Advertisement
২৪ মে ২০২৪
bengal cricket

Aritra Chatterjee: শূন্য রানে সাত উইকেট নিয়েও বিরক্ত, ক্ষুব্ধ, হতাশ, অখুশি অরিত্র

একটিও ম্যাচ না খেলে বার বার বাদ যাওয়াতে বিরক্ত অরিত্র। জিজ্ঞেসও করেছিলেন তাঁকে কেন বাদ দেওয়া হচ্ছে।

চণ্ডীগড়ের বিরুদ্ধে উইকেট না পেলেও দল জেতায় খুশি অরিত্র চট্টোপাধ্যায়।

চণ্ডীগড়ের বিরুদ্ধে উইকেট না পেলেও দল জেতায় খুশি অরিত্র চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র

শান্তনু ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২২ ০৯:৪২
Share: Save:

শুক্রবার হ্যাটট্রিক-সহ সাত উইকেট নিয়েছিলেন কোনও রান না দিয়ে। শনিবার প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে আরএসবি চণ্ডীগড়ের বিরুদ্ধে উইকেট না পেলেও দল জেতায় খুশি অরিত্র চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু বার বার বাংলা দলে থেকেও প্রথম একাদশে সুযোগ না পাওয়ার কষ্ট ভুলতে পারছেন না তিনি।

দিল্লিতে সর্বভারতীয় সিভিল সার্ভিস ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় শুক্রবার মাঠে একের পর এক উইকেট নিলেও তিনি যে কোনও রান না দিয়ে এতগুলি উইকেট নিয়ে ফেলেছেন, বুঝতে পারেননি। জীবনের প্রথম হ্যাটট্রিক করার পর আনন্দবাজার অনলাইনকে অরিত্র বললেন, “খেলাটা বেশি ক্ষণ চলেনি। আমরা মাঠে বুঝতেই পারিনি এমন কিছু ঘটেছে। বাইরে আসার পর সবাই অবাক হয়ে গিয়েছে। শূন্য রানে সাত উইকেট! সবাই খুব খুশি। খুব আনন্দ পেয়েছি।”

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তো নয়ই, ক্রিকেটের অন্য কোনও স্তরেও এমন নজির খুব বেশি নেই বলাই যায়। পাড়ায় ক্রিকেট খেলেই শুরু করেছিলেন অরিত্র। সেখানে তাঁর ক্রিকেট খেলা দেখে অরিত্রর কাকা তাঁকে ক্রিকেট কোচিং সেন্টারে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। প্রতাপগড়ে এক ক্রিকেট কোচিং সেন্টারে খেলা শুরু করেন তিনি। এখন সেই কোচিং সেন্টার না থাকলেও অরিত্রর হাতেখড়ি সেখানেই। দু’-তিন বছর পর শ্রীরামপুরের এক কোচিং সেন্টারে ভর্তি হন অরিত্র।

অরিত্র বললেন, “আমার খেলার উন্নতি হয়েছে প্রবাল ঘোষের প্রশিক্ষণে। ওঁর শিক্ষাই আমার খেলা পাল্টে দিয়েছে। উনিই আমাকে শিখিয়েছেন ক্লাব ক্রিকেট বা কলকাতা ময়দানে খেলতে গেলে কী ভাবে খেলতে হয়। বাংলার বয়সভিত্তিক দলে খেলেছি। অনূর্ধ্ব ১৭, ১৯-এর প্রাথমিক দলগুলোতে ছিলাম। অনূর্ধ্ব ২২ দলের হয়ে খেলেছি।”

এই বছর কালীঘাট ক্লাবের হয়ে খেলছেন অরিত্র। তিনি বললেন, “প্রায় সব ক্লাবের হয়েই খেলেছি। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে এক বছর খেলেছি, মোহনবাগানের হয়ে ২ বছর খেলেছি। ভবানীপুরের হয়ে ৫ বছর খেলেছি। স্পোর্টিং ইউনিয়ন, টাউন ক্লাবের হয়েও খেলেছি। এই বছর খেলছি কালীঘাটের হয়ে।”

বাংলার ক্লাব ক্রিকেটে পরিচিত মুখ হলেও রাজ্যের হয়ে এখনও সিনিয়র ক্রিকেটে খেলার সুযোগ হয়নি অরিত্রর। প্রাথমিক দলে একাধিক বার সুযোগ পেলেও প্রথম একাদশে সুযোগ পাননি কখনও। অরিত্র বললেন, “আমার দুর্ভাগ্য কখনও বাংলা দলের হয়ে খেলিনি। ১২ বছর ক্রিকেট খেলছি। তার মধ্যে ১০ বছর একাধিক বার বাংলার প্রাথমিক দলে সুযোগ এসেছে। কিন্তু প্রথম একাদশে সুযোগ পাইনি। ২০১১-১২ মরসুমে যে বছর বাংলা বিজয় হজারে জিতেছিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে, সেই দলে আমি ছিলাম। কিন্তু একটাও ম্যাচ খেলিনি। রঞ্জি ট্রফি দলেও ছিলাম। কিন্তু খেলার সুযোগ পাইনি। কোনও ম্যাচ না খেলে দল থেকেও বাদ পড়ি। ২০২০ মরসুমে সাদা বলের ক্রিকেটে বাংলা দলে আবার সুযোগ পাই। সাত বছর পর সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু ১০টা ম্যাচ দলের সঙ্গে থাকলেও প্রথম একাদশে সুযোগ পাইনি।”

তিন ধরনের ক্রিকেটে বাংলার হয়ে প্রাথমিক দলে একাধিক বার থাকলেও খেলার সুযোগ না পেয়ে বাদ যাওয়ায় অরিত্রর মধ্যে যে ক্ষোভ রয়েছে তা স্পষ্ট। তিনি বললেন, “আমি জানি না পৃথিবীর কোথাও কোনও রাজ্যের ক্রিকেটার এত বছর ধরে দলের সঙ্গে ঘুরে কোনও ম্যাচ না খেলে বাদ গিয়েছে। বার বার বঞ্চিত হতে হয়েছে বাংলা দল থেকে।”

যদিও এখনও আশা ছাড়েননি অরিত্র। তিনি বললেন, “চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি বাংলার হয়ে খেলার। সুযোগ পেলে নিজেকে উজাড় করে দেব। পরিশ্রম করছি যাতে নিজের রাজ্যের হয়ে খেলতে পারি। আইপিএল বা ভারতের হয়েও খেলতে চাই। কিন্তু তার আগে নিজের রাজ্যের হয়ে মাঠে নামতে চাই।”

একটিও ম্যাচ না খেলে বার বার বাদ যাওয়াতে বিরক্ত অরিত্র। জিজ্ঞেসও করেছিলেন তাঁকে কেন বাদ দেওয়া হচ্ছে। কী উন্নতি প্রয়োজন, সেটাও জানতে চেয়েছিলেন। অরিত্র বললেন, “আমাকে বলা হয়েছে দলের কম্বিনেশনের জন্য সুযোগ পাইনি। কিন্তু বার বার দলে এসে একটিও ম্যাচ না খেলতে পারা বেশ কষ্টের। কাউকে দলে নেওয়া হয়েছে মানে সে পারফর্ম করেছে বলেই সুযোগ পেয়েছে। তাঁকে এত দিন ধরে না খেলিয়ে বাদ দেওয়াটা বেশ কষ্টের।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bengal cricket CAB
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE