ডেভিস কাপের ইতিহাসে বোধহয় একটা নজিরই! ‘টাই’ শুরুর তিন দিন আগে বিপক্ষের সবচেয়ে বড় তারকা সম্পর্কে বিদেশি দলের প্লেয়ার অকপটে বলছেন, ‘‘আমরা যেন দুই ভাই, যারা দুই ভিন্ন মায়ের সন্তান!’’
বক্তা দিল্লিতে খেলতে আসা চেক প্রজাতন্ত্রের সেরা ডাবলস তারকা রাদেক স্টেপানেক। যাঁর উদ্দেশ্যে বলা তিনি ভারতের কিংবদন্তি ডাবলস প্লেয়ার লিয়েন্ডার পেজ। আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে মিক্সড ডাবলস চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে যিনি বুধবারই নিউইয়র্ক থেকে দিল্লিতে পৌঁছচ্ছেন দেশের হয়ে নামতে।
বিশ্বের ছয় নম্বর সিঙ্গলস তারকা টমাস বার্ডিচ না আসায় ভারতের নন প্লেয়িং ক্যাপ্টেন আনন্দ অমৃতরাজ থেকে শুরু করে এই টাইয়ে ডাবলসে লিয়েন্ডারের পার্টনার রোহন বোপান্না পর্যন্ত প্রায় গোটা ভারতীয় লকার রুমের বিশ্বাস, ‘‘বার্ডিচ এলে ব্যাপারটা আমাদের হয়তো হাতের বাইরেই চলে যেত। কিন্তু ওর অনুপস্থিতিতে মনে হচ্ছে, ভারতের জেতার সুযোগ বেড়েছে।’’
চেকরা ডেভিস কাপ (তিন বার) চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আগে তাদের সঙ্গে ভারতের যাবতীয় মুখোমুখির পরিসংখ্যান হলে তাতেও কৃষ্ণনদের দেশ ০-৩ পিছিয়ে। আর এই চেক দলের অনেকেই তো তাদের ২০১২-’১৩ টানা দু’বার ডেভিস কাপ জেতা টিমে ছিলেন। তার মধ্যে এক বার স্টেপানেক ডাবলস বিশেষজ্ঞ হয়েও ফাইনালের স্কোর ২-২ অবস্থায় ফিফথ্ রাবার-এ সিঙ্গলসে জিতে দেশকে কাপ এনে দিয়েছিলেন। সেই ছত্রিশের বর্ষীয়ান স্টেপানেকের কেরিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার মধুর স্বাদ তিন বছর আগে লিয়েন্ডারের পার্টনারশিপেই।
সেই ২০১২ অস্ট্রেলীয় ওপেন ডাবলস ফাইনালের প্রসঙ্গ দেশের হয়ে খেলতে এসেও তুলছেন স্টেপানেক। বলছেন, ‘‘বিশ্বসেরা ব্রায়ান ভাইদের বিরুদ্ধে ফাইনাল ছিল। কোর্টে নামার জন্য লকার রুমে শেষ মিনিটের অপেক্ষায় রয়েছি আমি আর লি। মোবাইলে সে দিনের এক চেক খবরের কাগজের অনলাইন এডিশনে চোখ বোলাচ্ছিলাম। পাশে দাঁড়ানো লিয়েন্ডারকে হঠাৎ দেখি, ও সেই চেক কাগজ পড়তে শুরু করে দিয়েছে। সে এক অদ্ভুত উচ্চারণ ওর! পড়ে কী বুঝছে সে-ও ঈশ্বরই জানেন। কিন্তু ওই মজার মুহূর্তটাই সে দিন ফাইনালের সমস্ত চাপ আমার থেকে সরিয়ে দিয়েছিল। স্ট্রেট সেটে ব্রায়ানদের হারিয়েছিলাম আমরা। পরে লিয়েন্ডার বলেছিল, ওই অদ্ভুত উচ্চারণে চেক কাগজ ও প্ল্যান করেই পড়ছিল। মজার পরিস্থিতি তৈরি করে চাপ কাটাতে। এই হল লি!’’
লিয়েন্ডারের প্রাক্তন সার্কিট পার্টনার স্টেপানেক মনে করেন, চেক দলই ফেভারিট। ‘‘ডাবলসে বিপক্ষে লিয়েন্ডার খেলবে বলেই ওই একটা ম্যাচে নিজেদের পিছিয়ে রাখছি। অবশ্য দিল্লির গরম আমাদের কাহিল করতে পারবে না। টিমের প্রায় সবাই ইউএস ওপেন থেকে এসেছে। নিউইয়র্কেও এখন গরম। টিম ডক্টর চার সপ্তাহ আগে দিল্লি এসেছে। আবহ, খাবার নিয়ে ওর থেকে টিপস পাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy