আই লিগে আট গোল হয়ে গেল ইস্টবেঙ্গলের জবি জাস্টিনের। ফাইল ছবি।
ফিরতি ডার্বিতেও জয়জয়কার ইস্টবেঙ্গলের। কোলাদোর গোলে প্রথমার্ধে এগিয়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। দ্বিতীয়ার্ধে ২-০ করলেন জবি জাস্টিন। মোহনবাগান চেষ্টা করেও পারল না গোলশোধ করলে। ফলে, আই লিগে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবকে টানা দু’বার হারাল ইস্টবেঙ্গল।
আই লিগের ফিরতি ডার্বিতে খানিকটা খেলার গতির বিপরীতেই এগিয়ে গিয়েছিল লাল-হলুদ শিবির।দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝি ব্যবধান বাড়ল। এর মধ্যে অফসাইডের জন্য বাতিল হল মোহনবাগানের গোল।বাঙালির চিরকালীন আবেগের ম্যাচে উপভোগ্য লড়াই দেখলেন যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে হাজির ৬২ হাজারের বেশি ফুটবলপ্রেমীরা। সাক্ষী থাকলেন পালতোলা নৌকা থামিয়ে লাল-হলুদ মশালের জ্বলে ওঠার।
আই লিগে এ বারের ডার্বি জিততে বেশি তাগিদ ছিল মোহনবাগানের। প্রথম দেখায় এগিয়ে গিয়েও হারতে হয়েছিল ২-৩ ফলে। তার বদলা নেওয়ার জেদ যেমন ছিল, তেমনই লিগের দৌড়ে টিকে থাকতে গেলে জেতা ছাড়া উপায় ছিল না সবুজ-মেরুন ক্লাবের। কিন্তু তা আর হল না। ১৪ ম্যাচে ২১ পয়েন্টে ছয় নম্বরেই আটকে থাকল মোহনবাগান। আর ১৩ ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট হল ইস্টবেঙ্গলের। চার নম্বরে রইল তারা।
৭৮ মিনিটে ডোভালের পরিবর্তে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে নামলেন এনরিকে। ৭৫ মিনিটে কর্নার থেকে জবি জাস্টিনের গোলে ২-০ এগিয়ে গেল ইস্টবেঙ্গল। আই লিগে এটা জবির অষ্টম গোল। হলুদ কার্ড দেখলেন বাগানের ক্যালডেইরা। জবি জাস্টিনের জোরালো শট আটকালেন বাগান ডিফেন্ডার কিংসলে। ৬৬ মিনিটে ডিকাকে আটকালেন কাশিম। ফের পেনাল্টির আবেদন মোহনবাগান ফুটবলারদের। কিন্তু, তা নাকচ করলেন রেফারি। ডানমাইয়ার পরিবর্তে ৬৩ মিনিটে নামলেন ব্র্যান্ডন। এক ঘণ্টা কেটে গেল। ১-০ এগিয়ে রয়েছে ইস্টবেঙ্গল। অফসাইডের জন্য বাতিল হল মোহনবাগানের গোল। ৫২ মিনিটে কর্নার থেকে গোল করেছিলেন ডিকা। ৫০ মিনিটে পিন্টু মাহাতোর পরিবর্তে মোহনবাগান নামাল শেখ ফৈয়াজকে। ৪৭ মিনিটে সনিকে বাজে ট্যাকলের জন্য কার্ড দেখলেন ইস্টবেঙ্গলের চুলোভা। শেষ হয়ে গেল প্রথমার্ধ। এগিয়ে থাকল ইস্টবেঙ্গল। দ্বিতীয়ার্ধে মোহনবাগান কি লড়াইয়ে ফিরতে পারবে? ৩৫ মিনিটে কোলাদোর গোলে এগিয়ে গেল ইস্টবেঙ্গল। ২৭ মিনিটে ডিকার সামনে বাধা হয়ে উঠলেন বোরহা।
আরও পড়ুন: সনি বা ডিকা নন, রেফারি আতঙ্কে ভুগছে ইস্টবেঙ্গল শিবির!
আরও পড়ুন: খালিদ না আলেসান্দ্রো, ডার্বিতে বাজিমাত করবেন কোন কোচ
২৫ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে সনির ক্রস। ডিকা ঠিকমতো ট্র্যাপ করতে পারলেন না। ২৩ মিনিটে কোলাদোর শট বাইরে গেল। ২২ মিনিটে বল পায়ে বক্সে ঢুকে পড়লেন সনি। পড়েও গেলেন। পেনাল্টির আবেদন নাকচ রেফারির। ২০ মিনিটে হলুদ কার্ড দেখলেন ওমর। ১৮ মিনিটে বাগান রক্ষণে ভুল-বোঝাবুঝি থেকে বল পেয়ে গেলেন জবি জাস্টিন। শেষ পর্যন্ত তা ক্লিয়ার করলেন অভিষেক। প্রথম ১৫ মিনিটে গোলশূন্য থাকল ডার্বি। আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে জমে উঠল ম্যাচ। সনির কর্নার। ওয়ান-টু খেলে সনির ক্রস বক্সে। কিন্তু, তা কাজে লাগানো গেল না। কিংসলের পায়ে লেগে বল গেল রক্ষিতের হাতে। ইস্টবেঙ্গলের ক্রমাগত আক্রমণ। ৬ মিনিটে জবি জাস্টিনের ঠিকঠাক শট নিতে পারলেন না। ফিরতি বলে ডানমাইয়ার শট ধরলেন বাগান গোলরক্ষক শিল্টন পাল। ১ মিনিটেই লাল-হলুদ রক্ষণের ভুলে সুযোগ পেয়ে গেল মোহনবাগান। কিন্তু ডিকার শট সোজা গেল গোলরক্ষক রক্ষিত ডাগরের হাতে।
তবে লিগের প্রথম ডার্বির মোহনবাগানের থেকে এই মোহনবাগান অনেকটাই আলাদা। তখন কোচ ছিলেন শঙ্করলাল চক্রবর্তী। এখন বাগানের কোচ খালিদ জামিল। যিনি আবার গত মরসুমে ছিলেন ইস্টবেঙ্গলের কোচ। স্বাভাবিক ভাবেই পুরনো ক্লাবের বিরুদ্ধে হিসেব চুকিয়ে নেওয়ার একটা ব্যাপার তাঁরও রয়েছে। তবে খালিদ কখনও ডার্বিতে জেতেননি। ইস্টবেঙ্গলের কোচ হিসেবে কখনও হারাতে পারেননি মোহনবাগানকে। এ বার মোহনবাগানের জার্সিতে ইস্টবেঙ্গলকে হারানোর সুযোগ তাঁর সামনে। ফিট সনি নর্দে তাঁর তুরুপের তাস। আই লিগে প্রথম ডার্বিতে খেলেননি সনি। হেরেছিল মোহনবাগান। ফলে, রবিবার দলকে জিতিয়ে মোহনবাগান জনতার কাছে নায়ক হয়ে ওঠার তাগিদ তাঁরও কম নেই।
অন্যদিকে, আলেসান্দ্রো প্রথম ডার্বিতে জিতেছিলেন। পিছিয়ে পড়েও ছিনিয়ে এনেছিলেন জয়। যা ছিল স্প্যানিশ কোচের প্রথম ডার্বি। ফলে, এই ম্যাচ জিততে গেলে কী করা উচিত, সেই অভিজ্ঞতা তাঁর রয়েছে। জবি জাস্টিন, কোলাদোর ফর্মে থাকাও তাঁর বড় শক্তি। তবে ডার্বি নিয়ে ম্যাচ, যেদিন কিনা ইতিহাস, পরিসংখ্যান বিচার্য হয়ে ওঠে না। আসল সময় কোন দল উজাড় করে দিতে পারবে, তার উপরই নির্ভর করে ডার্বির ফলাফল।
(মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল থেকে এটিকে। কলকাতা ডার্বি, আইলিগ থেকে আইএসএল, কলকাতা ময়দানের সমস্ত খবর জানতে পড়ুন আমাদের খেলা বিভাগ।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy