Advertisement
E-Paper

ও’কিফের ভারত বধের নেপথ্যে এক প্রাক্তন ভারতীয় স্পিনার

এক ভারতীয়ের হাতেই তৈরি হয়েছিলেন এই অস্ট্রেলীয় স্পিনার। আর তার পরেরটা তো ইতিহাস। ভারতের স্পিনিং ট্র্যাকের অসাধারণ ব্যবহার দেখল ক্রিকেট বিশ্ব। দেখল ভারতের গর্বের বিশ্বসেরা স্পিনারদের ছাপিয়ে কী ভাবে ভারতকেই নাস্তানাবুদ করে হারালেন অস্ট্রেলিয়ান স্পিনার স্টিভ ও’কিফ।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ১৮:০২
যাঁর বলে হারতে হল ভারতকে। অস্ট্রেলিয়ান স্পিনার স্টিভ ও’কিফ। ছবি: রয়টার্স।

যাঁর বলে হারতে হল ভারতকে। অস্ট্রেলিয়ান স্পিনার স্টিভ ও’কিফ। ছবি: রয়টার্স।

এক ভারতীয়ের হাতেই তৈরি হয়েছিলেন এই অস্ট্রেলীয় স্পিনার। আর তার পরেরটা তো ইতিহাস। ভারতের স্পিনিং ট্র্যাকের অসাধারণ ব্যবহার দেখল ক্রিকেট বিশ্ব। দেখল ভারতের গর্বের বিশ্বসেরা স্পিনারদের ছাপিয়ে কী ভাবে ভারতকেই নাস্তানাবুদ করে হারালেন অস্ট্রেলিয়ান স্পিনার স্টিভ ও’কিফ। বুঝিয়ে দিলেন তাঁদের হালকা ভাবে নেওয়াটা উচিত হয়নি ভারতের। আড়াই দিনেই শেষ হয়ে যাওয়া ম্যাচ লেখা থাকল সেই স্পিনারের নামে যিনি উঠে এসেছেন এক ভারতীয় কোচের হাত ধরেই। ম্যাচ শেষে তাঁর নামের পাশে লেখা থাকল ১২ উইকেট। এ পর্যন্ত কেরিয়ারের সেরা বোলিংটিও করে ফেললেন তিনি। দুই ইনিংসেই ৩৫/৬। আর এই সাফল্যের পিছনে জুড়ে রইলেন সেই ভারতীয় যাঁকে ২০১৫তে অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলের বোলিং কোচ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেই দল ভারত সফরেও এসেছিল। এর পর ওই একই বছর বাংলাদেশে সফররত অস্ট্রেলিয়া দলের কোচিং স্টাফ টিমেও ছিলেন তিনি। তিনি শ্রীধরণ শ্রীরাম। সেই সময় যাঁকে পেয়েছিলেন স্টিভ ও’কিফ।

আরও খবর: ঘূর্ণি উইকেট ব্যুমেরাং! ও’কিফের স্পিনে হাবুডুবু খেয়ে হারল ভারত

ও’কিফের ক্রিকেট জীবনের শুরুটা যে খুব মসৃণ ছিল এমনটা নয়। তাঁর অ্যাকাডেমির কোচ তাঁকে ডাকত ‘পাই-চাকার’ বলে। ‘পাই-চাকার’ মানে যাঁদের নিজেদের বলের ওপর কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকে না। শুধু তাই নয়, শুনতে হয়েছে তিনি নাকি স্পিন করতে পারেন না। কখনও খুব ফাস্ট আবার কখনও খুব স্লো হয়ে যায়। সঙ্গে রয়েছে চোট প্রবণতা। কিন্তু এই সব কিছুতে ভেঙে পড়েননি দেননি ও’কিফ। বরং এই সমালোচনাকে মাথায় রেখেই নিজের উন্নতি করতে শুরু করেন । আর তখনই পেয়ে যান শ্রীধরণ শ্রীরামকে। প্রথম ইনিংসের পরই ও’কিফ বলেছিলেন, ‘‘আমি খুব ভাল কোচ পেয়েছি। যাঁরা সোজাসাপটা ভাবে আমার ভুল ধরিয়ে দিয়েছেন। সরাসরি বলেছেন সব সমস্যার কথা। যেটা খুব ভাল। আমার মতে শ্রী (শ্রীরাম) দারুণ স্পিন বোলিং কোচ। আমি অনেকটা সময় ওর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। যেটা আমাকে অনেক সাহায্য করেছে।’’

ও’কিফ এর আগে চারটি টেস্ট খে‌লেছেন। অভিষেক হয়েছিল ২০১৪তে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। কিন্তু নিয়মিত খেলার সুযোগ হয়নি। দেশের হয়ে খেলার জন্য বিগ ব্যাশ লিগ থেকেও নাম তুলে নিয়েছিলেন। যাতে ভারত সফরের জন্য নিজেকে ভাল মতো তৈরি করতে পারেন। এর পর মন্টি পানেসরের সঙ্গেও দুবাইয়ে অনুশীলন করেন ও’কিফ। যে মন্টি পানেসরের হাত ধরে ২০১২তে ভারতে সিরিজ জিতেছিল ইংল্যান্ড। দুবাইয়ে ভারত সফরের আগে শিবির করেছিল অস্ট্রেলিয়া। সঙ্গে ছিলেন বোলিং কোচ শ্রীরাম। যাঁর থেকে ভারতীয় কন্ডিশনে কী ভাবে বল করতে হবে সেটা শিখেছিলেন। আর শেষ পর্যন্ত ভারতের মাটিতেই নিজেকে প্রমাণ করলেন ও’কিফ। বলেন, ‘‘মন্টির সঙ্গে অনুশীলন করে দারুণ লেগেছে। শুধু দু’দিন সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু ওই দু’দিনেই ও আমার মধ্যে এই বিশ্বাসটা ঢুকিয়ে দিয়েছিল যে আমি যেটা করছি ঠিক করছি। কিন্তু সব কিছুর উপরে রয়েছে শ্রী-র প্রভাব। প্রথম আমি ওকে পেয়েছিলাম চেন্নাইয়ে ‘এ’ সিরিজের সময়। আমি মাঠে এসে ওর সঙ্গে কথা বলি। ও যেহেতু স্থানীয়, সে কারণে তখন বেশির ভাগ সময়টাই ওঁর সঙ্গে কাটিয়েছি। ও আমার জন্য সব থেকে বড় সাপোর্ট ছিল।’’

উইকেট নেওয়ার পর স্টিভ ও’কিফের উচ্ছ্বাস।

এত কিছুর পর প্রথম থেকে তাঁর নিজের দলও তাঁকে এতটা গুরুত্ব দেয়নি। নতুন বলের বোলার হিসেবেই তাঁর কথা ভাবা হয়েছিল। মিশেল স্টার্কের সঙ্গে রাখা হয়েছিল তাঁকে। ও’কিফ বলেন, ‘‘আমি যখন আমার প্রথম ছ’ওভার বল করতে এলাম, আমি ভেবেছিলাম আমি আমার স্বাভাবিক ছন্দেই বল করতে পারব। যে ভাবে অস্ট্রেলিয়ায় বল করি। কিন্তু করতে গিয়ে দেখলাম সঠিক বোলিং হচ্ছে না। প্রথম ছ’ওভার আমি খুব সাধারণ বোলিং করেছিলাম।’’ কিন্তু লাঞ্চের পর মন বদলে বলও বদলে ফেলেন ও’কিফ। বলেন, ‘‘পরিস্থিতি হঠাৎই বদলে গেল। প্রথম ছ’ওভারের পর দ্রুত সব বদলে গেল। উইকেটটাই এ রকম।’’

Steve O'Keefe Sridharan Sreeram India Vs Australia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy