতটা সম্ভাবনাময়, ততটাই ‘বিশ্বাসঘাতক’। দক্ষিণ মেরুর পদে পদে রয়েছে বিপদ এবং প্রতিকূলতার হাতছানি। অংশটি সম্পূর্ণ রূপে বরফে মোড়া। এখানে বিশাল বিশাল কিছু খাদ রয়েছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে খাদের বিস্তার হাজার কিলোমিটারেরও বেশি। আলো কম থাকায় উন্নত প্রযুক্তি সম্বলিত মহাকাশযানও এই অংশে এসে কাবু হয়।

চাঁদের দক্ষিণ মেরুর অন্যতম প্রতিকূলতা হল তাপমাত্রা। এখানকার তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ২৩০ ডিগ্রি পর্যন্ত নীচে নেমে যায়। ফলে বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি অনেক সময় এই অংশে পৌঁছে ঠান্ডার কারণে বিগড়ে যায়।

বিজ্ঞানীদের ধারণা, চাঁদের দক্ষিণ মেরুর মাটি রোবটের মাধ্যমে খোঁড়া গেলে তরল জলও মিলতে পারে। এ ছাড়া, এই অংশে বেশ কিছু উঁচু পর্বত রয়েছে। সেগুলির চূড়া সর্ব ক্ষণ আলোকিত থাকে। সৌরশক্তির বণ্টনে এই পর্বতচূড়া ব্যবহার করা যেতে পারে।

গত ১৪ জুলাই দুপুর ২টো ৩৫ মিনিটে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধওয়ান স্পেস সেন্টারের ‘লঞ্চিং প্যাড’ থেকে চাঁদের অনাবিষ্কৃত দক্ষিণ মেরুর উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিল ‘চন্দ্রযান-৩’। আগামী ২৩ অগস্ট বিকেল ৫টা ৪৭ মিনিটে রোভার প্রজ্ঞানকে পেটের ভিতরে নিয়ে ‘পাখির পালকের মতো অবতরণ’ (সফ্‌ট ল্যান্ডিং) করার কথা এই চন্দ্রযানের ল্যান্ডার বিক্রমের। চার বছর আগে ২০১৯ সালে ঠিক ওই পর্যায়ে এসে ব্যর্থ হয়েছিল ইসরোর ‘চন্দ্রযান-২’। এ বার কি ইসরো যুদ্ধজয় করতে পারবে? অপেক্ষার আর মাত্র ১৪ দিন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lunar South Pole Chandrayaan-3 Moon ISRO NASA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE