Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
পদক প্রত্যাখ্যান গোটা আর্জেন্টিনা দলের, পাল্টা জবাব কনমেবল কর্তাদেরও

বিশ্রী রেফারিং ও সংগঠকদের সততা নিয়েই প্রশ্ন মেসির

‘‘জঘন্য রেফারিং এবং সংগঠকদের দুর্নীতির সঙ্গী হতে চাইনি আমরা। যে ভাবে সেমিফাইনাল এবং তৃতীয় স্থান নির্ধারণের ম্যাচে আমাদের খারাপ রেফারিং-এর শিকার হতে হয়েছে, তার পরে এ ছাড়া আর কোনও উপায় নেই’’, বলে দিলেন মেসি।

উত্তপ্ত: মেসিকে লাল কার্ড দেখাচ্ছেন রেফারি। শনিবার চিলি ম্যাচে। —ছবি রয়টার্স।

উত্তপ্ত: মেসিকে লাল কার্ড দেখাচ্ছেন রেফারি। শনিবার চিলি ম্যাচে। —ছবি রয়টার্স।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৯ ০৪:০৩
Share: Save:

কোপা আমেরিকা সংগঠকদের বিরুদ্ধে তোপ দেগে পদক প্রত্যাখ্যান করলেন লিয়োনেল মেসি। অধিনায়কের সঙ্গী হল প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থানাধিকারী আর্জেন্টিনার পুরো দলই।

‘‘জঘন্য রেফারিং এবং সংগঠকদের দুর্নীতির সঙ্গী হতে চাইনি আমরা। যে ভাবে সেমিফাইনাল এবং তৃতীয় স্থান নির্ধারণের ম্যাচে আমাদের খারাপ রেফারিং-এর শিকার হতে হয়েছে, তার পরে এ ছাড়া আর কোনও উপায় নেই’’, বলে দিলেন মেসি। পাঁচ বারের ব্যালন ডি’ওর জয়ী বিশ্ব ফুটবলের মহাতারকার পরের মন্তব্য, ‘‘পদক নেওয়ার ক্ষেত্রেও একটা সহ্যের সীমা থাকা দরকার। রেফারি আমাকে একটা হলুদ কার্ড দেখাতে পারতেন। অথবা তা দু’জনকেই দেখানো যেত। তা করা হয়নি। হয়তো ব্রাজিল ম্যাচের পর আমি রেফারিং নিয়ে সমালোচনা করেছিলাম বলেই এটা করা হয়েছে।’’

কোপায় শনিবার রাতে আর্জেন্টিনার সঙ্গে ম্যাচ ছিল চিলির। মেসির দল জেতে ২-১ গোলে। আর্জেন্টিনার পক্ষে গোল করেন সের্খিয়ো আগুয়েরো এবং পাওলো দিবালা। চিলির হয়ে একটি গোল শোধ করেন আর্তুরো ভিদাল। কিন্তু বিরতির কিছুক্ষণ আগে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন মেসি এবং চিলির মিডিয়ো গ্যারি মেডেল। ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, বুক দিয়ে গ্যারি বারবার ধাক্কা দিচ্ছেন মেসিকে। মাথা দিয়ে ঢুঁসোও মারা হয় মেসিকে। আর্জেন্টিনা অধিনায়ক পরের দিকে তা আটকানোর চেষ্টা করছেন শুধু। তা সত্ত্বেও রেফারি মারিও দিয়াজ দু’জনকেই বের করে দেন মাঠ থেকে। লালকার্ড দেখে বেরোনোর পরই রাগে এবং ক্ষোভে ফুঁসতে থাকেন মেসি। ম্যাচ জেতার পরও তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আমরা ভাল শেষ করেছি। এটা ঠিক। কিন্তু আমি যা বলেছি সেটাও সত্যি। কারণ আমরা খারাপ রেফারিংয়ের শিকার।’’ এখানেই থেমে থেকে থাকেননি আর্জেন্টিনার অধিনায়ক। বলে দেন, ‘‘এ বারের কোপায় পক্ষপাতদুষ্ট রেফারিং হচ্ছে। এবং সেটা উদ্যোক্তা দেশকে (পড়ুন ব্রাজিল) সাহায্য করার জন্য। জঘন্য রেফারিং।’’ এর আগে ব্রাজিল ম্যাচের পরও ইকুয়েডরের রেফারি রবি জামব্রানোর বিরুদ্ধে তোপ দেগে মেসি বলেছিলেন, ‘‘রেফারি এবং ‘ভার’—দুটোর উপরই এই ম্যাচের পর আস্থা হারিয়েছি।’’

মেসির পাশে দাঁড়িয়ে আর্জেন্টিনা কোচ লিয়োনেল স্কালোনি বলেছেন, ‘‘আমি এখনও বুঝতে পারছি না, মেসিকে কেন বের করে দেওয়া হল। ‘ভার’-এর নিয়ম এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যবস্থা সম্পর্কে অনেকের মতো আমার ধারণাও স্বচ্ছ নয়। হয় সেটা ঠিকমতো প্রয়োগ হচ্ছে না, নয়তো তা বোঝা যাচ্ছে না।’’

মেসির পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন ক্লাবে তাঁর সতীর্থ এবং চিলির মিডিয়ো আর্তুরো ভিদাল। সংগঠকদের বিরুদ্ধে তোপ দেগে তিনি বলে দিয়েছেন, ‘‘ব্রাজিলের সঙ্গে সেমিফাইনাল ম্যাচে আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে এমন কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যা পক্ষপাতদুষ্ট ছিল। দু’দলের দুই অধিনায়ককে যে ভাবে লালকার্ড দেখে বার করে দিয়েছেন সেটা বাড়াবাড়ি। দু’জনের কেউই হাত চালাননি। কারও মুখে ঘুষিও মারেননি। বুক দিয়ে ধাক্কা দেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও যে ভাবে মেসিকে বার করে দেওয়া হয়েছে তা ভাবা যায় না।’’

রেফারি এবং কোপা সংগঠকদের বিরুদ্ধে মহাতারকা ফুটবলারের এই মন্তব্যে চটেছে দক্ষিণ আমেরিকা ফুটবল কনফেডারেশন (কনমেবল)। এক বিবৃতিতে কনমেবল বলেছে, ‘‘মেসির অভিযোগ মানছি না। ফুটবলের মূল ভিত্তি হল ম্যাচের ফল মেনে নেওয়া, বিশ্বাস এবং শ্রদ্ধা।’’ মেসির নাম না করে সংগঠক সংস্থার প্রতিনিধির মন্তব্য, ‘‘রেফারির ক্ষেত্রেও বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা থাকা উচিত। মনে রাখা দরকার, তিনিও মানুষ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE