Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

মনের জোরেই গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছেন রোহন

এই সে দিন জিমে ওর সঙ্গে দেখা। ম্যাচ জেতার পর ও তখন কুল ডাউন করছিল। আর আমি আমার ম্যাচের জন্য ওয়ার্ম আপ করছিলাম। সে দিন কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার পর ওর বাচ্চাদের মতো ছটফটানি দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম।

সানিয়া মির্জা
শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৭ ১২:০০
Share: Save:

জেলেনা অস্তাপেঙ্কোর বিরুদ্ধে কয়েকটা ডাবলস ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে আমার। ২০১৬-য় উইম্বলডনে হারিয়েছিলাম ওকে। এ বছর মার্চে ইন্ডিয়ান ওয়েলসেও। তখনই ওর প্রতিভা সম্পর্কে ধারণা হয়েছিল আমার। কিন্তু এপ্রিলে চার্লসটনে ওকে দেখে আমি অবাক হয়ে যাই। এক স্যাঁতসেঁতে দিনে, দমকা হাওয়ার মধ্যে যখন আমরা অনেকেই ঠিকঠাক টাইম করতে পারছিলাম না, তখন লাতভিয়ার এই টিনএজ মেয়েটা উইনারের পর উইনার মেরে আমাদের হাত থেকে ম্যাচটা বার করে নেয়। ও যে স্পেশ্যাল, তা সে দিনই বুঝিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি এতট উন্নতি করে যে রোলঁ গ্যারোজের সিঙ্গলস ফাইনালে উঠে পড়বে, ভাবতেই পারিনি।

এই সে দিন জিমে ওর সঙ্গে দেখা। ম্যাচ জেতার পর ও তখন কুল ডাউন করছিল। আর আমি আমার ম্যাচের জন্য ওয়ার্ম আপ করছিলাম। সে দিন কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার পর ওর বাচ্চাদের মতো ছটফটানি দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। কী আত্মবিশ্বাসী! ও জানত যে, ওর পরের প্রতিদ্বন্দ্বী ক্যারোলিন ওজনিয়াকিকে ও হারাতে পারবে! ওজনিয়াকি কিন্তু ওকে আগেও হারিয়েছে। কিন্তু সেটা নিয়ে ও বেশি ভাবছিলই না। এখানেই চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে অন্যদের তফাত।

টুর্নামেন্টের ৩৪ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও অবাছাই মেয়েদের ফাইনালে উঠল। গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে ওঠাটা যে বিশাল কিছু ব্যাপার নয়, এটা ভেবে কোর্টে নামলেই বরং ও অনেক চাপমুক্ত হয়ে খেলতে পারবে।

এর মধ্যে রোহন বোপান্না ও গ্যাব্রিয়েলা ডাব্রোস্কির মিক্সড ডাবলস চ্যাম্পিয়ন হওয়ার খবরটাই সবচেয়ে রোমাঞ্চকর। অলিম্পিক্সে অসাধারণ পারফরম্যান্সের পরও পদক জয়ের ম্যাচটা আমরা অল্পের জন্য হেরে গিয়েছিলাম। তার পর ওর মানসিক অবস্থা কী হয়েছিল, তা খুব ভাল জানি। সেই সব কঠিন দিনগুলো আমি রোহনের সঙ্গে কাটিয়েছি। সেই হতাশা কাটিয়ে ‘বপস্’ ওর অদম্য মানসিকতা নিয়ে অবশেষে গ্র্যান্ড স্ল্যামের আসরে সাফল্য পেল। ওর এটা প্রাপ্যই ছিল। কে বলতে পারে, হয়তো এখান থেকেই ওর সাফল্যের রাস্তার শুরু।

ফিরে আসি সিঙ্গলস ফাইনালে। আর এক ফাইনালিস্ট সিমোনা হালেপের কিন্তু অনেক কিছু পাওয়ার আছে এই ম্যাচ থেকে। রোমানিয়ার মেয়েটা এ বারের ক্লে কোর্ট মরশুমে দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছে। ওর সামনেও প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাব জয়ের সুযোগ। তা ছাড়া এই একটা জয় ওকে বিশ্বের এক নম্বরও করে তুলবে। অভিজ্ঞতা আর ক্লে কোর্টের জন্য ফেভারিটের তকমা নিয়েও নামবে ও। এত কিছু মাথায় রেখে, এই চাপ সামলে ও পারবে ম্যাচটা জিততে? এই টুর্নামেন্টেরই একটা ম্যাচে বিপক্ষকে ম্যাচ পয়েন্ট থেকে ফিরিয়ে এনে জিতেছে সিমোনা। স্রেফ মনের জোরে লড়াইয়ে ফিরে এসেছিল ও। এর পরেও কি ওর মনের জোর নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়? বোধহয় না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE