Advertisement
E-Paper

‘চুরি’ ধূমকেতুর কাছে মহাকাশ যান ‘রোসেটা’

গ্রহ, উপগ্রহের পরে এ বার ধূমকেতুর কাছে পৌঁছল মহাকাশ যান। ১০ বছর ধরে ধাওয়া করার পরে ধূমকেতু ৬৭পি বা চুরিয়মোভ-গেরাসিমেনকো (চুরি)-র কাছে পৌঁছল ইউরোপীয় মহাকাশ যান রোসেটা। বুধবার এ খবর জানিয়েছে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি। এটি এখন ধূমকেতুর ১০০ কিলোমিটার উপরে এক কক্ষপথে ঘুরছে। ২০০৪ সালের মার্চ মাসে এরিয়েন রকেটে চেপে যাত্রা শুরু করে রোসেটা।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৪ ১৮:৩৭
ছবি: এ এফ পি।

ছবি: এ এফ পি।

গ্রহ, উপগ্রহের পরে এ বার ধূমকেতুর কাছে পৌঁছল মহাকাশ যান। ১০ বছর ধরে ধাওয়া করার পরে ধূমকেতু ৬৭পি বা চুরিয়মোভ-গেরাসিমেনকো (চুরি)-র কাছে পৌঁছল ইউরোপীয় মহাকাশ যান রোসেটা। বুধবার এ খবর জানিয়েছে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি। এটি এখন ধূমকেতুর ১০০ কিলোমিটার উপরে এক কক্ষপথে ঘুরছে।

২০০৪ সালের মার্চ মাসে এরিয়েন রকেটে চেপে যাত্রা শুরু করে রোসেটা। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে সৌরমণ্ডলের ভিতর দিয়ে যাত্রা শেষে ৬৭পি ধূমকেতুর পাশে পৌঁছয় ওই মহাকাশ যান। এই ধূমকেতুর কাছে পৌঁছতে গিয়ে রোসেটাকে নানা বাধা পেরিয়ে অতিক্রম করতে হয়েছে প্রায় ৬০০ কোটি কিলোমিটার পথ। দুরুহ এই যাত্রাপথে জার্মানির ডার্মস্টাড থেকে বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদ্‌রা তাকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। পৃথিবী এবং মঙ্গলের মার্ধাকর্ষণ শক্তিকে ব্যবহার করে বাড়ানো হয়েছে রোসেটার গতি। এই দীর্ঘ পথে শক্তি বাঁচানোর জন্য তাকে ৩১ মাসের জন্য অকেজো করে রাখা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তার কাজ আবার চালু করা হয়।

গত দু’মাস ধরে ধীরে ধীরে কমানো হয়েছে রোসেটার গতি। ধূমকেতুটির গতি ঘণ্টাপ্রতি প্রায় ৫৫ হাজার কিলোমিটার। কাজেই রোসেটার গতি এমন ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয় যাতে এটি ধূমকেতু সাপেক্ষে প্রতি সেকেন্ডে এক মিটার গতিতে চলে। এর ফলে ধূতকেতুটির উপরে পর্যবেক্ষণ চালানো সহজ হবে। ইতিমধ্যেই রোসেটা থেকে তথ্য পাওয়া গিয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, ওই ধূমকেতুপৃষ্ঠের উষ্ণতা মাইনাস ৭২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এত দিন ধূমকেতুটির উষ্ণতা এর থেকে ২০ ডিগ্রি কম বলে মনে করা হত।

দূরত্বের কারণে পৃথিবী থেকে কোনও সংকেত পাঠালে তা ২২ মিনিট পরে রোসেটায় পৌঁছচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাই ধূমকেতুর কাছে পৌঁছনোর জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশগুলি সোমবার রাতেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মার্ধ্যাকর্ষণ শক্তি এতই কম যে রোসেটাকে ত্রিভূজাকৃতির কক্ষপথ বজায় রাখতে মাঝেমধ্যেই ‘থ্রাস্টার’ ব্যবহার করতে হবে। আগামী ১৫ মাস ধরে রোসেটা এ ভাবেই ঘুরবে।

এখানেই শেষ নয়। সব কিছু ঠিকঠাক চললে এ বছরের নভেম্বরে রোসেটার সঙ্গে থাকা যান ফিলায়ে ল্যান্ডারকে ধূমকেতুর উপরে নামাতে চায় ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি। ফিলায়ে ল্যান্ডারটিতে হারপুনের মতো একটি অংশ আছে। এটি ধূমকেতুর উপরে গেঁথে যেতে পারে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ফিলায়ে ল্যান্ডার নামানোর পরে চালানো হবে নানা পরীক্ষা। ধূমকেতুর উপরে গর্ত করে পরীক্ষা চালানোরও পরিকল্পনা রয়েছে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি-র। এর ফলে ধূমকেতু সম্পর্কে আরও তথ্য জানা যাবে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা। এই ধরনের তথ্য শুধু ধূমকেতু নয়, জন্মকালে সৌরমণ্ডলের অবস্থা কেমন ছিল সে বিষয়ে জানতেও সাহায্য করবে।

রোসেটা

• ওজন তিন হাজার কেজি। এর মধ্যে অর্ধেক জ্বালানি রয়েছে।

• দু’টি ১৪ মিটার লম্বা সোলার প্যানেল। এর সাহায্যে তৈরি বিদ্যুত যানটিকে সচল রাখে।

• যানটিতে ১১টি পরীক্ষানিরীক্ষা চালানোর যন্ত্র রয়েছে।

• সঙ্গে থাকা ফিলায়ে-তে একটি ড্রিলার-সহ ন’টি যন্ত্র রয়েছে।

• ২ মার্চ ২০০৪-এ যাত্রা শুরু করে।

চুরি ধূমকেতু

• ছ’বছর পর পর পৃথিবী থেকে দেখা যায়। তখন এটি সূর্যের খুব কাছে চলে আসে।

• প্রায় চার কিলোমিটার লম্বা, ৩.৫ কিলোমিটার চওড়া।

• ১২ ঘণ্টা ৭ মিনিটে নিজের চার পাশে এক বার পাক খায়।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy