Advertisement
E-Paper

হাতির হানা হাসপাতালে, আতঙ্ক

জ্বরের রোগী আসার বিরাম নেই। শুয়োর ধরা, মশা নিয়ন্ত্রণ, পরিস্রুত জল নিশ্চিত করতেই ছোটাছুটি কম হচ্ছে না। তার উপরে বুনো হাতির হানা শুরু হওয়ায় জেরবার ধূপগুড়ি ব্লক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ আচমকা দুটি বুনো হাতি হাসপাতালের পাঁচিল ভেঙে ঢুকে চত্বরে থাকা কলাগাছ উপড়ে খেয়েছে। কোনও ক্ষয়ক্ষতি না করলেও হাতির হানার আঁচ পেয়ে রোগী, স্বাস্থ্যকর্মীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। জ্বরে আক্রান্ত কয়েকজন রোগী ভয় পেয়ে কম্বল মুড়ি দিয়ে হাসপাতালে ছাদে উঠে পড়েন।

নিলয় দাস

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৪ ০১:১৩
ধূপগুড়ি হাসপাতালে তোলা ছবি।

ধূপগুড়ি হাসপাতালে তোলা ছবি।

জ্বরের রোগী আসার বিরাম নেই। শুয়োর ধরা, মশা নিয়ন্ত্রণ, পরিস্রুত জল নিশ্চিত করতেই ছোটাছুটি কম হচ্ছে না। তার উপরে বুনো হাতির হানা শুরু হওয়ায় জেরবার ধূপগুড়ি ব্লক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ আচমকা দুটি বুনো হাতি হাসপাতালের পাঁচিল ভেঙে ঢুকে চত্বরে থাকা কলাগাছ উপড়ে খেয়েছে। কোনও ক্ষয়ক্ষতি না করলেও হাতির হানার আঁচ পেয়ে রোগী, স্বাস্থ্যকর্মীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। জ্বরে আক্রান্ত কয়েকজন রোগী ভয় পেয়ে কম্বল মুড়ি দিয়ে হাসপাতালে ছাদে উঠে পড়েন। প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে কলাগাছ খেয়ে হাতি দুটি ধীরে সুস্থে ফের জঙ্গলের দিকে চলে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। কিন্তু, আতঙ্ক পুরোপুরি কাটেনি।

কয়েক দিন ধরে নাওয়া-খাওয়ার সময় পাচ্ছেন না ধূপগুড়ির বিএমওএইচ সাধন সরকার। এ দিন ভোরে হাতির হানার খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান। হাতি চলে যাওয়ার পরেও দুশ্চিন্তা কমেনি তাঁর। তিনি বলেন, “মশা তাড়ানোর প্রচার চালাচ্ছি। অসুখ হলে তার ওষুধ দিতে পারি। তবে হাতি তাড়ানোর উপায় আমার জানা নেই। হাসপাতালে এত রোগী কারও ক্ষতি হল কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। ভোরে তবে দেওয়াল ভাঙা ছাড়া অন্য ক্ষতি করেনি।” ফের হাতি হানা দিলে কী হবে তা ভেবেই নানা জায়গায় ফোন করতে দেখা গেল তাঁকে।

হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা এখন ৭০ জন। প্রবল জ্বর নিয়ে সোমবার থেকে হাসপাতালে ভর্তি ক্ষেতি ফুলবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা সুরেশ বর্মন। তাঁর কথায়, “এত জ্বর যে ঘুমোতে পর্যন্ত পারিনি। ভোরের দিকে ঘুম এসেছিল। সকলের চিৎকার শুনে মুখ তুলে দেখি জানালা দিয়ে দেখি দুটি হাতি ঘুরছে। ভাবলাম জ্বরের ঘোরে বোধহয় হাতি দেখছি। খানিকক্ষণ পরে ঘোর ভাঙে। কখন দেওয়াল ভেঙে ঢুকে পড়ে ভয়ে দিশা হারিয়ে ফেলি।” জ্বরে আক্রান্ত ঘোষপাড়ার বাসিন্দা লক্ষ্মী ঘোষ বলেন, “হাসপাতালে হাতিও ঢুকেছে বলে চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায়। সব জানালা বন্ধ করে বসে থাকি।” কয়েকজন ছাদে চলে যান।

ধূপগুড়ি হাসপাতাল থেকে মরাঘাট জঙ্গলের সীমানা খুব দূর নয়। বড় জোর ২৫ কিলোমিটার। সেই জঙ্গল থেকে দুটি হাতি গাদং গ্রাম পেরিয়ে তারা শহরে ঢোকার মুখে বামনি নদীতে বেশ কিছুক্ষণ জল খায়। দুলকি চালে এ পাড়া ও পাড়ার রাস্তা, বাড়ির উঠোন পেরিয়ে হাসপাতালের ১০ ফুট উঁচু পাঁচিলের কাছে কলাগাছ দেখে থমকে দাঁড়ায়। পা দিয়ে দেওয়াল ভেঙে ফেলে। হাসপাতাল চত্বরে পৌঁছে কর্মী আবাসনের কাছে থাকা কলা গাছ গাছ খেতে শুরু করে। আওয়াজ পেয়ে আঁতকে ওঠেন কর্মীরা। শক্তপোক্ত পাঁচিল লাথি মেরে ভেঙে হাতিরা ঢুকে অন্তর্বিভাগের দেওয়াল ভেঙে সব কিছু তছনছ করে দিতে পারে, এই আশঙ্কায় অনেক রোগী শরীরে শয্যা থেকে লাফ দিয়ে নেমে সোজা ছাদে চলে যান। অন্তর্বিভাগ দিয়ে যাতে হাতিরা ভেতরে ঢুকে যেতে না পারে তা ঠেকাতে গেটে তালা মেরে রাখেন পাহারাদার।

elephant attack hospital dhupguri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy